Advertisement
Advertisement
IFFI Goa

ইন্ডিয়ান প্যানোরমায় ২ বাংলা ছবির পাশে অসমের ‘ব্রিজ’ও, পূর্বাঞ্চলের সিনেমার সুদিন ফিরছে?

এক ডজন বাংলা ছবি প্যানোরমায় পাঠানো হয়েছিল।

Brahma Janen Gopon Kommoti, Abhijatrik and Bridge selected in Indian panorama of upcoming IFFI Goa from Eastern zone | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:December 21, 2020 6:50 pm
  • Updated:December 21, 2020 7:39 pm  

নির্মল ধর: গোয়ার ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (IFFI Goa) প্যানোরমা বিভাগে এবার মাত্র দু’টি বাংলা ছবির ঠাঁই হয়েছে। অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ (Brahma Janen Gopon Kommoti) আর শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘অভিযাত্রিক’ (Abhijatrik)। ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ কেমন সিনেমা, তা অনেকেই দেখে ফেলেছেন। আন্তর্জাতিক দর্শকমহলে ছবিটি কতটা সমাদৃত হবে সে বিষয়ে সংশয় থাকছেই। অন্যদিকে, শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘অভিযাত্রিক’ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে তৈরি, আবার তাতে সত্যজিৎ রায়ের নস্ট্যালজিয়ার ছোঁয়া রয়েছে। ফলে তা নিয়ে দর্শকের আলাদা আকর্ষণ থাকবে।

অপুর সন্তান কাজল বড় হয়ে জীবনে বাবার আদর্শ কি বজায় রাখতে পারল? তা নিয়ে শুভ্রাজিৎ একটি অন্যরকম সিনেমা বানাবেন এটা আশা করা যায়। কী করেছেন বা কী না করেছেন, সেই বিচার হবে ছবি দেখার পর। ‘অভিযাত্রিক’ তো কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (KIFF) দেখানো হবে আগামী জানুয়ারিতেই। বিস্ময়ের ঘটনা, আমরা যতই গলা উঁচিয়ে বলছি বাংলা ছবির দারুণ সময় এখন (অতিমারীর সময়টুকু বাদ দিলে), সত্যিই কি তাই! তাহলে যে এক ডজন বাংলা ছবি প্যানোরমায় পাঠানো হয়েছিল, সেগুলো কতটা ‘দারুণ’ ছিল সেটাই প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে না কি?

Advertisement

সেই তুলনায় বলব প্রতিবেশী রাজ্যের তরুণ পরিচালক কৃপাল কলিতা (Kripal Kalita) প্রথম ছবি বানিয়েই বাজিমাত করলেন। তাঁর সিনেমা ‘ব্রিজ’ (Bridge) জায়গা করে নিয়েছে প্যানোরমায়। স্বল্প বাজেটে তৈরি এই ছবি তুলে ধরেছে প্রত্যন্ত  অহমিয়া গ্রামের অতি সাধারণ এক তরুণীর জীবন সংগ্রামের গাথা। পরিচালক কৃপাল অবশ্য বললেন, “আমার নিজের দেখা মানুষ ও ঘটনা নিয়েই ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য লিখেছি নিজেই। বলতে পারেন সত্যি কাহিনি নিয়েই এই ছবি।” কৃপাল আদতে অহমিয়া নাটকের পরিচিত মুখ, নিয়মিত ট্রাভেলিং থিয়েটার (Travelling Theatre) করে বেড়ান। মাঝে মধ্যে টিভির নাটকেও কাজ করেন। পরিচালক শের চৌধুরীর সঙ্গে ১০ বছর কাজ করেছেন সহকারী হিসেবে।

[আরও পড়ুন: তাজমহলের সামনে শাহজাহানের বেশে অক্ষয় কুমার! ভিডিওতে দেখুন অভিনেতার কীর্তি]

নবাগত পরিচালক ‘ব্রিজ’ বানিয়েছেন সিনেমার প্রতি নিখাদ ভালবাসার তাগিদে। তাঁর কথায়, “সিনেমা বানানো আমার কাছে ব্যবসা নয়, নিজের ভালবাসা থেকে। সামাজিক দায়দায়িত্ব ধরনের বড় বড় কথা বলব না, নিজের মনের মত ছবি বানাতেই চাই। সেজন্যই এই ‘ব্রিজ’ তৈরি। জোনাকি নামের সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ এক তরুণীর ছোট ভাইকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করে তোলার সংগ্রামী গল্প নিয়ে তৈরি এই ছবি। ‘ব্রিজ’ নামটি প্রতীকী বলেই জানালেন কৃপাল। নর্থ লাখিমপুরের মাজুলি গ্রামে ছবির শুটিং হয়েছে। গ্রামের মাঝখান দিয়ে নিয়ে চলা নদীর ওপর বাঁশের সেতু ছিল সেটা বন্যায় ভেসে গিয়েছে। এখন সকলের ভরসা কালার গাছের তৈরি একটা ভেলা। প্রয়াত বাবার ক্ষেত চাষের কাজ জোনাকিকেই করতে হয়। বাড়িতে অসুস্থ মা আর ছোট্ট স্কুল পড়ুয়া ভাই। জীবনের প্রয়োজনেই জোনাকিকে সংসারের হাল ধরতে হয়। মাঠে নেমে আক্ষরিক অর্থেই হাল চালাতেও হয়। কৃপাল দেখিয়েছেন, চূড়ান্ত দারিদ্রের মধ্যে দাঁড়িয়েও জোনাকি এতটুকু আপস করে না। আবার বন্যায় মাকে হারালেও এসে অসুস্থ মাকে নিয়ে গেলেও ছোট্ট ভাইএর জন্য নতুন করে জীবনের শুরু করতে চায় নিজের সুখ বা নিজের ভবিষ্যত না ভেবেই। ছবিতে খামতি নেই বলব না। তবে যেটা নজর কাড়ে, পরিচালকের কাজের প্রতি নিষ্ঠা, আন্তরিকতা এবং গ্রামীণ বাস্তবকে পর্দায় তুলে ধরার জেদ। এখনও দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে রাজনৈতিক নির্বাচন হলেও বেঁচে থাকার ন্যূনতম সুবিধে মেলে না। দারিদ্রের এক জ্বলন্ত দলিল ‘ব্রিজ’। ছবিটি আমাদের দেশের কঠিন বাস্তবের চিত্র তুলে আনে। আর সেজন্যই কৃপাল কলিতার প্রশংসা প্রাপ্য। প্রথম ছবিতেই তিনি যে সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেন, তা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা দেখায়।

[আরও পড়ুন: জন্মদিনের আগেই অনুরাগীদের উপহার! আসন্ন ‘অন্তিম’ সিনেমার ফার্স্ট লুক প্রকাশ সলমনের]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement