এ বছর তিনিই বক্স অফিসের রাজা। তিন-তিনটে হিট। কখনও অন্ধ পিয়ানিস্ট। কখনও বিব্রত বয়ফ্রেন্ড। নায়ক হয়েও নায়ক নন। কফিহাউসের বিচারে বর্ষসেরা স্টার আয়ুষ্মান খুরানা। মুম্বইয়ে তাঁর সঙ্গে আড্ডায় অহনা ভট্টাচার্য৷
কনগ্র্যাটস আয়ুষ্মান। এ বছর ‘কফিহাউস’-এর ‘স্টার অফ দ্য ইয়ার’ আপনি।
অসংখ্য ধন্যবাদ। আই ফিল ভেরি হাম্বল্ড।
এ বছরটা আপনারই আয়ুষ্মান। ‘অন্ধাধুন’ আর ‘বধাই হো’ সুপার ডুপার হিট! এ ছাড়া ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’-ও দারুণ চলেছে। কেমন লাগছে?
খুব ভাল লাগছে! দর্শক ছবি পছন্দ করলে বুঝতে পারি যে আমার স্ক্রিপ্ট নির্বাচন ঠিকঠাক হচ্ছে।
স্ক্রিপ্ট নির্বাচনের সময় কী কী মাথায় রাখেন?
আমি প্রথমেই দেখি ছবির বিষয়বস্তু কেমন। একটু আউট অফ দ্য বক্স কন্টেন্ট বেছে নেওয়ার চেষ্টা করি। এ ছাড়া গল্পের মধ্যে একটু নতুনত্ব থাকবে। কয়েকটা মজাদার ওয়ান লাইনার ডায়লগ থাকবে। এবং সবচেয়ে বড় কথা হল যে, ছবিটা দর্শককে আনন্দ দেবে। আমি চাই আমার ছবি যেন দর্শকের মনে থেকে যায়। আর একটা কথা বলতে চাই। চিত্রনাট্য নির্বাচনের সময় আমি নিজেকে স্টার মনে করি না। নিজেকে দর্শকের আসনে বসাই, কারণ আমার কাছে স্ক্রিপ্ট সবচেয়ে ওপরে।
নাম নিচ্ছি না। কিন্তু এ বছর আমরা দেখেছি বেশ কিছু সুপারস্টারের বড় বাজেটের ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। আবার কোনও কোনও কম বাজেটের ছবিকে দর্শক কাছে টেনে নিয়েছে। এর কী কারণ?
আজকাল ছবির বিষয়বস্তুই শেষ কথা বলে। কন্টেন্ট ইজ দ্য কিং! দেখুন এখন দর্শকের কাছে অপশন অনেক বেশি, যেমন ডিজিটাল বা টেলিভিশন। এই পরিস্থিতিতে ইউনিক কিছু না দিতে পারলে দর্শক পয়সা খরচ করে হলে আসবে কেন? আমার মনে হয় প্রত্যেক অভিনেতার উচিত ছবির বিষয়বস্তুর ওপর জোর দেওয়া।
তাহলে কি এটা বলা যায় যে ছবিতে শুধুমাত্র বড় তারকাদের উপস্থিতি দর্শককে হলে টানতে পারছে না?
না তা নয়। ছবিতে বড় তারকা থাকলে এখনও বেশি সংখ্যক দর্শক হলে যায়। অন্তত প্রথম কিছু দিন মানুষ বড় তারকাদের নাম দেখেই হলে যান। তবে ছবিটাকে যদি দীর্ঘদিন ধরে চালাতে হয়, তা হলে অবশ্যই বিষয়বস্তু শেষ কথা বলবে।
একটু ব্যক্তিগত জোনে ঢুকছি। এ বছর আপনাকে নিয়ে তুমুল হইচই বলিউডে। আর এ বছরই আপনার স্ত্রী তাহিরার ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়েছে। উনি এখন কেমন আছেন?
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ওর চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার কথা। ও খুব সাহসের সঙ্গে, পজিটিভ মানসিকতা নিয়ে এই লড়াইটা করছে। আমি ওকে নিয়ে গর্বিত!
বাড়ির বাইরে এ রকম মাথা ঘোরানো স্টারডম, কিন্তু বাড়িতে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই। জীবনকে এভাবে ব্যালান্স করাটা তো নিশ্চয়ই সহজ নয় আয়ুষ্মান?
ইয়েস, ইট ইজ নট ইজি। কাজের দিক দিয়ে ইট গেভ মি আ গ্রেট হাই। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে একটা চিন্তার কারণ ক্যানসারের সঙ্গে আমাদের লড়াই। সত্যি, এই দু’ধরনের অনুভূতি একসঙ্গে সামলানো মোটেই সহজ না। তবে আজকে আমি আর তাহিরা দু’জনেই কিন্তু অনেকটা পরিণত হয়ে গিয়েছি।
তাহিরার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!
আজকের থার্টি ফার্স্ট নাইট কীভাবে পালন করবেন?
ওই দিনটা আমি শুধু আমার পরিবারকে সময় দিতে চাই। এখনও পর্যন্ত বাড়িতেই থাকার ইচ্ছে আছে। তবে যদি কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে করে তাহলে কাছেপিঠে কোথাও ঘুরে আসব। যেমন লোনাভলা।
লোনাভলা কেন?
আসলে এই মুহূর্তে তাহিরাকে নিয়ে মুম্বই থেকে বেশি দূরে যেতে চাইছি না। কারণ ওর এখনও দুটো কেমো নেওয়া বাকি আছে। দরকার পড়লে যাতে ঝট করে হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়া যায়, তাই আমরা দু’জন মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে মুম্বই থেকে বেশি দূর যাব না। দেখুন, মূল উদ্দেশ্য হল দু’জনে একসঙ্গে সময় কাটানো। আমি টানা এক মাস ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, তাই এখন অন্তত আট-দশ দিন বাড়িতে থাকতে চাই।
কিছু দিন আগেই আমাকে বলেছিলেন আপনি মনেপ্রাণে বাঙালি…
(হেসে) সেটা তো আমি এখনও বলি!
কলকাতায় কবে যাচ্ছেন?
আই লাভ কলকাতা! ওটা আমার খুব প্রিয় শহর জানেন! ওখানে ‘মেরি প্যারি বিন্দু’ ছবির শুটিং করেছিলাম। আমার প্রথম ছবি ‘ভিকি ডোনার’-এও আমার স্ত্রী বাঙালি ছিল। আমি বাঙালি খাবার খুব পছন্দ করি। বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি আর সংগীতকে সম্মান করি। আই হ্যাভ আ ডিপ কানেক্ট উইথ দ্য সিটি। খুব শিগগির কলকাতায় একটা কনসার্ট করার ইচ্ছে আছে।
থ্যাংক ইউ আয়ুষ্মান। কনগ্র্যাটস ওয়ান্স এগেন ফ্রম ‘কফিহাউস’।
থ্যাংকস ওয়ান্স এগেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.