Advertisement
Advertisement
Zakir Hussain Bikram Ghosh

‘জাকির ভাই’ বলে আর ডাকতে পারব না, বড় দাদাকে হারালাম: বিক্রম ঘোষ

'আমেরিকায় একই বাড়িতে থাকতাম' কিংবদন্তী মায়েস্ত্রোর জন্য কলম ধরলেন জনপ্রিয় তবলাবাদক বিক্রম।

Bikram Ghosh Pays tribute to Ustad Zakir Hussain
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:December 16, 2024 12:55 pm
  • Updated:December 16, 2024 2:20 pm  

বিক্রম ঘোষ: ২০২৩ সাল। গতবছর ঠিক ১৫ ডিসেম্বর গোয়ায় দেখা হল জাকির হুসেনের সঙ্গে। কত স্মৃতি। সব মনে পড়ে যাচ্ছে একে একে। আর কাউকে ‘জাকির ভাই’, ‘জাকিরজি’ বলে ডাকতে পারব না। ৭৩ কী এমন একটা বয়স, চলে যাওয়ার মতো। কত কাজ বাকি। কত কী করার ছিল। সব রেখে চলে গেলেন উস্তাদ। ওঁর মতো একজন মানুষ আমার কাছে বড় দাদার থেকে কোনও অংশে কম নয়। আমরা ছোটবেলায় একই বাড়িতে থাকতাম। আমেরিকার স্যান রাফায়েল শহরের ওই বাড়িতে বাবা-মা আর আমি থাকতাম উপরতলায়। আর নিচের তলার ফ্ল্যাটটা পণ্ডিত চিত্রেশ দাসের সঙ্গে শেয়ার করতেন জাকিরজি। ওঁর তখন বয়স বড়জোড় আঠেরো-উনিশ। আর আমার তখন সবে তিন-চার বছর বয়স। কত দিন এরকমও হয়েছে, বাবা-মা আমাকে ওঁর কাছে রেখে যেতেন দেখভাল করার জন্য। 

আজ তালের জগৎ তার ‘সম’ হারালো। ‘সম’ হল তাল শুরু হওয়ার মাত্রা। আমাদের সকলের জীবনেই উস্তাদ জাকির হুসেন ছিলেন ঠিক সেরকমই। যাঁকে ঘিরে তালের ব্রহ্মাণ্ডটা ঘুরত। ওঁর চলে যাওয়াটা ভীষণ অকল্পনীয়। কেরিয়ার হোক বা ব্যক্তিগতজীবন বরাবর আমাকে নানা সময়ে বড় দাদার মতো উপদেশ দিয়ে গিয়েছেন তিনি। পথ দেখিয়েছেন। জীবনে এগোতে সাহায্য করেছেন। এবং ওঁর সঙ্গে আমার মারাত্মক স্নেহের একটা সম্পর্ক রয়েছে। ওঁর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা তো বটেই, তার পাশাপাশি এক অদম্য স্নেহের টানও ছিল পরস্পরের প্রতি। যখনই দেখা হয়েছে সেটাকে আমরা দাদা-ভাইয়ের মতোই উপভোগ করেছি। দেখা হলেই আমাকে জড়িয়ে ধরে গাল টিপে দিতেন। মাথার চুল এলোমেলো করে দিয়ে আদর করে জাকিরজি বলতেন- “এই তো তোকে বেবি সিট করতাম, এখন কত বড় হয়ে গিয়েছিস।” গতবছর ঠিক এইদিনেই দেখা হয়েছিল ওঁর সঙ্গে গোয়াতে। আমার ছোটছেলেকে দেখে কোলে তুলে নিয়ে আদর করলেন। আমার সঙ্গে কত রসিকতা করলেন। দাদা-ভাইয়ের মতোই একটা সমীকরণ ছিল আমাদের। জীবনে অনেকভাবে আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন উনি।

Advertisement

ভারতবর্ষ কেন গোটা পৃথিবীর বুকে জাকির হুসেনের মতো শিল্পী অদ্বিতীয়। সঙ্গীতজগতে যে ক্ষতিটা হল, শিল্পী হিসেবে সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। কেন চলে যাবে এত তাড়াতাড়ি? ভীষণ বিধ্বস্ত লাগছে। কাজ করতে হচ্ছে, করে যাচ্ছি। জম্বির মতো। কল্পনাও করতে পারছি না যে উস্তাদ আর নেই। আমরা যাঁরা ছন্দের জগতে বাস করি, তাঁরা সূর্যকে হারালাম।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement