Advertisement
Advertisement

কালো মেয়ের আলো-কথা

সাফল্যের ধবধবে ফরসা আলোও কুর্নিশ জানিয়ে এসে পড়েছে তাঁদের পায়ের নীচে৷ ঠিক যেভাবে মহাকাল বুক পেতে দিয়েছে কালীর সামনে৷

Black beuaties of bollywood whose success proves the fair skin obsession is unfair
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 29, 2016 1:12 pm
  • Updated:October 29, 2016 5:17 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কালো? তা যে যতই কালো হোক…৷ তাঁদের আলো ছটায় যে ভুবন মোহিত তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ শুধু কালো হরিণ চোখের জাদুতেই তো নয়, তাঁরা দুনিয়াকে বশ করেছেন তাঁদের প্রতিভায়, পরিশ্রমে, অধ্যবসায়৷ আর তাই সাফল্যের ধবধবে ফরসা আলোও কুর্নিশ জানিয়ে এসে পড়েছে তাঁদের পায়ের নিচে৷ ঠিক যেভাবে মহাকাল বুক পেতে দিয়েছে কালীর সামনে৷

দেশ যতই প্রগতিশীল হোক না কেন, ফরসা-কালোর ভেদাভেদ গুপ্তরোগের মতোই থেকে গিয়েছে দেশবাসীর মননে৷ আর সে বিভেদের সবথেকে বেশি শিকার হয়েছেন নারীরা৷ তবে আশ্চর্য ও খুশির কথা এই যে, নারীরাই এগিয়ে এসে সে স্টিরিওটাইপ ভেঙেছেন৷ ‘কূরূপা’ থেকে ‘সুরূপা’ হওয়ার দায় বয়ে বেড়াননি৷ সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর কবিতায় যেভাবে কালো বউকে জিতিয়ে দেন, ঠিক যেন সেভাবেই বিশ্বের কালো মানুষের অধিকার অর্জনের মতো কালো মেয়েরাও তাঁদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছেন৷

Advertisement

সম্প্রতি অভিনেত্রী তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়কে এক অনুষ্ঠানে গায়ের রং নিয়ে ‘খোঁটা’ দেওয়া হলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান ছেড়ে এসেছিলেন তিনি৷ রসিকতা আর ব্যক্তি আক্রমণের সীমানাটা এত গায়ে গায়ে যে, একটু এদিক-ওদিক হলেই সর্বনাশ৷ অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে তাইই হয়েছিল৷ অপরপক্ষ যা রসিকতা ভেবেছে, তিনি তা যথেষ্ট সিরিয়াসলি নিয়েছিলেন৷ নিয়েছিলেন কারণ এর পিছনে থেকে গিয়েছে কালো মেয়েদের অধিকার রক্ষার দীর্ঘ লড়াই৷ কালো বলে পিছিয়ে পড়া, সমাজের হাতে অত্যাচারিত হওয়ার যে ইতিহাস, তার সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করেন বলেই রসিকতার রিয়ালিটি শো তিনি মেনে নিতে পারেননি৷

যেমন মেনে নিতে পারেননি আর এক অভিনেত্রী নন্দিতা দাসও৷ গায়ের রং ফর্সা করা ক্রিমের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি৷ কেন মেয়েদের ক্রিম মেখে ফরসা হয়ে উঠে তবে যোগ্য হয়ে উঠতে হবে, প্রশ্ন ছিল তাঁর৷ সত্যি সে প্রশ্ন অমূলক নয়৷ এ দেশ তো পেয়েছে স্মিতা পাতিলকে৷ জেনেছে, কালো বা ফর্সা হওয়া গৌণ, পর্দায় কীভাবে জাদু ছড়াতে হয় তা জানতে হয়৷ যে রূপোলি পর্দা ছবির নায়িকাকে কেবলই গৌরী কল্পনা করে এসেছে সেখানে দাঁড়িয়ে তাঁর প্রতিষ্ঠা এক সদর্প প্রতিবাদ৷

বস্তুত বলিউডে দশকে দশকে প্রায় রাজ করে চলেছেন এই কৃষ্ণকলিরাই৷  কাজল, বিপাশা বসুরা যে রীতিমতো হিন্দি ছবির দুনিয়া শাসন করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ আছেন কঙ্কণা সেনশর্মা থেকে চিত্রাঙ্গদা সিং৷ এমনকী এই তালিকায় থাকবেন প্রিয়াঙ্কা, দীপিকারাও৷ তথাকথিত ফরসা না হয়েও এঁরা দেখিয়ে দিয়েছেন গায়ের রং সাফল্যের ক্ষেত্রে কোনও মাপকাঠিতেই হতে পারে না৷

আর তাই এই অলিখিত বর্ণবৈষম্যের অন্ধকার ধীরে ধীরে কাটছে৷ কালো মেয়েদের সাফল্যের আলোতেই ঘুচে যাচ্ছে ভেদাভেদ৷ তন্ত্রে-মন্ত্রে মুখ না গুঁজে থেকেও যে  কালো মেয়ের পায়ের তলায় যে আলোর নাচন সত্যিই দেখা যায়, তা যেন জানিয়ে দিচ্ছেন এঁরাই৷

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement