কুয়াশা, বৃষ্টি ভেজা দার্জিলিংয়ের ম্যাল, কফি কাপে চুমুক আর এসবের মাঝেই মিষ্টি টুকুর ‘সোয়েটার’ বোনা। তত্ত্বাবধানে শিলাদিত্য মৌলিক। আগামিকাল মুক্তি পাচ্ছে ‘সোয়েটার’। তার প্রাক্কালেই সোয়েটার বোনার যাবতীয় অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন টুকু ওরফে ইশা সাহা শুনলেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ।
রিল লাইফে তো হল, তা রিয়েল লাইফে সোয়েটার বোনার অভিজ্ঞতা রয়েছে?
ইশা: না, সোয়েটার বোনার অভিজ্ঞতা নেই। (হেসে) মাফলার, স্কার্ফ বুনেছি। ছোটবেলায় স্কুলের প্রজেক্টের জন্য বুনতে হয়েছে আর কী! সবাই এসব মাকে দিয়ে করায়। কিন্তু আমার মা এসব করতে পারেন না, অগত্যা আমাকেই শিখতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাটা কাজে লেগে গিয়েছে।
তার মানে তো ছবিতে সোয়েটার বুনতে গিয়ে সেরকম কসরত করতে হয়নি…
ইশা: শিলাদিত্যদা বলেছিল কেমন সোয়েটার বুনতে পারিস আমাকে একবার দেখাস। ছবিতে শ্রীলেখাদির স্টুডেন্টদের ভূমিকায় যারা রয়েছে, তারা একমাস ধরে নিয়ম করে উল বোনা শিখেছে রীতিমতো। সেই ক্লাসেই একদিন গিয়ে হাজির হলাম। উল বুনলাম। শিলাদিত্যদা বললেন, ঢের হয়েছে.. আর আসতে হবে না ক্লাসে! ব্যস, আমিও নায়িকা হওয়ার অ্যাডভান্টেজটা তুলে নিলাম!
[আরও পড়ুন: বাঙালি পরিচালকের হাত ধরে বলিউডে পদার্পণ রূপান্তরিত শ্রী ঘটকের]
কখনও নিজের হাতে বানানো এরকম কিছু উপহার দিয়েছেন কাউকে?
ইশা: বিশ্বাস কর, এই সৌভাগ্যটা আমার হয়নি কোনও দিন। শেষবার স্কুল প্রজেক্টের জন্যই নিজে হাতে জিনিস বানিয়েছিলাম।
শাওন, ঝিনুক, টুকু… কোন চরিত্রটা ইশার মতো?
ইশা: তিনটে তিনরকম চরিত্র। শাওন আমার প্রথম চরিত্র, তাই ইমোশনালি এই নামটার সঙ্গে জড়িত।
এদের মধ্যে কোন চরিত্রটা করতে গিয়ে মন হয়েছে, যে ‘এটা পুরো আমি’?
ইশা: ঝিনুক খানিকটা আমারই মতো। কিন্তু, তা বলে বাকি দুটো মোটেই বাদ দিচ্ছি না। শাওনের সঙ্গে যেমন ইমোশনালি জড়িয়ে আছি, ঠিক তেমনই টুকুর মতো ইশাও একটু কম কথা বলে। আগে আরও ইন্ট্রোভার্ট ছিলাম। তবে এখন অনেকের সঙ্গে কাজের প্রয়োজনে কথা বলতে হয়, তাই আসতে আসতে সেটা কাটছে।
ছবির শুটিং দার্জিলিংয়ে… তা গরমকালে ‘সোয়েটার’-এর উষ্ণতা দর্শকরা কতটা উপভোগ করতে পারবেন বলে মনে হয়?
ইশা: ছবিজুড়ে দার্জিলিং। এ ছবি দেখতে দেখতে ঠান্ডা হিমেল হাওয়ায় দর্শকরা যে মজবেনই, সেই গ্যারান্টিটা দিচ্ছি আমি ইশা… আর হ্যাঁ, গোটা সোয়েটার টিমও! ছবি দেখেই গরমের ছুটিতে দার্জিলিংয়ের টিকিট কাটতে বাধ্য তারা.. এই বলে দিলাম! (হেসে)
ছবিতে মধ্যবিত্ত পরিবার, বিয়ের সমস্যা দেখান হয়েছে… এখনও মেয়েদের খানিক বয়স বাড়লেই বিয়ে নিয়ে খোঁটা শুনতে হয়, তাঁদের জন্য মেসেজ?
ইশা: আমাদের সমাজে এখনও কোথাও কোথাও এরকম চিন্তাধারা রয়েছে। এগুলো একধরনের মানসিক প্রতিবন্ধকতাই বটে! টুকু যেহেতু কিছু পারত না, তাই একের পর এক পাত্রপক্ষ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই বলব, প্রথমত আত্মবিশ্বাসী হতে হবে এবং দ্বিতীয়ত অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হয়ে পায়ের তলার মাটিটাকে শক্ত কর।
টুকু কোথাও গিয়ে এক্ষেত্রে হাজার হাজার মেয়ের কথা বলছে.. তার চরিত্র কি কোথাও গিয়ে এসব মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়াবে?
ইশা: হয়তো। যেই মেয়েটা না বলতে পারত না তার মা-বাবাকে বা বয়ফ্রেন্ডকে। গুমড়ে থাকত। যে এতদিন প্রত্যাখ্যাত হয়ে এসেছে, সে কি এবার প্রত্যাখান করা শিখল! তার পরিবর্তনটাই ছবির মোড়। একটাই কথা বলব, ছবিতে পজেটিভ মেসেজ রয়েছে।
আর কেউ যদি টুকুর মতো বয়ফ্রেন্ড বা বাড়িতে দেখা পাত্রর মধ্যে কনফিউজড হয়ে যায়… তাহলে?
ইশা: মন যা বলবে তাই শোনা উচিত। টুকু নিজের কথা বাড়িতে বলতে পারেনি, তাই মা-বাবার কথামতো তাকে চলতে হয়েছে। বিয়ের পিঁড়িতে বসার জন্য সোয়েটার বোনার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। তবে, টুকু কিন্তু একটা সারপ্রাইজ প্যাকেজ। তাই বলব, নিজের মনের কথা বলতে শেখা উচিত সবার। জীবনে কি চাইছ না চাইছ সেগুলো মা-বাবার সঙ্গে আলোচনা কর।
[আরও পড়ুন: প্রথমবার বাবার ছবিতে নায়ক বনি, শুটিংয়ের খুঁটিনাটি জানালেন অভিনেতা]
আচ্ছা, ছবিতে সিধুদা (ক্যাকটাস) রয়েছেন…
ইশা: ছবিতে উনি আমার পিসির (শ্রীলেখা) বর। স্ক্রিন প্রেসেন্স বেশিক্ষণ না থাকলেও, যেটুকুতে রয়েছেন, পুরো মাতিয়ে দিয়েছেন। সিধুদা যে এত ভাল অভিনেতা, আমি জানতামই না। শ্রীলেখাদি-সিধুদার অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রিটাও দর্শকদের পছন্দ হবে।
তা ‘সোয়েটার’ বোনার অভিজ্ঞতা কেমন হল?
ইশা: অসাধারণ। ১৭ দিনের শিডিউলে দার্জিলিং ছিলাম। গোটা টিম হই-হই করে শুটিং করেছি। বাকি ম্যাজিক কাল পর্দায় দেখতে পাবেন দর্শকরা।
এখন কোন প্রজেক্টের কাজ চলছে?
ইশা: একটা ওয়েব সিরিজ। এরপর গরমের ছুটিতে ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ রিলিজ করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.