সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়েব সিরিজ ‘ডাকঘর’ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। কিছুদিন আগে অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী অভিযোগ করেছিলেন সিরিজে অভিনেতা হিসেবে স্নেহাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ক্রেডিট লিস্টে দেওয়া হয়নি। তার পরই আবার ডিওপি মৃণ্ময় নন্দী দাবি করেন, তিনি বকেয়া পারিশ্রমিক পাননি। বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুললেন সিরিজের প্রথম পরিচালক অভিষেক সাহা।
নানা অভিযোগ উঠেছিল অভিষেকের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের জবাব তিনি দীর্ঘ ফেসবুক বিবৃতিতে দিয়েছেন। প্রথমেই পরিচালক জানান, তিনি এতদিন কেন চুপ ছিলেন। কারণ ‘অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অপমানজনক’ এই ঘটনা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। তাছাড়া বেশ কিছুদিন বাইরে ছিলেন অভিষেক। তাই নেটওয়ার্ক সেভাবে কাজ করছিল না। অভিষেক জানান, ১৬০ মিনিটের গল্প বলতে গেলে ১৪ দিনের বেশি সময় প্রয়োজন হয়। বারবার সেই আরজি জানিয়েও লাভ হয়নি। দু’টি ক্যামেরা চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু একটি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও সময় নষ্ট হয়েছে।
“শুটটা বন্ধ ও করা হয়নি। হইচই কর্তৃপক্ষ ফোনে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ‘কর কর, হয়ে যাবে, হয়ে যাবে, আমরা আছি।’ এত কম সময়ে, এত দুর্যোগ ও প্রোডাকশন ইস্যু সামলে আমাদের ভিশন মত শুট করতে পারিনি ফাইনালি, জানিয়েছিলাম তাঁদের। তবে তখন ‘আমরা আছি’ বলা বন্ধু দের আর খুঁজে পাইনি। আমরা থেকে আমি হয়ে গেছিলাম ততদিনে”, লেখেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ পরে তাঁর অবর্তমানে ও অগোচরে অন্য পরিচালক দিয়ে বাড়তি শুটিং বা প্যাচ শুটিং করা হয়েছে দ্বিতীয় ক্যামেরা ব্যবহার করে।
অভিষেকের বিরুদ্ধে কাজ ফেলে লন্ডনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তার জবাবে পরিচালক জানান, ঘুরতে নয় পেশাগত দায়বদ্ধতার জন্যই সেখানেই গিয়েছিলেন। তবে এডিটিংয়ের সমস্ত কাজ গুছিয়ে-বুঝিয়ে গিয়েছিলেন। ট্র্যাকও রেখেছিলেন। পরে প্রযোজক ও ওয়েব প্ল্যাটফর্ম কর্তৃপক্ষ তাঁর ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখতেই চুপ করে যান বলে জানান অভিষেক। তাঁর আশা, মৃন্ময় নন্দীর প্রাপ্য টাকা তাঁকে দিয়ে দেওয়া হবে। সিরিজ অভিষেক দেখেননি। তবে ট্রেলার গানের দৃশ্য, স্টিল যা দেখেছেন, আর তার ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ তাঁরই শুট করা হবে জানান অভিষেক সাহা।
শেষে পরিচালক লেখেন, “এই প্রসঙ্গে হয়ত আবার কিছু যুক্তি, পালটা যুক্তি আসবে, আরও বেশি করে কাদা ছোড়াছুড়ি হবে। আমি আর থাকতে চাই না তার মধ্যে।আশা করি আমাকে মুক্তি দেবেন সেসব নোংরামি থেকে। শাসকেরা সবসময় দলে ভারী হন। অনেক মানুষের টিকি বেঁধে রাখার ক্ষমতা তাঁদের থাকে যে। আর টিকিধারীরা শাসকের হয়েই কথা বলেন যুগযুগ ধরে, অথবা চুপ থাকেন। খবরের কাগজ খুললে রোজ তাইই তো দেখি। তাই আমি বিস্মিত নই একেবারেই। ওরা আমার কাজ নিয়ে নিক, আমার নাম নিয়ে নিক, অসুবিধা নেই। আমার ভিশন কেউ নিতে পারবে না। আর আমার সম্মান কাউকে নিতে দেব না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.