Advertisement
Advertisement
রকুলপ্রীত সিং

‘রণবীর সিংয়ের সঙ্গে কাজ পেলে চোখ বুজে সাইন করব’, বললেন রকুলপ্রীত

অঙ্কে অনার্স পড়া অভিনেত্রী জানালেন, কীভাবে এই জগতে এলেন তিনি।

De De Pyar De actress Rakul Preet Singh's exclusive interview
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 21, 2019 9:38 pm
  • Updated:June 21, 2019 9:38 pm  

দিল্লির এক আর্মি অফিসারের মেয়ে রকুলপ্রীত সিং সরাসরি হিন্দি ছবিতে আসেননি। এসেছেন দক্ষিণ ঘুরে। নয় নয় করে এখনও পর্যন্ত সতেরোটা তেলুগু ছবিতে অভিনয়ও করে ফেলেছেন। খোলামেলা স্বভাবের এই রকুল হিন্দিতে প্রথম পরিচিত হন ‘ইয়ারিয়াঁ’ ছবি থেকে। মুম্বইয়ে রকুলপ্রীত সিংয়ের মুখোমুখি তপন বকসি। 

আপনি দিল্লির মেয়ে। এতগুলো দক্ষিণী ছবি আর গোটা তিনেক হিন্দি ছবি করার পরেও দেখা যাচ্ছে আপনার বলা হিন্দিতে পাঞ্জাবি টান?
ওটা তো মাতৃভাষা। টানটা থেকে যায়।

Advertisement

এই যে অজয় দেবগণ, তাবুদের মতো তারকাদের সঙ্গে হিন্দি ছবি ‘দে দে প্যায়ার দে’ করলেন, তাতে কোনও অসুবিধা বা জড়তা কাজ করেছিল?
আসলে ‘দে দে প্যায়ার দে’ আমার চতুর্থ হিন্দি ছবি। ২০১৪-তে ‘ইয়ারিয়াঁ’-এ সিলেকটেড হওয়ার সময় থেকেই হিন্দি সিনেমার পরিবেশকে চিনেছি। তাই আমি একেবারে নতুন নই। এই পরিবেশও আমার কাছে প্রথম নয়। তাই জড়তাবোধ কাজ করেনি। আর তারকা হিসেবে অজয় দেবগণ আর তাবু খুবই পেশাদার আর সমান মিশুকে। তাই কাজ করতে অসুবিধা হয়নি। অজয় স্যার তো সিজনড অ্যাক্টর। শুটিংয়ে সবার সঙ্গেই হাসিমশকরায় ভরিয়ে রাখতেন শুটিং জোন। কখনওই মনে হতে দেননি তিনি নামী তারকা।

‘ইয়ারিয়াঁ’ ছবিটা ছিল একঝাঁক কলেজ স্টুডেন্টদের প্রেমের ছবি। আপনার কলেজ বা স্কুলজীবনে ক্রাশ ছিল?
হ্যাঁ, ছিল। বেশ কয়েকটা ক্রাশ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তাদের নাম বলতে পারব না। (হাসি)

[আরও পড়ুন: সেন্সর বোর্ডের কোপে ‘মেন্টাল হ্যায় কেয়া’, বিক্ষোভের মুখে পড়ে নাম বদলাচ্ছে ছবির]

আর অভিনয় জগতে এসে ক্রাশ তৈরি হয়নি?
ওহ! আপনি ‘সেলিব্রিটি ক্রাশ’-এর কথা বলছেন? হয়েছে। আমার প্রথম এবং সবচেয়ে স্ট্রং সেলিব্রিটি ক্রাশ হল রণবীর সিং। আমার কলেজ জীবনে আমি যখন ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ দেখেছিলাম, তখনই মনে হয়েছিল, ওয়াও! এই হিরোর মধ্যে কী অসামান্য এনার্জি আর কী দারুণ পারফরম্যান্স। তখন থেকেই রণবীর সিংকে নিয়ে আমার দুর্বলতা। রণবীর নিজেও জানে সেকথা। কেননা পরে আমি যখন ‘ইয়ারিয়াঁ’ করেছি, সেসময় বলিউডের একটা অ্যাওয়ার্ড ফাংশনে আমার সঙ্গে রণবীরের দেখা হয়েছিল। আমি ওকে বলেওছি সেকথা। (হাসি)

আর এখন? কয়েক বছর পর? এখন যদি কেউ আপনাকে রণবীর সিংয়ের বিপরীতে নায়িকা করতে চান, কী করবেন?
উফ! ছবির গল্প-টল্প না শুনেই বিনাবাক্যে সাইন করব। শুধু অপেক্ষায় আছি কবে আসবে সেদিন। (হাসি)।

আপনি একজন আর্মি অফিসারের মেয়ে। আপনার ফ্যামিলিতে বা আপনার বড় হওয়ার সময়ে নিশ্চয়ই আপনার আশপাশে ফিল্মের তেমন কোনও বাতাবরণ থাকার কথা নয়। সেই বাড়ির মেয়ে হয়ে কী করে এত দক্ষিণী ছবি বা হিন্দি ছবির নায়িকা হলেন?
স্কুল লাইফে একটু উঁচু ক্লাসে পড়ার সময় থেকেই অভিনয়ে আসার ইচ্ছা ছিল। বারো ক্লাসে উঠেই বাবাকে বললাম, বাবা আমি ফোটোশুট করব। বাবা বললেন, ১৮ বছর হতে দে। তারপর কর। ১৮ বছর বয়স হতেই আমি ফোটোশুট করলাম। সেখান থেকেই একটা ছবি কর্নাটকের কোনও প্রোডিউসারের কাছে গেল। তাঁরা আমাকে ফোন করলেন। বললেন, কন্নড় সিনেমায় নায়িকা হতে। আমি বললাম, কী? কন্নড় ছবি? আমি করব না। আমি হিন্দি জানি। হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে চাই। কন্নড়-টন্নড় না। তারপর ওঁরা বাবাকে ফোন করলেন। বোঝালেন, আমরা ওর জন্মের বছর আর মাস দেখেছি। ও অভিনয়ে এলে নাম করবে। বেশ ভাল নামডাক হবে। ওকে আপনি সিনেমার অ্যাক্টিংয়ে আসার অনুমতি দিন। বাবা ওঁদের জানিয়ে দিলেন আমি আমার মেয়েকে পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দিয়ে সিনেমার অভিনয়ে কীভাবে যেতে বলতে পারি? ওকে ওর পড়াশোনা শেষ করতে দিন। তারপর না হয় যাবে।

কী করলেন? অফারটা সেসময়ের মতো ফিরিয়ে দিলেন?
কন্নড় ছবিটা করলাম। আমি তখন একটানা শুটিংয়ে আটকে পড়ার কথা ভাবতেই পারতাম না। আমি সেসময় প্রোডিউসার, ডিরেক্টরদের বলতাম, আপনারা আমাকে ছ’দিন/সাতদিনের শুটিং দিন। তাতেই হবে। আমার টানা শুটিং চাই না। (হাসি) তাতে যে লিড রোল করা হবে না, সেকথা ভাবতামই না। আসলে আমার উদ্দেশ্য ছিল কলেজে আমার বন্ধুদের গ্রুপে আমাকে একটু বড়লোকি দেখাতে হবে। হাতে লাখ পাঁচেক টাকা থাকবে। প্রতিদিন হাতে হাজার দুয়েক টাকা পকেটমানি রাখব। একটা গাড়ি চালিয়ে কলেজে আসব। (হাসি) সেজন্য আমি ছয় কিংবা সাতদিনের শুটিং খুঁজতাম। বছরের ৩৬৫ দিন শুটিংয়ে আটকে থাকতে চাইতাম না। আমি তখন ম্যাথমেটিক্সে অনার্স পড়ছি। কন্নড় ছবিটা করে আবার আমি গ্র‌্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে শুরু করলাম।

তারপর কী হল?
তারপর আমি পড়াশোনায় মন দিলাম। কেননা দিল্লির যে কলেজে আমি পড়তাম, তারা কোর্স কমপ্লিট করার ব্যাপারে বেশ কড়া ছিল। আমিও অভিনয়ে আসার ইচ্ছেতে সময় দিলেও একজন স্ট্রাগলার হতে চাইনি। আমি এই ফিল্ডের অনিশ্চয়তাকে জানি। তাই ব্যাকআপ হিসেবে পড়াশোনাটা কমপ্লিট করতে চেয়েছিলাম। মডেলিংটা পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। গ্র‌্যাজুয়েশন কমপ্লিট করে মুম্বইয়ে অডিশনে এলাম। তিনটে অডিশনেই ‘ইয়ারিয়াঁ’ পেলাম। তার শুটিংয়ের কথা শুনে দক্ষিণের প্রযোজক, পরিচালকরা আবার আমাকে যোগাযোগ করা শুরু করলেন। ‘ইয়ারিয়াঁ’-র শুটিং শেষ হওয়ার দু’দিন আগেই আমি প্রথম তেলুগু ছবি সাইন করলাম। অথচ তেলুগু ছবির কাজ পরে শুরু হলেও ‘ইয়ারিয়াঁ’-র দু’মাস আগে রিলিজ হয়েছিল। ‘ইয়ারিয়াঁ’-র হাত ধরে আমি রমেশ সিপ্পির একটা হিন্দি ছবি ‘সিমলা মির্চি’ করলাম রাজকুমার রাওয়ের সঙ্গে। এরপর ২০১৮-তে ‘আইয়ারি’ নামে আরও একটা হিন্দি ছবিতে কাজ করলাম। নীরজ পাণ্ডের পরিচালনায়। এভাবেই হিন্দি আর তেলুগু, তামিল ছবির কাজ পাশাপাশি করে যাচ্ছি।

[আরও পড়ুন: সুজিত সরকারের ছবিতে এই ধূসর দাঁড়িওয়ালা বৃদ্ধকে চিনতে পারছেন?]

নীরজ পাণ্ডের ‘ধোনি’ বায়োপিকেও তো আপনার কাজের কথা হয়েছিল?
হ্যাঁ। ‘ধোনি’-র বায়োপিকে আমার দিশা পাটানির চরিত্রটা করার কথা ছিল। কিন্তু সেসময় তেলুগু ছবিতে রামচরণ, মহেশবাবুদের সঙ্গে আমার ডেট দেওয়া ছিল। সেটা থেকে বেরিয়ে আসার কোনও রাস্তা ছিল না। ফলে আমাকে ওই রোলটা ছেড়ে দিতে হয়।

দক্ষিণে এনটিআর-এর বায়োপিকে আপনি শ্রীদেবীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন?
হ্যাঁ। পাঁচ-ছ’দিনের শুটিং করেছি। অসাধারণ অভিজ্ঞতা। যদিও বেঁচে থাকতে শ্রীদেবী ম্যামের সঙ্গে আমার একবারই দেখা হয়েছিল। কিন্তু নিজে শ্রীদেবীর ভূমিকায় অভিনয় করব কোনওদিনও ভাবিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement