Advertisement
Advertisement

জানেন কীভাবে ‘২.০’-র পক্ষীরাজন হয়ে উঠলেন অক্ষয়?

রজনীকান্তের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে: অক্ষয়৷

Akshay talks about the movie '2.0'
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 7, 2018 9:34 pm
  • Updated:December 7, 2018 9:34 pm  

নিজের মুক্তিপ্রাপ্ত নতুন ছবি ‘২.০’ নিয়ে মুম্বইয়ে অক্ষয়কুমারের মুখোমুখি তপন বকসি

‘২.০’-টা বেশ অন্যধরনের ছবি। মনে হচ্ছে কেরিয়ারের এই সময়টা আপনি বেছে নিচ্ছেন নতুন নতুন কিছু করার জন্য?
ইয়েস। ‘২.০’ অন্য ধরনের ছবি আমার কেরিয়ারে। নেগেটিভ শেড আছে চরিত্রটায়। যদিও তার আসল উদ্দেশ্য খারাপ নয়। এই ধরনের চরিত্র আগে করিনি। তাই বেশ নতুন লেগেছে চরিত্রটা।

Advertisement

এই ছবির পরিচালক শঙ্কর মূলত তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মানুষ। যদিও তিনি হিন্দি ছবিও করেছেন আগে। অথবা তাঁর করা মূল তামিল ছবি হিন্দিতে ডাব করা হয়েছে। এহেন শঙ্করের আবেদন কেমন লেগেছিল আপনার?
‘২.০’ ছবির চিত্রনাট্য শোনানোর আগে পর্যন্ত পরিচালক শঙ্কর সম্পর্কে আমার যেটুকু ধারণা ছিল, সেটা তাঁর ছবির একজন দর্শক হিসেবে। কিন্তু চিত্রনাট্য শোনানো থেকে শুরু করে ছবি তৈরির প্রত্যেকটা প্রসেসের মধ্যে দিয়ে ওঁর সঙ্গে যেতে যেতে মনে হয়েছে হি ইজ অ্যান আমেজিং ডিরেক্টর। ওঁর সিনেমা ভাবনাটা আমাদের তথাকথিত হিন্দি সিনেমা তৈরির ভাবনা থেকে বেশ আলাদা। ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ সিনেমা তো হিন্দিতে আমরাও পাই, অভিনয় করি। কিন্তু ওঁর বা তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ভাবনার দিক থেকে বেশ অন্যরকম।

‘২.০’ ছবিতে আপনার অভিনীত ‘পক্ষীরাজন’ চরিত্রটা নিয়ে আপনাকে বেশ উজ্জীবিত লাগছে?
আমি সত্যিই উজ্জীবিত। শংকর মুম্বইয়ে এসে আমাকে আমার জুহুর বাড়িতে আর গাড়িতে যেতে যেতে কিছুক্ষণ মোট আড়াই ঘণ্টা ধরে চিত্রনাট্য যখন শোনানো শেষ করলেন, তখনই আমার মনে হয়েছে এই ছবিকে আমার এক্ষুনি ‘হ্যাঁ’ বলা উচিত। মূল বক্তব্য ছিল, ‘দিস ওয়ার্ল্ড ইজ নট ওনলি ফর ইউ।’ আমরা ছাড়াও সারা পৃথিবীতে আরও অনেক প্রাণী আছে। পশুপাখি আছে। এই পৃথিবীটা তাদেরও। হয়তো তারা আমাদের মানে মানুষের ভাষায় কথা বলতে পারে না। তার মানে এই না যে তাদের অস্তিত্বকে আমরা ইগনোর করব বা তাদের আমাদের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করব অথবা ধ্বংস করব। এই অধিকার আমাদের কেউ দেয়নি। চিত্রনাট্য শোনার পর মনে হয়েছিল, ‘অ্যামেজিং’!

আপনি হিন্দি মশালা ছবি করার সঙ্গে সোশ্যাল মেসেজ দেওয়া ছবিও করেছেন। কিন্তু এই ছবিকে কি তাদের আগে রাখবেন?
রাখব। এত বড় স্কেলে জীবনের কিছু শাশ্বত সত্যিকে এরকমভাবে তুলে ধরার কোনও পরিচালককে আমি পাইনি। তার সঙ্গে খুব ক্রিস্টাল ক্লিয়ার একটা সাময়িক বার্তা। যা যে কোনও মানুষের অনুভূতিকে ছুঁয়ে যাবেই। অসম্ভব ভাল লেগেছে আমার এই চিত্রনাট্য।

কিন্তু ভারতীয় ছবি হিসাবে এর বাজেটও তো বিশাল? ৫১০ কোটি? মানলাম দেশের প্রায় সব ভাষাতেই তৈরি হয়েছে। ছবির প্রিন্টও বেশি। বিদেশে ভাল ফল করছে। কিন্তু এরকম একটা অঙ্কের বাজেট তুলে নিয়ে তাকে লাভের দরজায় নিয়ে যাওয়াও বিশাল ঝুঁকির? নয় কি?
বাজেট রিকভার করে কতটা লাভের অঙ্কে পৌঁছবে সারা পৃথিবীকে সেটা সিনেমা ব্যবসার দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা বলতে পারবেন। আমি একজন অভিনেতা হিসাবে কাজ করতে পেরে খুশি এটুকু বলতে পারি। আর এই ছবি ব্যবসায়িক সাফল্য পেলে আগামিদিনে অভিনেতা হিসেবে আমার ভাল হবে, সেটাও জানি। না হলে অন্য কথা।

রজনীকান্ত-এর মতো সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করলেন এই প্রথম। কেমন সেই অভিজ্ঞতা?
খুবই মাটিতে পা রাখা মানুষ। এত খ্যাতি, নামযশ কিছুই মানুষ হিসেবে তাঁকে পালটাতে পারেনি। সেজন্যই হয়তো তিনি এতটা উঁচুতে উঠতে পেরেছেন। অসম্ভব রসিক। হিউমারাস। বিনয়ী। ভদ্র। অনেক কিছু শেখার আছে ওঁর কাছ থেকে।

রজনীকান্ত নিজে মুম্বইয়ে এই ছবির প্রচারে এসে বলেছেন অক্ষয়কুমারই এই ছবির আকর্ষণ। অক্ষয়ই নায়ক।
(হেসে) এটা ওঁর বিনয়। রজনীকান্ত যে ছবিতে অভিনয় করেছেন, সেখানে আমি নায়ক হব কীভাবে? এটা এখানে ‘২’-টা রজনী স্যর। আমি নয়। এটা ভীষণভাবেই রজনী স্যরের ছবি।

কিন্তু ছবি রিলিজ হওয়ার পর দর্শক বলছে এ ছবিতে আসলে অক্ষয়-ই হিরো। তার মানে রজনীকান্তর কথাটাই ঠিক?
আমার চরিত্রটা গুরুত্বপূর্ণ। মিনিংফুল। দর্শকদের ভাল লেগে থাকলে আমি কৃতজ্ঞ।

এই যে ‘পক্ষীরাজন’ হতে গিয়ে আপনাকে যে প্রস্থেটিক মেকআপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তার অভিজ্ঞতা যদি শেয়ার করেন?
আমি এই ছবিতে শুটিং করেছি মোট ৩৮ থেকে ৪০ দিন। বলতে গেলে এর মধ্যে বেশিরভাগ দিনই আমাকে মেকআপ নিতে সাড়ে তিন ঘণ্টা টানা বসে থাকতে হয়েছে মেকআপ রুমে। শুটিং শেষ করার পর ড্রেস খোলা বা মেকআপ তোলা। আবার তারপর দিন সেই সাড়ে তিন ঘণ্টা মেকআপ নেওয়া আবার তোলা। আমি এমনিতেই ধৈর্যশীল। এই ছবির শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা আমাকে আরও বেশি ধৈর্যশীল করেছে।

আপনার ছেলে আরভ এখন বড় হয়েছে। কিন্তু আপনার মেয়ে নিতারা আপনাকে এরকম লুকে দেখে কেমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন?
নিতারার যদি আমাকে মেকআপের শেষে হঠাৎ করে দেখত নিশ্চয়ই অবাক হত। কিন্তু এই ছবির শুটিংয়ে আমার ফ্যামিলি আমার সঙ্গেই ছিল। নিতারা আমার প্রত্যেক দিনের মেকআপ সামনে থেকে দাঁড়িয়ে দেখেছে। প্রত্যেকটা স্টেপ দেখেছে। তাই অতটা অবাক হয়নি। এরকম হেভি মেকআপে আমার আরও একটা হিস্টোরিক্যাল ছবিও আছে। ‘কেশরী’।

‘পক্ষীরাজন’-এর মেকআপ নেওয়ার সময় কোনও অসুবিধা হয়েছিল?
অসুবিধা তেমন কিছু নয়। তবে প্রচুর ধৈর্যের দরকার। আর এই ড্রেস এমনভাবে বানানো হয়েছিল, যা ছিল ইনট্যাক্ট শরীরের সঙ্গে লাগানো। তাই শরীরের ঘাম বাইরে বেরতে পারেনি। সবটাই ভেতরে থেকে গিয়েছে। সে এক অভিজ্ঞতা। এমনকী, কোনও শক্ত খাবারও শুটিং চলাকালীন আমি খেতে পারিনি। শুধু মিল্ক শেক, লিক্যুইড খেয়ে থাকতে হয়েছে। এরকম মেকআপে খাবার চিবিয়ে খাওয়া যেত না।

করণ জোহরের নতুন ছবি করছেন। কিছু বলুন?
ওটা নিয়ে এখনই বলা যাবে না। নতুন বছরে বলতে পারব।

আর পরিচালক শংকরের পরিচালনার কাজকর্ম নিয়ে কিছু বলুন?
জেমস ক্যামেরনকে যদি স্টেরয়েড দেওয়া যায়, তারপর তাঁর যা অ্যাক্টিভিটি হবে, পরিচালক শংকর হলেন তাই (হাসি)।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement