‘পিটিয়ে মেরে ফেলব’, খুনের হুমকি পেলেন পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:  সম্প্রতি ইসরো প্রধানের মন্দির দর্শন নিয়ে বেজায় হইচই হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ও এই বিষয়ে সরব হয়েছেন। চন্দ্রযান ২ ইস্যুতে ইসরো প্রধান কে শিবনের মন্দির যাত্রাকে তিনিও খুব একটা ভালো চোখে দেখেননি। ফলস্বরূপ, শিবনকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে একটা পোস্ট করেছিলেন। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। নেটিজেনদের একাংশের রোষানলে পড়েন তিনি। এমনকী ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে প্রাণনাশের হুমকি অবধি পান।

[আরও পড়ুন: ‘জানতামই না পাকিস্তানও রকেট ওড়াতে পারে’, বিদ্রুপ করে পাক রোষানলে আরশাদ]

ঠিক কী হয়েছিল যে অনিকেত চট্টোপাধ্যায়কেও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পেতে হয়? আসলে সম্প্রতি ইসরো চেয়ারম্যানের মন্দির যাওয়া নিয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তাঁর মূল বক্তব্য ছিল, “সংবিধান স্বীকৃত ধর্মনিরপেক্ষ দেশের কোনও নাগরিকের অধিকার থাকতে পারেনা দেশের কোনও প্রকল্প কে একটা ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দেখানোর। কোনও বৈজ্ঞানিক যদি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাফল্য কামনা করে মন্দিরে বা মসজিদে কিংবা চার্চে যান তাহলে তাকে আমি বৈজ্ঞানিক বলে মনে করি না। তিনি ছোটবেলায় কৃষক ছিলেন না মুচি, তা জেনে আমার মত বদলাবে না। আমি বাস্তববাদী। পাকিস্তানের বা বাংলাদেশের নই।”

“বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার সফলতার জন্য মন্দির-মসজিদ-চার্চে গেলে বলব, তাঁর বিজ্ঞানমনস্কতা নিয়ে আমি অত্যন্ত লজ্জিত।”

আরও পড়ুন:

• ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, আল্লু অর্জুনের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে স্লোগান, আটক ৮
• ‘পুষ্পা উই হেট টিয়ারস…’, টলিউডে বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে ‘খাদান’ জরুরি, কেন? বিশ্লেষণে সৃজিত

পাশাপাশি অনিকেত এও বলেন যে, “কিছুদিন আগেই সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক মাথায় ফুলের ডালা নিয়ে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন, আমি তার তীব্র নিন্দা করেছিলাম এই জন্য নয় যে মানুষ কেন ধর্মাচরণ করবে? বরং এইজন্য যে, একটা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বা সদস্য হিসেবে এই কাজ করা তার কখনওই শোভা পায় না। ঠিক সেরকমই একজন বৈজ্ঞানিক তাঁর নিজের বিশ্বাস নিয়ে মন্দির মসজিদ গেলে হাসি পাবে, কিন্তু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার সফলতার জন্য মন্দির-মসজিদ-চার্চে গেলে আবারও বলব, তাঁর বিজ্ঞানমনস্কতা নিয়ে আমি অত্যন্ত লজ্জিত।”

এই পোস্টে কিন্তু পরিচালক এও সাফ জানিয়ে দেন যে চন্দ্রযান ১০০ শতাংশও সফল হলেও ইসরো প্রধানকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য পরিবর্তন হত না। কারণ, চন্দ্রযান ২ অভিযানের সফলতা বা ব্যর্থতার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। আর এই পোস্টের পরই হুমকি ফোন পেতে শুরু করেন পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। হোয়াটস অ্যাপে এবং ব্যক্তিগত নাম্বারে মেসেজ পাঠিয়েও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে হয় তাঁকে। পরিচালক অবশ্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। যথাযথ প্রমাণ-সহ দায়ের করেছেন অভিযোগও।

[আরও পড়ুন: ওয়েব সিরিজ ‘দ্য স্টোনম্যান মার্ডারস’-এর গল্প চুরির অভিযোগ, লেখকের নাম করে ফেসবুকে পোস্ট]

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের মতে, এর আগেও বহু বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়েছে অনেকের সঙ্গে। তাই বলে কোনও ব্যক্তি বা ইস্যু নিয়ে সমালোচনা করে খুনের হুমকি পেতে হয়নি তাঁকে। কিন্তু এবার উগ্র গেরুয়া জাতীয়তাবাদী মৌলবাদের জন্য পেতে হচ্ছে। তবে দমে যাওয়ার পাত্র তিনি নন। আগেও একাধিকবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ভয় দেখানোটাই বর্তমানে একদলের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিক করেছি দিনে ২টো করে এরকম পোস্ট করব এবার থেকে।