সন্দীপ্তা ভঞ্জ: দিন কয়েক আগেই ‘আইটেম বয়’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন অঙ্কুশ হাজরা। টলিপাড়ার প্রথম কোনও অভিনেতাকে সিনেমায় আইটেম গানে নাচ করতে দেখা গিয়েছে। আর এমন ভাবনার নেপথ্যে টলিপাড়ার পরিচালকজুটি নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তবে জানেন কি, এই গানের দৃশ্যে শুটিংয়ের সময়ে পায়ে মারাত্মক চোট পান অভিনেতা। তবে সেই আঘাতও টলাতে পারেনি তাঁকে।
হাসিখুশি অঙ্কুশের রসবোধের জুড়ি মেলা ভার, একথা সম্ভবত ইন্ডাস্ট্রির সকলেরই জানা। কিন্তু অভিনেতার আরেকটি দিকের সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত নন। কাজের বিষয়ে তিনি কোনওরকম গড়িমসি করতে নারাজ। তাই পায়ে চোট নিয়েই নাচের দৃশ্যের শট দিয়েছেন। শুটিংয়ের দিন সাতসকালে রিহার্সাল করতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে! সেই আঘাত নিয়েই ভোর চারটে পর্যন্ত শুটিং করেন অঙ্কুশ। অনেকবার তাঁকে নন্দিতা-শিবু জিজ্ঞেস করেন যে, পায়ে চোট নিয়ে নাচ করতে পারবেন কিনা? এমনকী দুই পরিচালকের তরফে এও প্রস্তাব রাখা হয় যে, আইটেম গানের দৃশ্যটা নইলে অন্য একদিন শুট করা হোক। তবে নাছোড়বান্দা অঙ্কুশ! পায়ে চোট নিয়েই শট দিলেন।
রসিকতা করে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে অঙ্কুশ বললেন, “শুনেছিলাম সুরজিৎদার (চট্টোপাধ্যায়) ‘রঙ্গবতী’ গানে নাচতে গিয়ে লোকে আনন্দে কোমর ভেঙে ফেলেছিল! কিন্তু এবার আমার নাচের আগে তো মঞ্চই ভেঙে পড়ে যাচ্ছিল!” পাশাপাশি অভিনেতার সংযোজন, “সুরজিৎদা এমন একটি গান তৈরি করেছেন, সেই গানটি শোনামাত্রই বসে থাকা দায়! চোট পাওয়া পা-ও কেমন যেন নাচতে চাইছিল।”
বানতলার এক খোলা মাঠে তৈরি করা হয়েছিল মেলার সেট। সেখানেই রক্তবীজ-এর আইটেম সং ‘গোবিন্দ দাঁত মাজে না’র শুটিং হয়। প্রায় ভোর ৪টে অবধি চলেছিল সেই গানের দৃশ্যের শুটিং। সেইদিন ভোরেই আবার অঙ্কুশের ফ্লাইট ছিল। প্রায় রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টে অবধি শুটের পর, একবিন্দুও ক্লান্তি দেখাননি অভিনেতা। মনিটরের সামনে বসে পরিচালকদের মতামত শুনে যথাযথ শট দিয়েই বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হন।
‘বাধ্য ছাত্র’ অঙ্কুশের একাগ্রতা নিয়ে পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানালেন, আমি আর দিদি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম অঙ্কুশের কাজের প্রতি এমন নিষ্ঠা দেখে। যন্ত্রণার শিকি ভাগটুকু বোঝার উপায় ছিল না ওঁর চেহারা দেখে। এদিকে প্রত্যেকটা শটের পরে ওঁকে আইসপ্যাক দিতে হচ্ছিল। কাজের প্রতি কতটা ভালোবাসা থাকলে এভাবে ব্যথা ভুলে শুট করা যায়, সেদিন সেটে উপস্থিত সকলকে শিখিয়েছিল অঙ্কুশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.