সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাকে হারালেন অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya)। সোমবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ফেসবুকে মায়ের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে একথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী। ক্যাপশনে লিখেছেন, “অখণ্ড শাসন দণ্ড ত্রস্ত হল তাঁর…।”
দিন চারেক আগেই নিজের জন্মদিন পালন করেছেন অপরাজিতা আঢ্য। তখনও হয়তো জানতেন না। প্রিয় মানুষটি ছেড়ে চলে যাবে। সোমবার সকালে মায়ের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে অভিনেত্রী লেখেন, “মা আজ সকাল ৯.৩০ চলে গেলেন…অখণ্ড শাসন দণ্ড ত্রস্ত হল তাঁর…মার আত্মার শান্তি হোক। যারা পরিচিত সবার নাম্বার আমার কাছে নেই তাদের সকলকে এই পোস্টটির মাধ্যমে জানালাম।”
এর আগে এক সংবাদমাধ্যমের আলোচনা চক্রে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অপরাজিতা আঢ্য জানিয়েছিলেন, তাঁর দিদা মাস্টারদা সূর্য সেনের ছাত্রী ছিলেন। প্রথম মহিলা হিসেবে বাংলাদেশের ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছিলেন। মাস্টারদার সঙ্গে স্বাধীনতা আন্দোলনেরও সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সেই সময় ইংরেজরা এমন মহিলাদের খুঁজে তাঁদের এবং তাঁদের কন্যা সন্তানদের গুলি করে দিয়ে চলে যেতেন। দিদার বাবা তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসেন। দাদুর সঙ্গে বিয়ে দেন। দাদুর নাম এখনও জানেন না অপরাজিতা। তা জানার প্রয়োজনও বোধ করেননি। কারণ পেশায় ইংরাজির অধ্যাপক হলেও দিদাকে মারতেন তিনি।
দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন অপরাজিতার দাদু। তারপরই অভিনেত্রী দিদা দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপেরবাড়িতে গিয়ে ওঠেন। সেখানে অনেক বঞ্চনা-গঞ্জনার মধ্যে অপরাজিতা আঢ্যর মা ও মাসি বড় হয়েছেন। তবে দু’জনেই ছিলেন উচ্চ শিক্ষিতা। অপরাজিতার মা পলিটিক্যাল সায়েন্সে MA করেছিলেন। ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন অপরাজিতার বাবাকে। শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তাঁকেও কালো ও উচ্চ শিক্ষিত বলে কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল। নকশাল আমলে চোখের সামনে এক ব্যক্তির মৃত্যু দেখে অপরাজিতার বাবার নার্ভের সমস্যা শুরু হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতেই অপরাজিতার জন্ম হয়। প্রি-ম্যাচিওর বেবি ছিলেন তিনি। তাই বহুদিন হাসপাতালে রাখতে হয়েছিল। যখন বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। অপরাজিতার বাবা নেন মেয়ে মানুষ করার দায়িত্ব, তাঁর মাকে বলেন সংসারের দায়িত্ব সামলাতে। অভিনেত্রী জানান বাবা তাঁকে বুকে করে মানুষ করেছেন আর মা কড়া শাসনের মধ্যে। কারণ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকা প্রয়োজন। সেই মাকে আজ হারালেন অভিনেত্রী। তবে তাঁর শিক্ষাকে পাথেয় করেই এগিয়ে যাবেন ভবিষ্যতের পথে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.