সুকুমার সরকার, ঢাকা: জামিনের শুনানিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন পরীমণি (Pori Moni)। রাজধানীর গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় আগেই জামিন পেয়েছিলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী। এদিন পরীমণির জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তা বাড়াতেই আদালতে গিয়েছিলেন তিনি। অভিনেত্রীর জামিনের মেয়াদ বাড়িয়েছে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালত। একইসঙ্গে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বিচারক মামলাটি বিচারের জন্য অন্যত্র বদলির নির্দেশ দিয়েছেন। শুনানি শেষেই আদালতে অসুস্থ হয়ে পড়েন পরীমণি।
এদিন জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন নিয়ে দুপুর বারোটার দিকে পরীমণির হাজির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি নির্দিষ্ট সময়ে হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের মহানগর কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরে বিচারক দুপুর দু’টোর পর শুনানির জন্য সময় ধার্য করেন। একটা চল্লিশ মিনিটে একটি সাদা গাড়িতে পরীমণি আদালতে আসেন। দু’টো দশ মিনিটে তাঁর মামলার ডাক পড়লে তিনি আদালতের আসামির ডকে হাজির হন।
এজলাসে পরীমণির আইনজীবী তাঁর জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি ও অভিযোগপত্র না গ্রহণের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লা আবু শুনানিতে বিরোধিতা করে বলেন, পরীমণির জামিন দেওয়া হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন পর্যন্ত। পরীমণিকে নতুন করে আদালতে জামিন চাইতে হবে। এই আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। এরপরে পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত শুনানিতে বিচারকের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, “মাননীয় আদালত আমি আবেদন পরিবর্তন করে দিচ্ছি।” তিনি আবেদন পরিবর্তন করে আবারও বিচারকের কাছে আবেদনটি শুনানির জন্য দেন। নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, “পরীমণি পূর্বে জামিনে ছিলেন। তিনি জামিনের কোনও অপব্যবহার করেননি।” আইনজীবী আরও বলেন, “পরীমণির হাতে অনেক ছবি রয়েছে। নতুন করে কয়েকটি ছবিতে তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তাই তাঁর জামিন স্থায়ী করা আবশ্যক।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু বলেন, “আগে থেকে এই মামলায় শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য ছিল। সাধারণত সকাল দশটায় প্রত্যেক আসামীর আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আসামী পরীমণির বেলা একটা পর্যন্ত আদালতে হাজির হননি। আব্দুল্লাহ আবু বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আদালতের কাছে কেউ অসাধারণ না। সবাই সাধারণ। প্রত্যেককে আইন মেনে চলতে হবে। আদালতে সঠিক সময়ে হাজির হতে হবে। আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। পরীমণির কাছ থেকে বিদেশি মদ-সহ ভয়ংকর রকমের মাদক এলএসডি-আইস পাওয়া গেছে।” এর জন্য পরীমণির জামিনের বিরোধিতা করেন তিনি।
আবদুল্লাহ আবুর বক্তব্যের জবাবে পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা আদালতে বলেন, “স্যার, এ রকম ভুল আর হবে না।” এরপরে বিচারক পরীমণির জামিন বহাল রাখেন এবং অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির নির্দেশ দেন। বেঞ্চ থেকে উঠে আসামির কাঠগড়ায় যান পরীমণি। শুনানি চলাকালীন তিনি ছটফট করছিলেন। মুখের মাস্ক সরিয়ে শ্বাস নিচ্ছিলেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। পরে তিনি ওই আদালত থেকে বের হয়ে পাশের আদালতের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। সেখানে সংবাদমাধ্যমের পরীমণির ছবি, ভিডিও করতে ভিড় জমান। পুলিশ ভিড় কমানোর চেষ্টা করে। পরীমণি আবার আদালতের ভেতরে চলে যান। সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীমণিকে পুলিশের সাহায্যে গাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.