তপন বকসি: তোলাবাজির টাকায় তৈরি হয়েছে মুক্তি পেতে চলা ছবি ‘হাসিনা পারকার’। এমনটাই সন্দেহ মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার। শুধু সন্দেহ নয়, বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্তার বদ্ধমূল ধারণা, ডন দাউদ ইব্রাহিমের বোন হাসিনাকে ‘গ্লোরিফাই’ করতেই এই ছবি বানানোর ছক করা হয়েছিল। ছবি বানাতে প্রচুর টাকা ঢেলেছে অপরাধ জগৎ। টাকা ঢেলেছে স্বয়ং দাউদ ইব্রাহিম বা তার ভাই ইকবাল কাসকর। সদ্য গ্রেপ্তার হওয়া ইকবাল কাসকরকে প্রাথমিক জেরা করে এমনটাই ধারণা হয়েছে মুম্বই পুলিশের। থানের পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং সাফ জানিয়েছেন, দাউদের বোন কোনও মাঝারি মাপের সেলিব্রিটিও নন। নন কোনও পাবলিক ফিগার, যে তাকে নিয়ে স্বেচ্ছায় কোনও প্রযোজক ছবি বানাতে রাজি হবেন। তাই নিজের কালো টাকা সাদা করতেই এই ছবি বানানোর পরিকল্পনা ডি কোম্পানির সর্বময় কর্তার।
[টিজারে সাড়া জাগিয়ে পুজোর মুখেই বাঙালির হাতে এল ‘হইচই’]
অপরাধ জগতে পুলিশের নিজস্ব সোর্স কাজ লাগিয়ে পরমবীর সিং জেনেছেন, ২০১৩ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ইকবাল কাসকর ১০০ কোটি টাকা তোলা আদায় করেছে। সেই টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে দাউদকে পাঠানো হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে যা ইনপুট এসেছে তা আইবি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানানো হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, দাউদের নির্দেশেই তোলাবাজি চালাত তার ভাই ইকবাল কাসকর। পুলিশ জানিয়েছে, দু’ দিন আগে তাকে যখন গ্রেপ্তার করতে যায় পুলিশ তখন ইকবাল বাডি়তে বসে টিভি দেখছিল। সে গ্রেপ্তার হতে পারে এমন কোনও আগাম খবর ডি কোম্পানি মারফত তার কাছে ছিল না। গর্ডন বিল্ডিংয়ে হাসিনার ফ্ল্যাটেই ইকবালের সঙ্গে ছিল হাসিনার দেওর ইকবাল পারকার, মাদকের কারবারী খোয়াজা শেখ। খোয়াজা শেখ জনসমক্ষে নিজেকে কেবল অপারেটর হিসাবে পরিচয় দিলেও তার সঙ্গে অপরাধ জগতের সরাসরি যোগ আছে বলে সন্দেহ। ওই সময় ফ্ল্যাটে ছিল ইসরার আলি ও মুমতাজ শেখ। এরা নিজেদের ব্যবসায়ী বললেও তোলাবাজির চক্র চালায় এবং দাউদের ডি কোম্পানির ঘনিষ্ঠ।
[হানিপ্রীত কোথায়? জানেন রাখি সাওয়ান্ত!]
সূত্রের খবর, ‘হাসিনা পারকার’ ছবি তৈরির সময় থেকেই বিতর্ক উসকে দিয়ে ছবির জনপ্রিয়তা বাড়ানোর একটা সুন্দর ছক কষেন নির্মাতারা। উদ্দেশ্য ছবির ট্রেলার ইউ টিউবে বেশি হিট করানো। টেলিমিডিয়া ও ডিজিটাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার চালানো। যাতে মনে হয় এটি উঁচুমানের একটা ছবি যা বক্স অফিস হিট হতে চলেছে। আসলে ছবি যখন দাউদের বোনকে নিয়ে, তখন তা প্রথম থেকেই পুলিশের রাডারে ছিল। পুলিশের প্রথম সন্দেহ হয়, যখন ছবির ট্রেলার লঞ্চ করার দিন ছবির প্রযোজক নাহিদ খান নিজে উপস্থিত না হয়ে নিজের স্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন। নাহিদ ‘অজানা কারণে’এখন প্রকাশ্যেই আসতে চাইছেন না। আসলে দাউদ ও তার ভাই ইকবালের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় প্রবল অস্বস্তিতে রয়েছেন নাহিদ। ঘনিষ্ঠ মহলে বলে বেড়াচ্ছেন, ছবির সঙ্গে অপরাধ জগতের কোনও যোগ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.