সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক মতাদর্শ আর দল নিয়ে টলিপাড়ায় কাদা ছোঁড়াছুড়ির খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছুদিন আগে কৌশিক সেন, অপর্ণা সেন, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বরা মোদিকে অসহিষ্ণুতা নিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তারপরই কৌশিক সেন খুনের হুমকি পান বলে অভিযোগ। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন অভিনেত্রী পার্নো মিত্র।
[ আরও পড়ুন: টানা ১৮ ঘণ্টা শুটিং, সেটেই জ্ঞান হারালেন বরুণ ধাওয়ান ]
কৌশিক সেনের হুমকির খবর ছড়িয়ে পড়তেই পার্নো মিত্র বলেছিলেন, গণপিটুনি অবশ্যই ভুল। কিন্তু এমন ঘটনার জন্য গোটা দলকে দোষারোপ করা মানে দলের সমস্ত কার্যকলাপ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না হওয়া। অপর্ণা সেন, অঞ্জন দত্ত ও কৌশিক সেনকে তাঁর বার্তা, গণপিটুনির ঘটনা বহুযুগ ধরে সারা ভারতে হচ্ছে। এর জন্য কোনও এক ব্যক্তিকে বা নির্দিষ্ট কোন দলকে টার্গেট করা অনুচিত। যারাই গণপিটুনির সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। যেসব শিল্পীরা অরাজনৈতিকভাবে চিঠি দিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্যই হল সূচারুভাবে এর উপর রাজনৈতিক তকমা লাগানো।
পার্নোর এমন বক্তব্যের পর কৌশিক সেন বেশ তিতিবিরক্ত। সহকর্মীকে তিনি বলেছেন, ঘটনাটা গণপিটুনি নিয়ে নয়, হুমকি নিয়ে। কোনও দলের অন্ধ ভক্ত হলে কিচ্ছু দেখা যায় না। এরপরই কৌশিক সরাসরি প্রশ্ন করেছেন, কথাগুলো বলার আগে কি তিনি যথেষ্ট ‘হোমওয়ার্ক’ করেছিলেন? তাঁদের চিঠিতে দলিতদের কথা উল্লেখ করা ছিল। পার্নো কি সেটা দেখেননি? অন্যজনের কথা তিনি বলতে পারবেন না। কিন্তু যেহেতু তিনি পার্নোর সঙ্গে কাজ করেছেন তাই সরাসরি তিনি অভিনেত্রীকে কয়েকটা প্রশ্ন করতে চান? এনআরএসে যখন ডাক্তারদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল, তখন কৌশিক সেখানে গিয়েছিলেন। সমালোচনার ক্ষেত্রে তিনি পক্ষপাত করেন না। অনলাইনে এমন অনেক ভিডিও রয়েছে যেখানে তিনি নিজের বক্তব্য স্পষ্টভাবে রেখেছেন। অপর্ণা সেনের সঙ্গে তিনি ভাটপাড়া ও কাঁকিনাড়াতেও গিয়েছেন। তারপর তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি লিখেছিলেন। প্রাইমারি শিক্ষকদের অনশন মঞ্চেও গিয়েছেন তাঁরা। চুপ থাকেননি কখনও।
[ আরও পড়ুন: ‘সরকারের সুবিধামতো বিল পাশ হচ্ছে’, আরটিআই নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ অনুরাগের ]
এরপর তিনি পার্নোকে জিজ্ঞাসা করেন, যখন তিনি কামদুনি গণধর্ষণে নির্যাতিতার বাড়ি গিয়েছিলেন, তখন পার্নো কোথায় ছিলেন? তাঁর প্রশ্ন, পার্নো যখন তাঁর উপর ‘বিশেষ ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদের’ (selective protest) অভিযোগ তুললেন তখন কি পুরো হোমওয়ার্ক করেছিলেন? তিনি এমন অভিযোগ একেবারেই স্বীকার করে নেবেন না যে কৌশিক সেন সব জায়গায় প্রতিবাদ করেন না। ২০০৭ সালে যখন বামপন্থীরা ভুল করেছিল, তিনি আওয়াজ তুলেছিলেন। তৃণমূলের থেকেও তিনি কোনও পদের জন্য লালায়িত নন। তাঁর ছেলে ঋদ্ধি মহানায়ক উত্তমকুমার সম্মান নিতে অস্বীকার করেছে। তিনি ও তাঁর পরিবার সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। আপস করেননি। কিন্তু এই প্রথমবার তাঁকে ফোন করে বলা হল, “হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে দেখতে পাও না? বেশি বাড়াবাড়ি করলে জানে মেরে দেব।” তিনি বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন। এবার দেখা যাক কী হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.