সৌরভ মাজি, বর্ধমান: দুই চোখে স্বপ্ন থাকতে হবে। তাহলে স্বপ্নকে সত্যি করার তাগিদও থাকবে। স্বপ্ন সফল হবে তবেই। এটাই ছিল বিশ্বাস। বর্ধমান স্টেশনে বইয়ের দোকানে বসে বিভিন্ন ফিল্ম ম্যাগাজিন দেখতেন। নিজেকে সমৃদ্ধ করতেন। আর স্বপ্নের জাল বুনতেন। বছর দশেকের মধ্যে সেই তরুণের ঝুলিতেই একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মান। কখনও ময়দানের জাদুকর জামশেদকে নিয়ে শর্টফিল্ম, কখনও আবার অমানবিকতার বিরুদ্ধে ছোট্ট শিশুর নীরবতা বুঝিয়ে দিয়েছে হিংসা থেকে কীভাবে দূরে থাকা যায়। একের পর এক শর্টফিল্ম বানিয়ে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত হয়েছেন বর্ধমানের সেই তরুণ। তিনি লোকো কলোনির বাসিন্দা কে কে মল্লিক।
কলকাতা ময়দানের প্রখ্যাত ইরানি ফুটবলার জামশেদ নাসিরি। তাঁর পরিচয় বাঙালিকে অন্তত দিতে হয় না। সেই জামশেদকে নিয়েই পার্সিয়ান তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন কে কে মল্লিক। ‘টেল অফ নাসিরি’। সুদূর ইরান থেকে কলকাতাকে কীভাবে একসূত্রে গেঁথেছেন জামশেদ, সেটাই তুলে ধরা হয়েছে টেল অব নাসিরিতে। কলকাতার মোহনবাগান মাঠ-সহ বিভিন্ন জায়গায় শুটিং হয়েছে। স্বয়ং জামশেদ নাসিরিকে দেখা গিয়েছে ছবিতে। জামশেদের ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছে বর্ধমানের টাউন স্কুলের শিবাংশু বিশ্বাস। ইরানের চলচ্চিত্র উৎসবে ডাক পেয়েছিল ‘টেল অফ নাসিরি’।
কে কে মল্লিকের আরও একটি প্রয়াস ‘ইনসাইডার’। এই শর্টফিল্মটি সম্প্রতি রূপকলা কেন্দ্র আয়োজিত ১৪তম আন্তর্জাতিক সমাজ সংযোগ চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয়েছে রাজ্যে। ছবিটি রাজ্যের সমস্ত জেলায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে। কয়েকদিন আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রদর্শিত হয় এটি। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন বর্ধমানের টাউন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র শিবাংশু বিশ্বাস। এই ছবিটি অন্ধ্রপ্রদেশের কুরনুল শর্টফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বিশেষ সম্মান পেয়েছে। কেরলে তিরুবনন্তপুরম আন্তর্জাতিক শর্টফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও প্রশংসিত এই ছবি। এই ছবিতে কেকে মল্লিকের সহকারী ছিলেন শৌভিক দাস। তাঁদের তৈরি ‘সাইলেন্ট অনার’ পুরস্কার পেয়েছে লখনউ আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে।
এছাড়া দিল্লি বায়োস্কোপ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, কলকাতার আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে দু’বার, মুম্বইয়ে ইয়েস ফাউন্ডেশনের সোশ্যাল ফিল্ম কম্পিটিশনে দু’বার এবং দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছ ভারত শর্টফিল্ম প্রতিযোগিতায় দু’বার পুরস্কৃত হয়েছে এই শর্টফিল্মটি। কে কে মল্লিকের কথায়, “ইরানের বিখ্যাত পরিচালক মাজিদ মাজিদি আমার প্রিয় পরিচালক। ভক্তও বলা যায়। স্বপ্ন দেখতাম ছবি বানানোর।শর্টফিল্ম অনেকেরই ভাল লাগছে। প্রশংসিত হচ্ছে। সম্মানিত হচ্ছে। এটাই বড় পাওনা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.