ছবি: অচিন্ত্য রায়।
গৌতম ব্রহ্ম: দশ মিনিটের একটা শর্ট ফিল্ম হতেই পারত। রূপোলি পর্দার নায়িকা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে নুডলস খাচ্ছেন। অথচ দোকানি তাঁকে চিনতেও পারছেন না।
ধীরে ধীরে দোকানের আশপাশে ভিড় জমতে শুরু করল। কেউ কেউ নায়িকাকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে সেলফি নিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করে দিলেন। কিন্তু দোকানির কোনও হেলদোল নেই। মন দিয়ে পিঁয়াজ-লঙ্কা সহযোগে নুডলস (Noodles) বানিয়ে চলেছেন।
এমন প্লট তো সিনেমাতেই দেখা যায়! বুধসন্ধ্যায় দেখা গেল বিধাননগরের ফুটপাতে।
রূপকথার সাক্ষী থাকলেন নুডলস বিক্রেতা কমলাকান্ত দাস। তাঁর ফুটপাতের ছোট্ট দোকানে এসে দু’রকমের নুডলস খেয়ে গেলেন অভিনেত্রী রাইমা সেন (Raima Sen)। এক প্লেট নুডলস দোকানে দাঁড়িয়ে খেলেন। আর এক প্লেট নিয়ে গেলেন। কিন্তু দোকানির কোনও বিকার নেই। নিজের কাজেই ব্যস্ত। ওমলেট ভাজছেন, চা করছেন। আর মাঝেমধ্যে গজর গজর করে বলছেন, “বুঝিনা বাবা। সুন্দরী দেখলেই সবাই কেমন হামলে পরে।”
চোখের বালি-র আশালতাকে চিনতে পারেননি কমলাকান্ত ওরফে নান্টু। যখন জানতে পারলেন, তখন আকাশ থেকে পড়লেন। বললেন, “সুচিত্রা সেনের নাতনি আমার দোকানে এতক্ষণ থাকলেন? এত কথা বললেন। মাস্ক খুলে খেলেন। তাও আমি চিনতে পারলাম না!” দলা দলা আফশোস কমলাকান্তর গলায়। আশপাশের দোকানদাররা অবশ্য মুখ টিপে হাসছেন। আর বলে চলেছেন, “তোর দোকানের সেল তো কাল থেকে চারগুণ বেড়ে যাবে রে নান্টু।” চোখে মুখে হাজার ওয়াটের আলো জ্বলে উঠল নান্টুর। জানালেন, “একবার দেবকে চা খাওয়ানোর সৌভাগ্য হয়েছিল। এবার রাইমাকে নুডলস খাওয়ালাম। সত্যি আমি ভাগ্যবান। এখন বুঝতে পারছি, কেন সবাই ছবি তোলার জন্য হামলে পড়ছিল।”
দশ মিনিটের নুডলস পর্ব অবশ্য তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করলেন রাইমা। এদিন বিধাননগরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকের উদ্বোধনে এসেছিলেন। বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার আগেই চোখে পড়ে কমলাকান্তর দোকান। তার পরেরটুকু রূপকথা। পরে নৌকাডুবির হেমনলিনী বললেন, “কী করে চিনতে পারবে? আমি তো সাধারণ মানুষের মতোই ব্যবহার করেছি। নুডলসে আরও একটু পেঁয়াজ, লঙ্কা দাও বলে বায়না ধরেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.