পূর্বাশা দাসের সঙ্গে একান্ত আড্ডায় ইন্ডাস্ট্রির বুম্বাদা।
‘অলৌকিক না লৌকিক’ একটা ছকভাঙা বিষয় এবং বেশ সফলও। শুরুতে কি সাফল্য নিয়ে কোনও সংশয় ছিল?
প্রসেনজিৎ: আসলে কি, যখনই তুমি ধরাবাঁধা ধারণা থেকে বাইরে গিয়ে কিছু একটা করবে তখন তার একটা রিস্ক তো থাকেই। এক্ষেত্রে আমি চ্যানেলকে ধন্যবাদ দেব। কারণ ধরো, একটা মেগা-সিরিয়াল যেটা এক-দেড় বছর ধরে চলছে তার কিন্তু একটা অডিয়েন্স সেট হয়ে যায় কিন্তু প্রত্যেক সপ্তাহে একটা করে গল্প নিয়ে নতুন রকমের কাজ করা হচ্ছে যখন সেখানে একটা প্রবলেম শুরুতে হয়। তবে আগেও তো এরকম হত যে সপ্তাহের শেষে একটা কোনও গল্প নিয়ে কাজ হয়েছে। সেরকম ভাবেই আমরা নতুন একটা চেষ্টা করেছি আর চ্যানেল সেই সাহসটা দেখিয়েছে। অবশ্যই এটা নয় যে টিআরপি প্রচণ্ড বেড়েছে বা দারুণ কিছু একটা ঘটে গেছে। তবে খুব ভাল ফিডব্যাক পেয়েছি।
পুজোয় তোমার ‘গুমনামী’ যথেষ্ট সফল, ওয়েবে ফুড অ্যান্থোলজিও দারুণ সফল আর এখন তো আমরা ‘নিরন্তর’-এর সাফল্যের বাজনাও শুনতে পাচ্ছি। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের এই যে সাফল্য, সেটা লৌকিক না অলৌকিক?
প্রসেনজিৎ: (হাসি) এটা লৌকিকও বলছি না আবার অলৌকিক ও বলছি না। আমার একটাই মন্ত্র, কাজের প্রতি নিষ্ঠা আর বিশ্বাস। এর বেশি কিচ্ছু নয়। দ্যাখো, এর বাইরেও অনেক কিছু থাকে আর দেখলামও তো অনেক কিছুই। ঢাল-তরোয়াল নিয়ে মানুষ চলে, আমি কোনও ঢাল-তরোয়াল নিয়ে চলি না। আমাকে চলতে হয়ও না। আমার শুধু সব সময় স্বপ্ন থাকে যে কলকাতায় বসে ভারতবর্ষে সবথেকে বড় বড় যে কাজ সেগুলো এখানে আনতে পারি কিনা! সেটা আমার সবসময় স্বপ্ন ছিল, আছে আর থাকবে। আর তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকবে আমার সাফল্য বল বা যা কিছু। আর হ্যাঁ, তুমি আরেকটা জিনিস মিস করেছ। আমার ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ ইফিতে যাচ্ছে।
‘অলৌকিক না লৌকিক’ নিয়ে এরপরে আর কোনও ভাবনা আছে?
প্রসেনজিৎ: হ্যাঁ, একটা কথা হচ্ছে। চ্যানেলও ভাবছে। তবে, আপাতত বিক্রম আর তার দলকে একটা প্রতিষ্ঠা দেওয়া গেল। এরপরে এগোতে গেলে আমাদের অন্য কোনও ডিভাইসে ঢুকতে হবে। কারণ, এই একই রকমের গল্প মানে ভণ্ড সাধুবাবা, জ্যোতিষী এসব নিয়ে আর কত দেখবেন মানুষ? এবার অন্যভাবে আরও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আমরা এগোতে পারি।
অভিনেতা প্রসেনজিৎ প্রযোজক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কে ১০-এ কত দেবেন? প্রযোজক প্রসেনজিতের সঙ্গে অভিনেতা বুম্বাদা কাজ করতে কতটা স্বচ্ছন্দ?
প্রসেনজিৎ: সেটা ঠিক বলতে পারব না যে কত দেবে, তবে ১০-ও দিতে পারে। কিন্তু তোমার পরের যে প্রশ্ন তার উত্তর, প্রযোজক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে বুম্বাদা একেবারেই স্বচ্ছন্দ নয়। কারণ, প্রযোজক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এখনও অতটা বেড়ে ওঠেননি যে তিনি অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে অ্যাফর্ড করতে পারেন। এই যে আমি এখানে অভিনয় করছি বা যা করছি এটা কিন্তু পুরোটাই আবদার মেটাতে। এরকম আমি অনেকের আবদার আগেও মিটিয়েছি সেটা তোমরা দেখেছো। এই জিৎ যেমন আমাকে বলল যে একটুখানি আমাকে ভয়েস ওভারটা করে দাও। তখন এদিকে ‘গুমনামী’ রিলিজ, ওদিকে ‘রবিবার’ শুটিং চলছে, তার মধ্যেও আমি করে দিয়েছি। আসলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তো রিলেশনের উপর চলে তাই রিলেশনের জন্য অনেক কিছুই করে দিয়েছি। কিন্তু অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এখনও প্রযোজক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সামর্থ্যের বাইরে। তাই তোমার প্রশ্নের উত্তর এটাই যে, এখনও এনআইডিয়াস্ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কাজ করার জন্য
তৈরি নয়।
প্রযোজনা করার সময় কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখো?
প্রসেনজিৎ: দ্যাখো, এখানে প্রথমে একটা কথা বলি এই যেমন বাংলাদেশে যে অ্যাওয়ার্ড ফাংশন হল সেখানে প্রায় সমস্ত ক্যাটেগরিতেই আমাদের দুটো করে সিনেমার নমিনেশন ছিল প্রায়। আমার খুব ভাল লাগছিল কারণ, আমি সবসময় একটা ব্যাপার মাথায় রেখেছি। ওয়েব বা টিভির ক্ষেত্রে কতটা পারা যায় জানি না তাও সিনেমার ক্ষেত্রে আমার কিন্তু একটা জিনিস মাথায় থাকে সেটা হল হয় নতুন ডিরেক্টর অথবা নতুন কোনও ফেস। এমনিতেও যদি তুমি দেখো যে ‘গানের ওপারে’তে যাঁরা কাজ করেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠিত আর আজকে ইন্ডাস্ট্রিতে রুল করছেন। কেউ আবার দিল্লিও চলে গেছেন। এখানে আমার কিছু পয়সা গেল কি কোথাও থেকে পয়সা এলো না সেটা একদমই ম্যাটার করে না।
অলৌকিকতায় বিশ্বাস করো?
প্রসেনজিৎ: ‘গুমনামী’র সময় কিন্তু অনেকে জিজ্ঞাসা করেছে যে তুমি কোন থিওরিটায় বিশ্বাস করো? আমি একজন অভিনেতা আমাকে অভিনয় করার সময় তিনটি থিওরিতেই বিশ্বাস করে কাজ করতে হয়েছে। তাই কাজটা ভাল হয়েছে। এখানেও কিন্তু তাই। এখানেও আমাকে অলৌকিকতা আর লৌকিকতা দুটোর মাঝখানে দাঁড়িয়েই প্রোডিউস করতে হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.