সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুর্গা পুজো মানে এখন থিমের ছড়াছড়ি। তবে মুমতাজ সরকারের মনে এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছোটবেলার সাবেকিয়ানার স্মৃতি। যে সময় তিনি মহালয়া থেকেই আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতেন। যদি একটিবার মা দুর্গাকে দেখতে পান।
অভিনেত্রীর কথায়, “ছোটবেলার পুজোর একটা আলাদাই মজা ছিল। তখনকার পুজোর পুরো ব্যাপারটাই অন্যরকম ছিল। একটা পুজো-পুজো ভাব থাকত। আমার মনে হয়, এখন ব্যাপারটা একটু বেশি কমার্শিয়াল হয়ে গিয়েছে। সেটাও ভালো। কিন্তু পুজোর যে সাবেকি মাধুর্য, মূল যে ব্যাপারটা, মনে হয় যেন সেটা কোথাও হারিয়ে গিয়েছে।” অভিনেত্রী মনে করেন, এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুজোটা প্রতিযোগিতার বিষয় হয়েছে। কোন পাড়ায় কত টাকা দিয়ে প্যান্ডেল হয়েছে, সেটাই যেন মুখ্য হয়ে গিয়েছে। থিমের রমরমায় সাবেকি দুর্গা প্রতিমা আর প্রায় দেখাই যায় না প্যান্ডেলে।
বিচারক হিসেবে পুজো পরিক্রমায় প্রতিবার যেতে হয় মুমতাজকে। একটি বিষয় দেখে তাঁর বড় মনখারাপ হয়। বিশাল প্রতিমার পাশে ছোট্ট একটি প্রতিমা রেখে পুজো করা হয়। যাঁকে ঘিরে পুজোর আয়োজন, তিনি একপাশে কেন? এমন প্রশ্ন জাগে অভিনেত্রীর মনে। পাড়ার পুজোয় ছন্নছাড়া হয়ে খেলা, বেলুন কেনা, ক্যাপ ফাটানো, হুড়োহুড়ি, রাস্তার খাবার, ফুচকা খাওয়া মিস করেন মুমতাজ। হ্যাঁ, এখনও হইহুল্লোড় হয়। কিন্তু ছোটবেলার সেই নির্ভেজাল আনন্দটা নেই।
মহালয়ার দিন থেকেই মা দুর্গার আগমনের অপেক্ষায় থাকতেন। সেকথা জানাতে গিয়েই ছোটবেলার মজার এক স্মৃতি শেয়ার করেন মুমতাজ। বলেন, “মহালয়ার দিন থেকে জানতাম যে মা দু্র্গা আসছেন। আমি তো আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতাম। যদি মা দুর্গাকে দেখতে পাই। যেমন আমরা প্লেন উড়ে যেতে দেখি, ঠিক সেরকমভাবে যদি মা দুর্গাকে দেখতে পাই। আমি খুবই ছোট ছিলাম তখন। সেই সময় নাকি একবার আমি বাড়ির সবাইকে বলেছিলাম যে আমি মা দুর্গার কেড়ে আঙুলটা দেখতে পেয়েছি (হাসি)। সত্যিই ছোটবেলায় কোনও চিন্তা ছিল না। শুধু আনন্দ। নতুন জামার আনন্দ। তিন বোনের দুবেলা নতুন জামা। মা-বাবার সঙ্গে পুজো পরিক্রমায় ঘোরা। এখন আমরা নিজেরা বিচারক হয়ে যাই। এটা একটা জার্নি বলা যেতে পারে।”
প্রতিবার পুজো আসার অপেক্ষা থাকে। সেই অপেক্ষায় সেলিব্রেশনের আনন্দ মিশে থাকে। কিন্তু মুমতাজের মনে হচ্ছে, এবার হয়তো কেউই সেই মানসিক অবস্থায় নেই। তিনি আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তো নিশ্চিতভাবেই নেই। তবে সেলিব্রেশনের ইচ্ছে না থাকলেও পুজোর (Celebrity Der Durga Puja 2024) সঙ্গে রয়েছেন মুমতাজ। কারণ এই সময়টা শক্তি স্বরূপা মা দুর্গার। অভিনেত্রী বলেন, “প্রত্যেক বছর মায়ের কাছে শান্তি চাই। তবে এবারের চাওয়া জমে থাকা দুঃখ, কষ্ট, আতঙ্ক সবকিছু মিলিয়ে। এবার প্রার্থনা, মা আমাদের শক্তি দাও, পথ দেখাও, শান্তি দাও। যাতে আশেপাশের অসুরদের যেন বধ করতে পারি। ভবিষ্যতের স্বপ্ন যেন এখন ধূসর। তা পালটাক। আগামীর অপেক্ষা যেন খুশি মনে করতে পারি। নিজের ভিতরের অশুভেরও যেন নাশ করতে পারি আমরা সবাই। আমিও যেন মায়ের মতোই নারীশক্তির প্রতীক হয়ে উঠতে পারি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.