স্টাফ রিপোর্টার: কোভিডের (COVID-19) সেফ হোম তৈরি করতে গিয়ে মাঝপথে অক্সিজেন (Oxygen) জোগান বাতিল হলে হতাশায় কেঁদে ফেলেছিলেন অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত (Jisshu Sengupta)। তাঁর কথায়, “ছ’দিন আগে (শুক্রবার) সেফ হোম প্রস্তুতি যখন সম্পূর্ণ তখনই যাঁর অক্সিজেন সাপ্লাই করার কথা ছিল তিনি পিছিয়ে যান। তখন প্রায় কেঁদে ফেলি। বাধ্য হয়ে অসহায়ের মতো তখন দেবাদাকে (বিধায়ক) ফোন করি।” এরপর কনসেনট্রেটর যন্ত্র (Oxygen Concentrator) দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা হলেও শহরে যে অক্সিজেন জোগানের সংকট ক্রমশ মারাত্মক হয়ে উঠছে তা স্পষ্ট যিশুর মতো অভিনেতার কথায়। সাধারণ মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক দাম দিয়েও অক্সিজেন জোগাড় করা এখন যে সোনার পাথরবাটি তা স্বীকার করছেন বেসরকারি কর্তারাও। ফ্লো-মিটার ও ক্যানুলা (নাকের নল) অধিকাংশ ক্ষেত্রে চার-পাঁচ গুন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ।
তিন অভিনেতা-অভিনেত্রী ও এক সুরকারের উদ্যোগে এবং বিধায়ক দেবাশিস কুমারের (Debasish Kumar) সহযোগিতায় বুধবার দক্ষিণ কলকাতার লেক মলের পিছনে বাণীচক্র স্কুলে চালু হল সেফ হোম। সময়ের ডাকে সাড়া দিয়েই দুই অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত, মহানায়ক উত্তমকুমারের নাতি গৌরব (Gourab Chatterjee) ও দেবলীনা (Devlina Kumar) ছাড়াও সুরকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত (Indraadip Dasgupta) এই কাজে ব্রতী হয়েছেন।
দিন পনেরো আগেই সর্দার শংকর রোডে বাণীচক্র স্কুলের তিনতলা জুড়ে এই সেফ হোমটি চালুর ব্যবস্থা হয়। কিন্তু ডাক্তার, নার্স, বেড থেকে শুরু করে খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা হলেও আচমকা মাঝ পথে অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়া ব্যক্তি উধাও হয়ে যান। বিপাকে পড়ে যিশু রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়কের (TMC MLA) দ্বারস্থ হন। অভিনেতার কথায়, “ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে বিধায়ক সাতটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর জোগাড় করে দেন।” ২৫ শয্যার সেফ হোমটি বুধবার চালু হল। পরে দেবাশিস কুমার জানান, “রামকৃষ্ণ মিশন সেবাসদনের সঙ্গে সমন্বয় করেই এই সেফ হোম চালু করা হল। ২৪ ঘণ্টাই ডাক্তার ও নার্স থাকবে, অক্সিজেন ও করোনার (Corona Virus) সমস্ত ওষুধ-পথ্য দেওয়া হবে। রোগীরা গুরুতর অসুস্থ হলে, শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেলে সঙ্গে সঙ্গে শিশুমঙ্গলে ভরতি করা হবে।”
View this post on Instagram
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে দক্ষিণ কলকাতায় আরও পাঁচটি বড় সেফ হোম চালু করছেন পুরসভার প্রশাসক, বিধায়ক দেবাশিস কুমার। শরৎ বোস রোডে সাউথ সুবার্বন স্কুলেই রামকৃষ্ণ মিশন সেবাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ৫০ শয্যার হোম ১ জুন থেকে চালু হচ্ছে। আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সিটি স্ক্যান, বাইপ্যাপ, ভেন্টিলেটর মেশিনও থাকবে। বিধায়কের দাবি, “সেবাসদনের একটা বিকল্প ওয়ার্ড হিসাবেই গড়ে উঠছে সেফ হোমটি।” আনন্দপুরের বাপুজি আশ্রমেও একটি ২০০ শয্যার সেফ হোম যেমন হচ্ছে তেমনই বিবেকানন্দ পার্ক, গড়িয়াহাট ও লেক গার্ডেন্সে মিলন সংঘের পাশে ৩০ শয্যার আরও তিনটি সেফ হোম একসপ্তাহের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে। যোধপুর পার্কে ৯৫ পল্লি পুজো কমিটিও প্রশাসক রতন দে’র উদ্যোগে ক্লাবঘরের পাঁচটি তলা জুড়েই ১০০ শয্যার সেফ হোম চালু করছে। চিকিৎসা ও পথ্যের পাশাপাশি থাকছে অক্সিজেন পার্লারও (Oxygen Parlour)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.