সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জগন্নাথ মন্দিরের(Digha Jagannath Temple) দ্বারোদঘাটন উপলক্ষে দিন কয়েক ধরেই দিঘায় সাজ সাজ রব। বুধবার বহু প্রতীক্ষিত অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠার উৎসব শুরু হল। তার প্রাক্কালেই মঙ্গলবার পূর্বসূচী অনুযায়ী মহাযজ্ঞ সম্পন্ন হয়েছে, উড়েছে ধ্বজাও। নীল জলরাশি আর আকাশের সন্ধিস্থলে এ যেন একটুকরো স্বর্গ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন টলিপাড়ার একঝাঁক তারকা। জগন্নাথধামের উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন নচিকেতা চক্রবর্তী, অদিতি মুন্সি-সহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দেখা গেল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। দেব, জুন মালিয়া, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রূপঙ্কর বাগচি, শ্রীকান্ত মোহতা, অরিন্দম শীল, নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ রয়েছেন দিঘায়। জগন্নাথদেবের টানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন টেলিপর্দার তারকারাও। দেখা গেল দেবলীনা কুমার, ভিভান ঘোষকে। দেবের মন্তব্য, ‘‘সম্প্রীতির ঐতিহাসিক মিলনক্ষেত্র দিঘায় জগন্নাথধামকে সাক্ষী রেখে মুখ্যমন্ত্রী গোটা দেশকে বার্তা দিয়েছেন। আসলে দিঘায় এখন পর্যটনের সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার মিলন ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের সৈকতভূমিতে। বিভেদ উড়িয়ে বাংলা থেকে ফের সম্প্রীতির নিশান উড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলা চিরকাল দেশকে পথ দেখিয়েছে, এবারও মুখ্যমন্ত্রী সেই পরম্পরা বজায় রেখেছেন।’’ মন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের এই চা-চক্রে বাংলা-মুম্বইয়ের শিল্পীরা যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন কবি-সাহিত্যিক, বণিকসভা ও ময়দানের ক্রীড়াকর্তারাও।
মঙ্গলবার মহাযজ্ঞের শেষ পর্বে পুর্ণাহুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ক’দিন ধরে হয়েছে সম্পূর্ণ শাস্ত্রীয় রীতি মেনে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান। সেখানে যেমন পুরীর দৈতাপতি ছিলেন, তেমনই ইসকনের পূজারি-কর্তারা বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পুরোধার্য। সমস্তটাই তদারকি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনই তিনি দিঘায় উপস্থিত পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন, আনুষ্ঠানিক দ্বারোদঘাটনের পরই সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দির। পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট বলেন, “পর্যটনের দিক থেকে আগামীদিনে দিঘা আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত হবে। এই মন্দির হবে দেশের গর্ব।” মন্দিরের স্থাপত্য বা নির্মাণের আজিক-কৌশল দেখে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেই দেন, “এত সুন্দর স্থাপত্য ও কাজ এত সুন্দর-নিখুঁত হয়েছে যে বলার নয়। সব সম্প্রদায়ের মানুষ এসেছেন।” মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেন, “যতটা সম্ভব পেরেছি, করেছি।” বছর সাতেক আগে তিনি এই সমুদ্রসৈকতেই হাঁটতে হাঁটতে ভেবেছিলেন জগন্নাথ মন্দির স্থাপনের ভাবনা। তাঁর মনে হয়েছিল, পুরীর মতো অনবদ্য সৈকত-ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতি সবটাই দিঘায় রয়েছে। অক্ষয়তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে সেই স্বপ্নই পূরণ হল। মন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে রাজ্যের বহু পুণ্যার্থী হাজির সৈকত শহরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.