সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আত্মহত্যা নয়। মেয়ে খুন হয়েছে। পাঁচ বছর বাদে নতুন করে মেয়ের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত দাবি করলেন সুশান্ত সিং রাজপুতের ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের বাবা। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছিলেন, মেয়ে যে আত্মহত্যা করেননি, সেটার প্রমাণও আছে তাঁর কাছে। অভিযোগ, দিশার মৃত্যুর নেপথ্যে হাত রয়েছে আদিত্য ঠাকরের। এবার সেই মর্মেই উদ্ধবপুত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন দিশা সালিয়ানের বাবা। সেই অভিযোগনামায় আদিত্যর পাশাপাশি উল্লেখ রয়েছে, অভিনেতা দিনো মোরিয়া, সূরজ পাঞ্চোলি এবং তাঁর তাঁর নিরাপত্তরাক্ষী, মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন উচ্চপদস্থ অফিসার পরমবীর সিং এবং রিয়া চক্রবর্তীর নামও।
দিশা সালিয়ানের আইনজীবী নীলেশ ওঝা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার আমরা পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি এবং যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সেই অভিযোগনামা গ্রহণ করেছেন। এফআইআর তালিকায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন, আদিত্য ঠাকরে, দিনো মোরিয়া, সূরজ পাঞ্চোলি এবং তার দেহরক্ষী, পরমবীর সিং, শচীন ভাজে এবং রিয়া চক্রবর্তী। নীলেশের অভিযোগ, সেলেব ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার নেপথ্যে মূল ষড়যন্ত্রকারী পরমবীর সিং। তিনি তখন মুম্বই পুলিশের উচ্চপদস্থ অফিসার ছিলেন। আদিত্য ঠাকরেকে বাঁচানোর জন্য এক সাংবাদিক বৈঠক করে মিথ্যে কথা রটিয়ে ছিলেন। আদিত্য ঠাকরে যে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন, তার প্রমাণ রয়েছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর তদন্তের কাগজপত্রে। সেই তথ্যপ্রমাণাদিও বিশদে এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছে।
দিন দুয়েক আগেই দিশার বাবা সতীশ সালিয়ান মেয়ের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত দাবি করে নতুন করে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। সতীশ সালিয়ানের বক্তব্য, “এটা একটা ষড়যন্ত্র। এর নেপথ্যে বড় কারও হাত আছে।” দিশার বাবা বলছেন, “আমার মেয়ের কিছু ছবি আমাদের কাছে আছে। ওরা বলছে ১৪ তলা থেকে পড়ে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে, অথচ তাঁর শরীরে কোনও চোট আঘাত নেই। একটা হাড়ও ভাঙেনি। মুম্বই পুলিশ একটা ভুয়ো গল্প বানিয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টও ভুয়ো।” আইনজীবীর আরও চাঞ্চল্যকর দাবি, এমন প্রত্যক্ষদর্শীও রয়েছেন, যিনি দিনো মোরিয়া, পাঞ্চোলি, আদিত্য ঠাকরে এবং তাঁর দেহরক্ষীকে দিশাকে গণধর্ষণ করতে দেখেছে।
২০২০ সালের ১৪ জুন। মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট থেকে সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রায় এক সপ্তাহ আগে ৮ জুন দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। মালাডের বহুতলের নিচে দিশার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। দুজনের রহস্যমৃত্যুর পর সুশান্ত ও দিশাকে নিয়ে অনেক গুঞ্জন রটেছে। দিশার মৃত্যুর নেপথ্যের কারণ কী? সে নিয়ে সেসময় বিস্তর লেখালেখিও হয়। তবে তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে সুশান্ত এবং দিশার মৃত্যুর কোনও যোগসূত্র নেই। পরে শিব সেনা নেতা আদিত্য ঠাকরের নামও জড়ায় ওই ঘটনায়। প্রাথমিক তদন্তের উপর ভিত্তি করেই সিবিআই জানিয়ে দেয়, ১৪ তলা থেকে পড়েই মৃত্যু হয়েছে দিশার। এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা। পরে বিস্তারিত তদন্তের পর সিবিআই জানায়, সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রাক্তন ম্যানেজার সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন। কোনওভাবেই খুন হননি। তবে তাতে গুঞ্জন কমেনি। অভিযোগ ওঠে, দিশার মৃত্যুর তদন্তে মুম্বই পুলিশের গাফিলতি ছিল। আদিত্য ঠাকরেকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে। যদিও শিব সেনার উদ্ধব শিবিরের দাবি, এই মামলার সঙ্গে আদিত্যর কোনও যোগ নেই। অহেতুক তাঁকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা বিজেপির ষড়যন্ত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.