শম্পালী মৌলিক: পরিচালক ব্রাত্য বসুর শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ছিল ‘ডিকশনারি’। সাহিত্যের আধারে নির্মিত সেই ছবি ছিল মূলত সম্পর্কের গল্প নিয়ে। সেখান থেকে একেবারে সরে এসে পলিটিক্যাল থ্রিলার ছবি করছেন তিনি। অতি সম্প্রতি শেষ করেছেন সেই ছবি অর্থাৎ ‘হুব্বা’-র শুটিং। যেখানে মলাটচরিত্রে রয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট অভিনেতা মোশাররফ করিম। পুলিশের চরিত্রে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। যিনি আইপিএস অফিসার ‘দিবাকর মিত্র’-র ভূমিকায়। তাঁর স্ত্রী ‘বিনীতা’র রোলে পৌলোমী বসু। অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন লোকনাথ দে।
নয়ের দশকের শেষভাগে হুগলি জেলায় গ্যাংস্টার হুব্বার উত্থান। অন্ধকার জগতের একচ্ছত্র অধিপতি বলেই পরিচিত ছিল সে। তার শিহরন জাগানো জীবনপথ উঠে আসবে এই ছবিতে। খুন, অপহরণ, ড্রাগ পাচার ইত্যাদি নানা মামলা চলেছিল তার বিরুদ্ধে। কয়েকবার গ্রেফতার হয়েও একসময় জামিন পেয়ে যায় ঘটনাচক্রে। ২০০৫ সালে সল্টলেক থেকে গ্রেফতার হয় সে পুলিশের হাতে। সেই রোমহর্ষক ঘটনার সংবাদ আজও অনেক মানুষের মনে আছে। একসময় বহুদিন নিখোঁজ ছিল এই গ্যাংস্টার, শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালে বৈদ্যবাটির খালে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। এই প্রতিপত্তিশালী ডনের জীবনকাহিনি ঘিরে ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন ব্রাত্য বসু ও সুপ্রতিম সরকার মিলে, ‘আবার গোয়েন্দাপীঠ’ অবলম্বনে। সুতরাং কতখানি বাস্তবছোঁয়া আর শিহরন জাগানো হবে এই ছবি আন্দাজ করাই যায়। ব্রাত্য বসু বলছেন, ‘মূলত তিরিশ বছরের জার্নি দেখানো হয়েছে। বাঙালি গ্যাংস্টারের নির্মমতা এবং কৌতুক দুটোই আছে। নগরজীবনের সমান্তরালে শহরতলির অন্ধকার দিক ছুটে চলেছে, সেটা থাকবে ছবিতে।’ ছবির ক্যামেরার দায়িত্বে সৌমিক হালদার। কলকাতার আশপাশ, দমদম, রাজারহাট এবং হুগলি, সব মিলিয়ে প্রায় আঠাশ দিন শুটিং হয়েছে।
এমন কুখ্যাত ডনের চরিত্রে মোশাররফ করিমকে নেওয়ার কারণ কী? নির্দেশক অকপটে বললেন, “ডিকশনারি’-তে মোশাররফের সঙ্গে কাজ করে আমি মুগ্ধ। উনি আমার খুব প্রিয় অভিনেতা। যতদিন কাজ করব, মোশাররফকে আমার সমস্ত কাজেই চাইব। ওঁর চরিত্রের নাম এখানে ‘হুব্বা বিমল’।” আর ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তকে বেছে নেওয়া কীভাবে? ব্রাত্য জানালেন, ‘এমন একজনকে দরকার ছিল, যে ভাল অ্যাক্টর কাম পুলিশের চরিত্রে মানাবে। এবং হিরো হিসাবে যাঁর মর্যাদা আছে। একইসঙ্গে বলব, ইন্দ্রনীলের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল অনেকদিন ধরে। ওর অভিনয় আমি পছন্দ করি।’ শিক্ষামন্ত্রী তথা নির্দেশকের পক্ষে ভিড় রাস্তায় নেমে শুটিং করা কতটা শক্ত ছিল? ব্রাত্য হেসে বললেন, ‘রাস্তায় শুটিং করতে একটু অসুবিধা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কাজটা করতে গেলে এই ঝামেলা নিতেই হবে।’ আপাতত ‘হুব্বা’-র পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক চললে সামনের বছর ছবির মুক্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.