সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বলিউড আগেই বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। সেই বিভাজন এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকটাকার ধারণ করল। পর্দার সংঘাত এবার বাস্তবে। ফের যুযুধান বলিউডের দুই বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ এবং অনুপম খের। প্রসঙ্গ সেই NRC, CAA’র বিরোধিতা। ‘আ ওয়েডনেসডে’ সিনেমার পর আবারও নাসিরুদ্দিন-অনুপমকে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়তে দেখা গেল সেই বুধবারেই। ‘রিল লাইফে’ নয়, বরং ‘রিয়েল লাইফে’ ঘটল। গেরুয়া সমর্থক অনুপম খেরকে কোনওরকম রেয়াত না করেই বাক্যবাণ ছুঁড়লেন নাসিরুদ্দিন শাহ। “ক্ষমতাবানদের চামচাগিরি করা ওঁর রক্তে রয়েছে। ও ক্লাউন”, মত নাসিরুদ্দিনের।
প্রবীণ অভিনেতা অনুপম খের কিছুদিন আগে ফের স্বভাবসিদ্ধগতভাবে মোদি সরকারের সমর্থনে টুইট করেছিলেন। বুধবার সেই টুইটের প্রেক্ষিতেই নাসিরুদ্দিন শাহ রীতিমতো কঠোর ভাষায় তাঁর সমালোচনা করলেন। বললেন, “অনুপম খের ক্লাউন।” NRC, CAA প্রসঙ্গে যেসব তারকারা মুখ খুলেছেন, তাঁদের উদ্দেশে নাসিরের বক্তব্য, ‘‘আমি টুইটারে নেই। কিন্তু যাঁরা রয়েছেন, আমি চাইব তাঁরা যেন কিছু বলার আগে ভেবে নেন যে তাঁরা কোন পক্ষ বেছে নেবেন। অনুপম খেরের মতো কেউ কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব সক্রিয়। কিন্তু আমার মনে হয় না, ওঁর কথার কোনও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অনুপম খের আসলে একটা ‘ক্লাউন’ (ভাঁড়)! ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা কিংবা NFTII-এ ওঁর ব্যাচের যে কাউকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, সকলে জানে যে ও ক্ষমতাবানদের চামচাগিরি করতে ভালবাসে। চামচাগিরি ওঁর রক্তে রয়েছে। ওঁর কিছু করার নেই।”, বড় বড় তারকারা এই বিষয়ে নীরব আছেন কারণ মুখ খুললে বা কিছু করলে তাদের অনেক কিছু হারাতে হবে।
JNU কাণ্ডে দীপিকাকে সমর্থন জানিয়ে নাসিরুদ্দিনের মত, “দীপিকা যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। বড় তারকা হিসেবে ওঁরও তো অনেক কিছু হারানোর ছিল। তবুও গিয়েছে। দিন কয়েক হয়তো বিজ্ঞাপণ পাবে, কিন্তু তাতে ও গরীব হয়ে যাবে না, কিংবা ওঁর সৌন্দর্যও নষ্ট হবে না।’’
নাসিরুদ্দিনের এই মন্তব্যের পরই টুইটে পালটা জবাব দেন অনুপম খের। লেখেন, ‘‘আপনার কথা পড়লাম। আমার প্রশংসায় আপনি আমায় ভাঁড় বলেছেন। বলেছেন আমার কথায় গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই, চামচাগিরি আমার রক্তে রয়েছে প্রভৃতি। আপনার প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আপনার একটা কথাকেও গুরুত্ব দিইনি। আপনি যদি দিলীপ কুমার, অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্না, শাহরুখ খানদের সমালোচনা করতে পারেন, তাহলে সেই তালিকায় পড়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। হ্যাঁ, কখনও আপনার সম্পর্কে কটূক্তি করিনি, কিন্তু আজ জবাব দিতে বাধ্য হচ্ছি। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, প্রচুর সাফল্য পাওয়া সত্ত্বেও আপনি আপনার গোটা জীবন চরম হতাশায় কাটিয়েছেন। আপনার মনের গহনে এমন কিছু মতাদর্শ ঢুকে গিয়েছে, যার জন্য আপনি কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল, বিচার করতে ভুলে গিয়েছেন। যদি আমার নিন্দা করে আপনি প্রচার পেতে চান, তাহলে সেটা করেই খুশি থাকুন। আর আমার রক্তে কী আছে জানেন? ভারত আছে। সেটা বুঝতে শিখুন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.