চারুবাক: করোনা (CoronaVirus) সংকটের আবহে সারা বিশ্ব যখন ভারচুয়াল রিলিজ কিংবা ভারচুয়াল চলচ্চিত্র উৎসবের পথে হাঁটছে তখন প্রতিবেশী বাংলাদেশ দেশ-বিদেশের অতিথি-অভ্যাগতদের সশরীরে আমন্ত্রণ জানিয়ে পুরদস্তুর চলচ্চিত্র উৎসবের পরিকল্পনা করে ফেলেছে। সুরক্ষাবিধি মেনেই উৎসবের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন উৎসব-পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল।
অস্কার (Oscar) পিছিয়েছে। পিছিয়েছে BAFTA পুরস্কারও। যতদূর মনে পড়ে, বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শেষ হওয়ার পর আর কোনও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অতিথি-অভ্যাগত কিংবা চলচ্চিত্র অনুরাগীদের শারীরিক উপস্থিতিতে হয়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অনেকেই অনলাইন উৎসব ও রিলিজের পথে হেঁটেছে। করোনা (COVID-19) পরিস্থিতিতেও দেশ-বিদেশের অতিথিদের শারীরিক উপস্থিতিতে চলচ্চিত্র উৎসবের পরিকল্পনা করে ফেলেছে বাংলা দেশ। জানা গিয়েছে, আগামী বছরের ১৬ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত হবে ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (Dhaka International Film Festival)।
১৪ তারিখ উদ্বোধনের পর ৮ দিনের উৎসব পালিত হবে বাংলাদেশের জাদুঘর মিলনায়তন, শিল্পকলা অ্যাকাডেমি, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তন, আলিয়ান্স ফ্রান্স এবং স্টার সিনেপ্লেক্সে। এখনও পর্যন্ত কলকাতা থেকে জ্যুরি বিভাগে আমন্ত্রণ পেয়েছেন অভিনেতা-গায়ক অঞ্জন দত্ত। থাকবেন বাংলাদেশের অভিনেতা ফিরদৌস, অভিনেত্রী বন্যা মির্জা, বসনিয়ার সহির সিসিক, জর্ডনের দিনা নাসের, শ্রীলঙ্কার সম্রতনা দিশানায়েক, লন্ডনের অভিনেত্রী-পরিচালক লিজা গাজি। দেশ-বিদেশের ছবি দেখানোর পাশাপাশি চলবে মহিলা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নিয়ে আলোচনাসভা। যা গত কয়েক বছর ধরেই এই ঢাকা উৎসবের বড় আকর্ষণ।
আসন্ন উৎসবের স্লোগানও ঠিক হয়ে গিয়েছে। “নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ”। এই বিষয় নিয়েও ১ দিন সেমিনার হবে। ইতিমধ্যে কলকাতা থেকে ইন্দ্রাশিস আচার্যের ‘পার্সেল’, ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীর ‘মায়ার জঞ্জাল’ (এশিয়ান কম্পিটিশন) , বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘দ্য ফ্লাইট’ (সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড সেকশন), ‘পিংকি এলি’ (সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড সেকশন), ‘বাইস্কোপ’ (শর্ট ইন্ডিপেন্ডেন্স সেকশন), ‘বৃত্ত’ (শর্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট সেকশন), ‘দ্য ওমেন আন্ডার দ্য ট্রি’ (ওমেন ফিল্ম মেকার সেকশন)। এর মধ্যে ‘দ্য ওমেন আন্ডার দ্য ট্রি’-র প্রযোজক এবং পরিচালক দু’জনই ভারতীয় হলেও ছবিটি মার্কিন প্রোডাকশন কোম্পানির। বিজুকুমার দামোদরণের ‘বিরিয়ানি’ পছন্দ হয়েছে উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামালের (Ahmed Muztaba Zamal)। উৎসবে ছবি নিয়ে উপস্থিত থাকতে পারেন সৃজিত মুখোপাধ্যায় (তিনি আবার এখন বাংলাদেশের জামাই)।
আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বরে করোনার প্রকোপ কমার আশায় রয়েছেন ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির সদস্যরা। তাঁদের আশা, এই সময়ের মধ্যেই সেদেশে করোনার (COVID-19) প্রতিষেধকও বেরিয়ে যাবে। সমস্ত সুরক্ষাবিধি মেনেই উৎসব হবে বলে জানিয়েছেন উৎসব-পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। তাঁর কথায়, “আমরা, অনেকেই এখনও করোনার ভয় কাটিয়ে উঠতে পারিনি। মুম্বই চলচ্চিত্র উৎসব পরের বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেরলের উৎসব হবে কিনা ঠিক নেই। অস্কারও পিছিয়ে গেল। কিন্তু ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এখনও বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে আছে জানুয়ারিতে হবে বলেই!” তবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সদস্যরা যতোই আত্মবিশ্বাসী হোন, করোনা সংকটের আবহে এমন আয়োজন বিপদ বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.