স্টাফ রিপোর্টার: প্লট হাইজ্যাকের অভিযোগে ইতিমধ্যেই কাঠগড়ায় অনীক দত্তর ‘অপরাজিত’ (Aparajito)। এবার শুরু আইনি যুদ্ধ। ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে পরিচালক অনীক দত্ত (Anik Dutta) ও তাঁর প্রযোজকদের আইনি নোটিস পাঠাল প্রযোজনা সংস্থা ‘সাধু ব্রাদার্স এন্টারটেনমেন্ট প্রোডাকশন হাউস’।
প্রযোজনা সংস্থাটির দাবি, সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) ও তাঁর ‘পথের পাঁচালী’ বানানোর জার্নি নিয়ে ২০১২ সাল থেকেই ছবি বানাতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। টাকার অভাবে ছবিটি শেষ করে উঠতে পারেননি। কিন্তু ওই ভাবনা হাইজ্যাক করে ‘অপরাজিত’ ছবিটি বানিয়ে ফেলেছেন অনীক দত্ত। যা ইতিমধ্যে মুক্তিও পেয়েছে। ফলে সব দিক থেকেই বিপুল ক্ষতির মুখে ‘সাধু ব্রাদার্স এন্টারটেনমেন্ট প্রোডাকশন হাউস’।
প্রযোজনা সংস্থার তরফে আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “শনিবার সন্ধ্যায় অনীক দত্ত ও তাঁর প্রযোজনা সংস্থাকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। যাতে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিও করা হয়েছে। উত্তরের জন্য সাতদিন অপেক্ষা করা হবে। তারপর ঠিক করা হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।”
এদিকে, রবিবার রাতে ‘প্লট ছিনতাই’য়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে ‘অপরাজিত’-র পরিচালক অনীক দত্ত হোয়াটসঅ্যাপে জানান, ‘‘আগে ওঁদের থেকে অভিযোগের প্রমাণ চান। আমি যদি অভিযোগ করি গতকাল আপনি কোনও দোকান থেকে চুরি করেছেন, তা হলে আপনি কি বক্তব্য রাখবেন? সেটাই আমার বক্তব্য। এই মূর্খতায় (স্টুপিডিটি) আমি অংশগ্রহণ করব না। আপনারা যতই ছবি দিন, সত্যের অনুসন্ধান করুন, মশলার নয়।’’
আইনি নোটিস পাঠানো প্রসঙ্গে অনীকবাবুর জবাব, ‘‘আমি উকিল, ডাক্তার, মোক্তার, প্রধানমন্ত্রীর চিঠি নিয়ে যখন যা বলার বলব। আপনারা কিছু বলবেন ভাই?’’ প্রসঙ্গত, ‘প্লট হাইজ্যাক’ নিয়ে প্রথম সরব হন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। ছবি নিয়ে কোনও নেতিবাচক সমালোচনা না করলেও প্রমাণ-সহ চাঞ্চল্যকর তথ্য আনেন সামনে।
‘অপরাজিত’ ছবিটি কি মৌলিক ভাবনা?
2012 -তে নথিভুক্ত পথের পাঁচালি তৈরির ছবিটির শুটিং চলছে। নানা কারণে দেরি। এক থিমে ছবি। জেনে নাকি না জেনে? প্রচারের চাপে আসল টিম কোণঠাসা? তাঁদের ছবির কাজ চলছে। সেই ছবিটিও মুক্তি পাবে।
টলিউড, থিম কি হাইজ্যাকড হল? তদন্ত হোক। pic.twitter.com/0YJXrHTEgF— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) June 4, 2022
তিনি বলেন, “২০১২ সালে মেকিং অফ পথের পাঁচালী নিয়ে ‘বিষয় পথের পাঁচালি’ নামে একটি ছবি ইম্পাতে নথিভুক্ত করেছিল আরও একটি গ্রুপ। যাঁদের প্রায় সবাই রাজ্যের সংস্কৃতিমনস্ক পুলিশকর্মী। ইম্পার নথিতে সিরিয়াল নম্বর ৯০৩৭, তারিখ ১৯.১২.২০১২। লেখক প্রসেনজিৎ ঘোষ।”
এই পুলিশকর্মীদেরই প্রশ্ন, ২০১২ সালে যে বিষয়টি সিনেমা বানানোর জন্য নথিভুক্ত করা হয়েছে, সেটা কী করে আরেকজন ব্যবহার করতে পারেন? নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি যে বায়বীয় নয়, তা আইনি নোটিস পাঠানোর পদক্ষেপেই স্পষ্ট। নোটিস পাঠানো হয়েছে দুই প্রযোজক ফিরদৌসল হাসান, প্রবাল হালদার ও পরিচালক অনীক দত্তকে। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘অপরাজিত’ নির্মাণে কপিরাইট আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। চুরি করা হয়েছে চিত্রনাট্যের একাংশ। যা আদতে প্রসেনজিৎ ঘোষের লেখা।
নোটিসে আরও বলা হয়েছে, অনীক দত্ত বা ‘অপরাজিত’র প্রযোজনা সংস্থার তরফে কোথাও ‘সাধু ব্রাদার্স এন্টারটেনমেন্ট প্রোডাকশন হাউস’-এর কাছে কৃতজ্ঞতা বা ঋণ স্বীকার করা হয়নি। অথচ এই বিষয় ভাবনাকে ঘিরে প্রথম সিনেমা তৈরির পরিকল্পনা তাদেরই, অনীক দত্তর নয়। আরও একটি সংঘাতিক অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিসে। বলা হয়েছে, প্রযোজকের সন্ধানে ‘বিষয় পথের পাঁচালি’র গল্প অনেককেই শোনানো হয়েছিল। যার মধ্যে ‘অপরাজিত’র প্রযোজক ফিরদৌসল হাসানও রয়েছেন। তবে কি সেখান থেকেই চুরি গিয়েছে প্লট?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.