সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সালটা ১৯৯৮। সেই সময়ে রাজস্থানের কঙ্কানি গ্রামে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে বিতর্কে জড়ান সলমন খান। বলিউড সুপারস্টারের বিরুদ্ধে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার অভিযোগ ওঠে। দু দশক আগের সেই ঘটনার পর থেকেই বিষ্ণোই গ্যাংয়ের নিশানায় সলমন (Salman Khan)। একাধিকবার বলিউডের ভাইজানকে খুনের হুমকি দিয়ে খবরের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। চলতি বছর থেকে সেই উপদ্রব আরও বেড়েছে বই কমেনি!
মাসখানেক আগে গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে গুলি চালানো। বিদেশে সলমনের বন্ধ-গায়কের বাড়িতে হামলা, তার পর গত সপ্তাহে সলমন ঘনিষ্ঠ বাবা সিদ্দিকির খুন! একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে ভাইজানকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বিষ্ণোই গ্যাং। যার জেরে ওয়াই ক্যাটাগরির পাশাপাশি সলমন খানের নিরাপত্তা বর্তমানে আরও জোরদার হয়েছে। দুবাই থেকে ২ কোটি টাকা খরচ করে বুলেট প্রুফ গাড়িও আনিয়েছেন ভাইজান। কিন্তু সারাজীবন কি এভাবে প্রাণভয় বয়ে বেড়াতে হবে তাঁকে? কী করলে বিষ্ণোইদের থেকে মুক্তি পাবেন সলমন খান? নিদান দিল রাজস্থানের সেই বিষ্ণোই সম্প্রদায়ই। যাঁরা কৃষ্ণসার হরিণকে দেবতাজ্ঞানে পুজো করেন।
বিষ্ণোইরা মনে করেন, কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করে গর্হিত অপরাধ করেছেন সলমন। যা কিনা বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের আচারবিধির বিরুদ্ধাচরণ। ‘অল ইন্ডিয়া বিষ্ণোই সমাজ’-এর সম্পাদক হনুমানরাম বিষ্ণোইয়ের নিদান, বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের (Bishnoi community) থেকে ক্ষমা পেতে হলে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই রাজস্থানের বিকানিরে অবস্থিত মুক্তিধাম মুকামে যেতে হবে। উল্লেখ্য, এই মন্দির বিষ্ণোইদের সবথেযকে পবিত্র ধর্মীয় স্থান। তাঁদের সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, যদি কোনও ব্যক্তি অপরাধ করেন, তবে তাঁর মধ্যে অবশ্যই অনুশোচনাবোধ থাকতে হবে। যা তাঁকে প্রায়শ্চিত্তের পথে নিয়ে যাবে। কেউ যদি বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোনওরকম অপরাধ বা অন্যায় করেন তাহলে তাঁকে মুক্তিধাম মুকামে গিয়ে পুরো সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষমা চাওয়া হলে, সেটা গ্রহণযোগ্য হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে যাচাই করেন বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
হনুমানরামের মন্তব্য, “তাঁদের সম্প্রদায়ভূক্ত মোট ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ। যতক্ষণ না সলমন খান ক্ষমা চাইছেন, ততক্ষণ তিনি ‘শাস্তির প্রাপক’।” তবে ক্ষমা চাইলে আবার অপরদিকে আইনি জটিলতায় পড়তে হবে খোদ বলিউড সুপারস্টারকেই। কারণ ২০১৮ সালে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় সলমনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিম্ন আদালত। যদিও সলমন তখন দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। এপ্রসঙ্গে রাজস্থান হাই কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে সেখানেই বিচারাধীন। এদিকে সলমনের বাবা সেলিম খানের মন্তব্য, যে ছেলে ছোট থেকে আজ পর্যন্ত কোনওদিন একটা আরশোলা পর্যন্ত মারতে পারেনি, সে কীভাবে হরিণ মারবে? তাই ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। একই সুর ভাইজানের প্রাক্তন প্রেমিকা সোমি আলির গালতেও। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, সলমন এই বিষয়ে তাঁকে বলেছিলেন, হরিণহত্যার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। শুধু তাই নয়, সলমন খানের হয়ে বিষ্ণোইদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন সোমি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.