সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ এড়াতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। আর এই লকডাউনের মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে মুসসিমদের পবিত্র রমজান মাস। অন্যান্য বছর এই সময় মসজিদ বা মাজারে হয় নমাজ পড়ার ভিড়। কিন্তু এই বছরের ছবিটা কিছু আলাদা। মারণ ভাইরাস থেকে বাঁচতে বাড়িতে থাকার বার্তা দিচ্ছে প্রশাসন। চিকিৎসকরাও বারবার বলছেন, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোবেন না কেউ।’ রমজান মাসেও যেন তার অন্যথা না হয়, সেই বার্তাও দিয়েছেন সেলিব্রিটিরা। বলেছেন, ‘মন যতই মসজিদের দিকে টানুক, নিজের কথা ভেবে, প্রিয়জনদের কথা ভেবে না হয় এবছর বাড়িতে থেকে ইবাদত করুন।’ সেই একই কথা এবার শোনা গেল মীরের গলাতেও।
সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন এই তিনি। সেখানে লিখেছেন, সিনেমা হল বন্ধ। আমরা তাও বাড়িতে বসে নতুন সিনেমা দেখছি। রেস্তরাঁ বন্ধ হলেও বাড়ির রান্নাঘরেই তৈরি হচ্ছে ভালমন্দ খানা। চেটেপুটে তার স্বাদ নিচ্ছি আমরা। পড়ুয়ারা অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে চালাচ্ছে পড়াশোনা। অফিস-কাছারি বন্ধ। কিন্তু বাড়িতে বসেই চলছে কাজ। তাহলে প্রার্থনা নয় কেন? করোনার জেরে বন্ধ হয়েছে মন্দির, মসজিদ, গির্জা। কিন্তু মানুষের প্রার্থনা তো বন্ধ হয়নি। তাহলে ব্যতিক্রম কেন হবে রমজান মাসে? এই সময়েও তো আল্লার কাছে প্রার্থনাই করি আমরা। প্রিয়জনদের জন্য দোয়া করি। সেটা বাড়িতে থেকেও সম্ভব। মীরের স্পষ্ট প্রশ্ন, ওয়ার্ক ফ্রম হোম যদি হতে পারে, ওয়ারশিপ ফ্রম হোম হবে না কেন? ‘কথায় আছে WORK IS WORSHIP (তাই না?) ব্যস্। মিটে গেল!’ লিখেছেন মীর।
অনুরাগীদের জন্য তাঁর বার্তা, এ বছর রমজানে বাড়িতে থেকে না হয় আমরা তাঁদের জন্য প্রার্থনা করি, করোনার জন্য যাঁদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। মানুষের সেবায় যাঁরা নিজেদের নিয়োজিত করেছেন, যে সব করোনা রোগীর চিকিৎসকরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের ছুঁতে পর্যন্ত পারছেন না সংক্রমণের ভয়ে, তাঁদের জন্য না হয় বাড়িতে বসে আমরা আল্লার কাছে দোয়া করি। মীর লিখেছেন, ‘তাঁদের জন্য প্রার্থনা করুন, যাঁরা প্রত্যেকদিন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন যে মনুষ্য সেবাই হল সেরা ধর্ম! এটা যদি এখনও না বুঝি তাহলে আর কবে বুঝব!’ তবে রাস্তাঘাটে রমজানের ইফতার মিস করবেন বলেও জানিয়েছেন মীর। কিন্তু এও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘আগে প্রাণ, তারপর খান-পান।’
শেষ নয় এখানেই। রমজান মাস মানে দিনভর রোজা রাখা। সূর্য ডোবার পর রোজা ভাঙা। কিন্তু গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অনেকেই তো ২৪ ঘণ্টা উপোস করে কাটাচ্ছেন। লকডাউনের কারণে বহু মানুষের এক বেলাও খাবার জুটছে না। কষ্টে আছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। দেশের এই দুর্দিনে ভাল নেই কেউ। নিজের রোজা ভাঙার আগে পাশের মানুষটার খবর নেওয়াটাই তো মানব ধর্ম। এ বছর নিজের বদলে তাঁদের কথা ভাবা দরকার সর্বাগ্রে। সেই আবেদনই নিজের ফেসবুকে করেছেন মীর। বাড়িতে থেকেই আল্লার কাছে প্রার্থনা করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। প্রার্থনা করেছেন, দ্রুত কেটে যাক অন্ধকার। বিদায় নিক করোনা। শীঘ্রই হাসি ফিরে আসুক প্রতিটি শিশুর কান্না ভেজা সুকোমল ছোট্ট মুখগুলিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.