সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পর্দায় তিনি অভিনেতা। বাস্তবজীবনে সমাজকর্মী। আর হিরোর থেকে কিন্তু কোনও অংশে কম নন তিনি। নাইজেল আক্কারা। যাঁর কলকাতা ফেসিলিটিজ ম্যানেজমেন্ট নামে একটি সংস্থা রয়েছে। যে সংস্থা মূলত জেল থেকে মুক্তি পাওয়া কারাবাসীদের নিয়েই কাজ করে। যার সঙ্গে যুক্ত ৪০০ থেকে ৫০০ জন কর্মী। সেই সংস্থাই এবার জনকল্যাণে এগিয়ে এল। নেপথ্যে অভিনেতা তথা সমাজকর্মী নাইজেল আক্কারা। বিধাননগর পুরসভার অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি এলাকা স্যানিটাইজেশনের দায়িত্ব নিজে কাঁধে তুলে নিলেন নাইজেল। স্যানিটাইজেশন মেশিন হাতে পথে নামবেন অভিনেতা নিজেই। তাঁর কথায়, “এমন দুঃসময়ে যদি জনগণের সেবায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারি, তাহলে ভাল লাগবে।”
৬ এপ্রিল, সোমবার থেকে বিধাননগর পুরসভার কয়েকটি এলাকা স্যানিটাইজেশনের কাজ শুরু করছেন অভিনেতা নাইজেল। সংস্থার কর্মীদের দিয়ে নয়। বরং, ময়দানে নামবেন তিনি নিজে। সঙ্গে থাকবেন কোম্পানির ট্রেনিংপ্রাপ্ত জনা তিনেক কর্মী। মোট ৪ জন মিলেই প্রাথমিকভাবে স্যানিটাইজেশনের কাজ শুরু করবেন অভিনেতা। এপ্রসঙ্গে ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে নাইজেল বলেন, “আমার কোম্পানির ৮০ শতাংশ কর্মীদেরই ছুটি দিয়েছি। বর্তমানে তাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। কিন্তু ২০ শতাংশ কর্মীরা যাঁরা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা প্রত্যেকেই করোনা আতঙ্কের মাঝেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন হাসিমুখে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি দু-চারজনকে নিয়ে আমি নিজেই রাস্তা স্যানিটাইজেশনের কাজে নেমে পড়ব। যাঁরা আমার সঙ্গে যাবেন, তাঁদের প্রত্যেককেই স্যানিটাইজেশন পদ্ধতির ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। আর যারা কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ওদের ডেকে আমি বিপদে ফেলতে পারব না। আপাতত বিধাননগর পুরসভার কয়েকটা এলাকা দিয়েই এই কাজ শুরু করছি। পরবর্তীতে অন্য কোনও এলাকা স্যানিটাইজেশনের জন্য যদি আমাকে ডাকা হয়, সেখানেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব।”
৩০ নং ওয়ার্ডের সল্টলেক সেক্টর ওয়ান এবং সেক্টর টুয়ের বেশ কয়েকটি এলাকায় স্যানিটাইজেশনের কাজ হবে বলে জানালেন নাইজেল। তাঁর কথায়, “এই মুহূ্র্তে যা অবস্থা, মারণ এই ভাইরাস থেকে সংক্রমণ রুখতে আমাদের চারপাশের এলাকাগুলো ভীষণরকমভাবে স্যানিটাইজেশনের দরকার। সেই ভাবনা থেকেই আমি বিধাননগর পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলাম। যোগাযোগ করে ওরা আমার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। আগামীকাল, সোমবার ১১.৩০টার পর থেকে শুরু হবে কাজ।”
যেহেতু যানপরিষেবা বন্ধ, তাই বর্তমানে বাজারে জীবাণুনাশক কেমিক্যালের অভাব। কিন্তু তাঁর কোম্পানিতে বর্তমানে তা মজুত রয়েছে। তাই কেউ কোনও এলাকা স্যানিটাইজেশনের জন্য তাঁর সংস্থায় যোগাযোগ করলে অভিনেতা নাইজেল নিজে পৌঁছে যাবেন সেসমস্ত এলাকায়, জানালেন অভিনেতা খোদ। পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, “চারদিকে দেখছি, লকডাউন উপেক্ষা করেই অনেকে বাজার-ঘাটে গিয়ে ভীড় জমাচ্ছেন। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় আরও বেশি। তাছাড়া, বাজারে রোজ স্যানিটাইজেশন সম্ভবও না। তাই আমি মূলত কমন পাবলিক প্লেসগুলোকেই ফোকাস করব। সকালের দিকে বাজার-দোকান খোলা থাকে, কিন্তু বেলা বাড়তেই বন্ধ করে দেওয়ার নিয়ম জারি রয়েছে। তাই স্যানিটাইজেশনের জন্য আমি সেরকম সময়ই বেছে নিয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.