সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার অযোধ্যা মামলার ঐতিহাসিক রায়ের জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজস্ব প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছেন বলিউড থেকে খেলার দুনিয়ার তারকারা। সকলেই এই রায়কে সম্মান জানিয়ে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। তবে তসলিমা নাসরিন খানিকটা ব্যতিক্রমী। যে কোনও বিষয়েই নিজের বক্তব্য খোলামেলাভাবে তুলে ধরেন তিনি। এবারও একটু অন্যরকমভাবে সু্প্রিম রায়ের প্রতিক্রিয়া দিলেন তসলিমা।
বাংলাদেশি লেখিকার মতে, শীর্ষ আদালত রামলালা এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের জন্য যে জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে মন্দির ও মসজিদ বানানোর প্রয়োজন নেই। বরং তা সামাজিক কাজে দেশের উন্নতির স্বার্থে ব্যবহৃত হোক। সোশ্যাল মিডিয়ায় তসলিমা লেখেন, “আমি বিচারপতি হইলে অযোধ্যার রায়টা অন্যভাবে দিতাম। ২.৭৭ একর জমি যেইখানে রাম মন্দির বানানির অনুমতি দেওয়া হইছে সেইটা সরকারকে দিতাম আধুনিক একটা বিজ্ঞান স্কুল বানানির জন্য। আর যে ৫ একর জমি দেওয়া হবে মসজিদ বানানির জন্য, সেই ৫ একর জমিও আমি সরকারকে দিতাম একটা আধুনিক হাসপাতাল আর চিকিৎসা গবেষণাকেন্দ্র বানানির জন্য। আধুনিক বিজ্ঞান স্কুলে পুলাপানেরা ফ্রি পড়বে। আধুনিক হাসপাতালেও সবাই ফ্রি চিকিৎসা পাবে।” অর্থাৎ তসলিমা চান, মানুষের হিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালই তৈরি হোক অযোধ্যায়। অনেকেই তসলিমার এই ভাবনাকে সম্মান জানিয়েছেন।
এদিকে তসলিমার সুরই শোনা গেল সলমন খানের বাবা তথা বিখ্যাত চিত্রনাট্যকর সেলিম খানের গলাতেও। তাঁর মতে, সুপ্রিম কোর্ট মুসলিমদের জন্য যে পাঁচ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, তাতে মসজিদ না বানিয়ে একটি স্কুল বা হাসপাতাল তৈরি করা হোক। তিনি লেখেন, “গল্প এখন শেষ হয়েছে (অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে)। তাই মুসলিমদের এখন ভালবাসা প্রদর্শন ও ক্ষমার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত। আর পিছনে ফিরে দেখো না। দীর্ঘদিনের একটা বিতর্ক যে শেষ হয়েছে এটাই বড় ব্যাপার। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মন থেকে স্বাগত জানাই। মুসলিমদের এখন নিজেদের সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করা দরকার। তাই মনে হয়, ওই জমিতে স্কুল বা হাসপাতাল তৈরির বেশি প্রয়োজন। আমাদের মসজিদের দরকার নেই। যে কোনও স্থানেই আমরা নমাজ পড়ে নেব। কিন্তু আমাদের ভাল স্কুল দরকার। ২২ কোটি মুসলিম ভাল শিক্ষা পাবে। তাহলে দেশের অনেক ঘাটতি মিটবে।”
তবে পাঁচ একর জমি গ্রহণ করা হবে কি না, এনিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। উত্তরপ্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৬ নভেম্বর এই নিয়ে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একদিকে যখন রাম মন্দির তৈরির প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে, অন্যদিকে সেখানে মসজিদ তৈরির আকাশ থেকে অনিশ্চয়তার মেঘ কাটেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.