সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানি নাগরিক। এটাই তাঁর অপরাধ। আর এই অপরাধেই এ দেশে রাহাত ফতে আলি খানের গানের গলা রুদ্ধ করে দেওয়া উচিত। এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনি নিজেও একজন শিল্পী। আর একজন গায়ক হয়েও অন্য এক কিংবদন্তি গায়ককে নিয়ে এমন মন্তব্য করায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
রাহাত ফতে আলি খানের কণ্ঠ বলিউডে অত্যন্ত জনপ্রিয়। অক্ষয় কুমার থেকে সলমন খান, সব সুপারস্টারের ছবিতেই তাঁর গলার মাধুর্য দর্শকদের মন ছুঁয়েছে প্রতিবার। সেই পাক সংগীত শিল্পী সম্প্রতি ‘ওয়েলকাম টু নিউ ইয়র্ক’ ছবিতে ‘ইস্তেহার’ গানটি গেয়েছেন। আর তাতেই আপত্তি জানিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর মতে, রাহাত ফতে আলির পরিবর্তে অরিজিৎ সিংয়ের মতো কোনও শিল্পীকে দিয়ে গানটি গাওয়ানো উচিত। পাকিস্তানি গায়কের গান এ দেশে নিষিদ্ধ হওয়াই শ্রেয়। কিন্তু কেন এমন মন্তব্য করলেন তিনি? বাবুল জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ভারত-পাক সীমান্ত। লাগাতার সংঘর্ষ চলছে। যার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এমন পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য কোনও পাক গায়ককে এ দেশের ছবিতে সুযোগ করে দেওয়া কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। আর সেই কারণেই রাহাতের গান নিষিদ্ধ করার পক্ষে সওয়াল করছেন বিজেপি সাংসদ। কিন্তু রাহাত ফতে আলি খানের দোষ কী? বাবুলের সাফাই, জনপ্রিয় এই সংগীত শিল্পী একজন পাক নাগরিক। আর এটাই তাঁর অপরাধ।
রাহাতের গাওয়া ছবিটিতে করণ জোহর, দিলজিত দোসাঞ্জ, সোনাক্ষী সিনহা, বোমান ইরানি, রানা দাগ্গুবতির মতো অভিনেতারা রয়েছেন। এছাড়াও বিশেষ একটি গানে দেখা মিলবে সলমন খানেরও। ছবির নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে বাবুল বলেন, “নির্মাতাদের কাছে আমার অনুরোধ গানটি থেকে রাহাতের গলা সরিয়ে অন্য কোনও ভারতীয় গায়ককে দিয়ে গাওয়ানো হোক। জানি না কেন ‘দিল দিয়া গাল্লা’ (সলমন খানের ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ ছবির গান) গানটি আতিফ আসলামকে দিয়ে গাওয়ানো হয়েছে। তাঁর চেয়ে এ গান ঢের ভাল গাইতেন অরিজিৎ সিং। যেখানে খবরে দেখাচ্ছে পাকিস্তানি জঙ্গিদমনে কীভাবে শহিদ হচ্ছেন ভারতীয় জওয়ানরা, সেখানে এফএম স্টেশনগুলিতে বারবার বাজানো হচ্ছে ‘দিল দিয়া গাল্লা‘।” তবে পাক শিল্পীদের গান নিষিদ্ধ করা নিয়ে সরব হলেও আতিফ কিংবা রাহাতের প্রতি তাঁর যে ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশ নেই, সে কথাও জানিয়ে রাখলেন বাবুল। বলছেন, “আতিফ ও রাহাত দু’জনই খুব ভাল গায়ক। কিন্তু বুঝতে হবে যে পাক শিল্পীদের নিয়ে আমাদের কোনও বিরোধ নেই, সমস্যা পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নিয়ে। শহিদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পাক নাগরিকদের এ দেশ থেকে দূরে রাখতে হবে আমাদের। বলিউডের এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা উচিত। পাক শিল্পীদের বলিউড নিষিদ্ধ করলেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে।”
উল্লেখ্য এর আগে, পাঠানকোট, উরি হামলা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। যার জেরে পাক অভিনেতা-অভিনেত্রীদের এ দেশের ছবিতে অভিনয় নিষিদ্ধ করে পাক মুলুকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার গায়কদের জন্যও একই মতামত বাবুল সুপ্রিয়র। নিজে শিল্পী হয়েও স্রেফ দেশের পরিচয়ের জন্য অন্য এক শিল্পীর মতে বাবুলের এমন বার্তায় হতবাক অনেকেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.