সন্দীপ্তা ভঞ্জ: কথাতেই আছে, ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহু দূর।’ তেনাদের নিয়ে নানা মুনির নানা মত। অস্তিত্ব সংকটে কি খালি মানুষই ভোগে, ভূত নয়? বড় চিন্তা উন্মেষ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ‘ভূতমুখী’ তো আসছে বিএমএস (বাঁকুড়া মিমস শর্ট) চ্যানেলে, কিন্তু ভূত-প্রেতে কতটা ভয় তাঁর? ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে গিয়ে শুট তো করে এসেছেন কিন্তু ভৌতিক কোনও অভিজ্ঞতা কি হল?
ভূতে ভয়?
আমার ভূতে ভয় রয়েছে। ভূতের নাম শুনলেই ভয় পাই। ভূতের সিনেমা একা একেবারে দেখিই না। আর রাতে কোনও হরর সিনেমা যদি সাজেশনে আসে, তাহলেও সেদিকে চোখ দিই না একেবারে! এবং ছোট থেকেই আমি ভূতের গল্পের বইয়ের থেকে গোয়েন্দা গল্প বেশি পড়তাম। এমনকী এখনও আমি হরর অডিও স্টোরিও শুনি না। বাড়ি থেকে দূরে কলকাতায় একা থাকি তো রাতেও খুব ভয় পাই। অন্ধকারকে ভয় পাই। লোডশেডিং হলে তো কোনও কথাই নেই! ছোটবেলায় ভৌতিক সব ধারাবাহিক দেখে আত্মারাম খাঁচা হওয়ার জোগাড় হত। এই বুঝি ঘুমের মধ্যে কেউ পা টেনে ধরল! সেই কাটা মুন্ডু, অশরীরি, বা ‘কনজিওরিং’য়ের মতো কেউ যদি পিছন থেকে হাততালি দিয়ে দেয়… এগুলো আমাকে এখনও ভীষণ ভাবায় শুধু না, বরং আমি ভেবে ভেবে ভয়ও পাই। এই যদি হঠাৎ করে দেখি আলমারি খুলে বা দরজা খুলে ঘরের ভিতরে ‘নান’ রয়েছে… ওরে বাবা! এই অনুভূতিগুলো গায়ে কাঁটা দেয়। আমি চাই খুব ভূতের গল্প লিখতে। কিন্তু প্লট ভেবেই আমার ভয় লাগে। তাই আর লেখাও হয়ে ওঠে না।
ভৌতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে?
ছোটবেলায় ‘বাস্তুশাস্ত্র’ দেখে খুব ভয় পেয়েছিলাম। ওই ছবিতে খাটের তলায় একটা বল থাকত। আমরা একবার শুটের জন্য একটা বল নিয়ে এসেছিলাম। একদিন সন্ধে নাগাদ খাটের তলায় কী একটা খুঁজতে গিয়ে সেই বলটা দেখেই মনে হল, এটাও যদি সেই ‘বাস্তুশাস্ত্র’ সিনেমার মতো হয়? একটা অদ্ভূত দেখতে বাচ্চা এসে এই বলটা নিয়ে খেলে! অলৌকিক ঘটনা আমার সঙ্গে হয়নি। কারণ আমি এতটাই আগাম সতর্কতা মেনে চলি যে আমার সঙ্গে এসব ভৌতিক ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। এরকম কোনও জায়গাতে পা দিয়েও দেখি না। অনেকেই হয়তো বন্ধুবান্ধবদের কথা শুনে পোড়োবাড়িতে ভৌতিক ব্যাপার-স্যাপার ফিল করার জন্য যায় বা একরাত কাটিয়ে আসে, আমি সেসব জায়গায় যাওয়া তো দূরের কথা। ওরকম কারও সঙ্গে বন্ধুত্বই গড়ে তুলি না বা এসব অদ্ভূত ইচ্ছের কথা জানতে পারলেও বন্ধুত্ব রাখব না। সাত হাত দূরে থাকি! আমি ভূতে বিশ্বাসও করি এবং ভয়ও পাই। এই যে আমি তেনাদের অস্তিত্ব টের পাইনি আজ পর্যন্ত, পেতেও চাই না। হঠাৎ করে একথা সংবাদ প্রতিদিনকে বলার পরই হয়তো রাতে ভূত আমাকে দেখা দিল! সেটা কিন্তু বেশ খারাপ বিষয় হবে।
ভূত বিষয়টা কী আপনার কাছে?
কমেডির আকারে ভূত দেখিয়েছি বটে, তবে ভাবতে অবাক লাগে যে ভূতের অস্তিত্ব থাকলে সত্যিই কী হত? কারণ বিশ্বে এমনিই যা জনসংখ্যা, এত মানুষ রোজ পরপারে সফরে যাচ্ছেন, তাঁরা সকলেই যদি ভূত হতেন, তাহলে তো প্রেতলোকেও পপুলেশন বেশি হয়ে যেত। ওখানেও তেনাদের সকলের মধ্যে ঝগড়া বেঁধে যেত! ওইসব ভেবেই নিজেকে শান্তনা দিই যে, এত প্রেতাত্মা কোথায় থাকবে?
কালীপুজোর প্ল্যান?
কালীপুজোয় বাড়ি যাব বাঁকুড়ায়। সেখানে শ্মশানে সারা রাত কালীপুজো হয়। ছোটবেলায় সেই পুজো দেখতে যেতেও ভয় পেতাম। বড় হওয়ার পর অবশ্য বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে রাতে যাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.