অভিরূপ দাস: মাত্র ১৫ মিনিট! অনুরাগীরদের শেষশ্রদ্ধা জানানোর আগেই এনটিওয়ান থেকে পরিচালক তরুণ মজুমদারের (Tarun Majumdar) শবদেহ নিয়ে যাওয়া হল এসএসকেএম হাসপাতালে। এমনকী, শবদেহ গাড়ি থেকে নামানোই হল না। এই নিয়ে টানাপোড়েন চলে সিপিএম নেতা দেবদূত ঘোষ ও পরিচালকের এক আত্মীয়র মধ্যে। দেবদূত ঘোষ চাননি শবদেহ গাড়ি থেকে নামানো হোক, অন্যদিকে তরুণ মজুমদারের আত্মীয়র কথায়, পরিচালক নাকি নিজেই চেয়েছিলেন ১৫ মিনিটের জন্য এনটিওয়ান স্টুডিওতে রাখা হবে। শুধু তাই নয়, খুঁজে পাওয়া যায়নি স্টুডিওতে তরুণ মজুমদারের ঘরের চাবি। যে ঘরে বসে চিত্রনাট্য লিখতেন পরিচালক।
গোটা ঘটনায় হতাশ হয়েছেন পরিচালককে শেষশ্রদ্ধা জানাতে আসা অনুরাগীরা। এমনকী, শেষবারে মতো পরিচালককে চোখের দেখা দেখতে পারেননি অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী।
মৃত্যর পরেও কোনওরকম আড়ম্বর তিনি চাননি। তাঁর শেষ ইচ্ছাকেই সম্মান দেয় তাঁর পরিবার। মরদেহে জড়নাে হল লাল পতাকা, বুকের উপর রাখা গীতাঞ্জলি। পরিচালকের মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারকে সম্মান জানিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে দেহ দান করা হয়েছে।
মৃত্যুর পর তাঁর দেহ নন্দন বা রবীন্দ্রসদনে নিয়ে যাওয়া হোক তা চাননি তরুণ মজুমদার। তাঁর এই ইচ্ছাকে সম্মান দিয়েছে রাজ্য সরকার। শেষযাত্রায় তাঁর মৃতদেহে অনুরাগীরা ফুল, মালা দিক, তা চাইতেন না পরিচালক।
‘পলাতক’ ছবি তৈরির পর ‘যাত্রিক’ থেকে বেরিয়ে আসেন তরুণ মজুমদার। ১৯৬৫ সালে ‘আলোর পিপাসা’ এবং ‘একটুকু ভালবাসা’ নামের দু’টি সিনেমা তৈরি করেন তিনি। তারপর থেকে নিজের পরিচালনায় তৈরি করেছেন ‘বালিকা বধূ’, ‘রাহগির’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘কুহেলি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘গণদেবতা’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আপন আমার আপন’, ‘আলো’, ‘চাঁদের বাড়ি’র মতো সিনেমা। সাহিত্যপ্রেমী ছিলেন তরুণ মজুমদার। বনফুল, বিমল কর, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সাহিত্যিকের গল্প নিয়ে ছবি করতেন তিনি। শোনা গিয়েছে রবিঠাকুরের সুর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.