আকাশ মিশ্র: ঠিক ১৩ বছর আগে গোটা বিশ্বে ঝড় তুলেছিল জেমস কেমরুনের ‘অবতার’। স্পেশ্য়াল এফেক্টেসের কারসাজিতে সে ছবি শুধু সিনেমা নয়, ছিল দুরন্ত এক অভিজ্ঞতা। সেই নস্ট্যালজিয়াকে সঙ্গে নিয়েই মুক্তি পেয়েছে ‘অবতার: দ্য় ওয়ে অফ ওয়াটার’ (Avatar: The Way of Water)। বক্স অফিসের হিসেব বলছে, ইতিমধ্যে অ্যাডভান্স বুকিংয়েই এই ছবি ব্যবসা করেছে ২২ কোটি টাকার! কিন্তু প্রথম ছবির মতোই কি চমক দিতে পারল অবতারের দ্বিতীয় পর্ব?
ছবিটি কেমন হল তা বলার আগে, একবার ফ্ল্যাশবাকে যাওয়া দরকার। কারণ, প্রথম পর্বে রেফারেন্স দ্বিতীয় পর্বে ভূরি ভূরি। তাই প্রথমটা ঝালিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। প্রথম পর্বে পৃথিবীর এক দল মানুষ প্যান্ডোরা নামের এক উপগ্রহ থেকে উবটোনিয়াম নামে এক বহুমূল্য খনিজ খনন করতে চায়। কিন্তু প্যান্ডোরার আদিবাসী নাভিরা সেটা কিছুতেই হতে দেবে না। প্যান্ডোরা বাঁচানোর যুদ্ধ প্রথম পর্বে দেখেছেন দর্শক। দ্বিতীয় পর্বে সে যুদ্ধ চলবে। তবে এবার যেন ব্যক্তিগত আক্রমণের মুখে জেক ও নেটিরা। তাঁদের সুখের সংসার নষ্ট করতে হাজির স্কাই পিপল। তবে তাঁদের বৃহত্তর উদ্দেশ্য প্য়ান্ডোরায় নতুন এক পৃথিবী তৈরি।
প্রথম পর্বের চিত্রনাট্য অনেক বেশি সরলরেখায় এগিয়ে ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে এসে জেমস যেন সাবপ্লটের সংখ্যা বাড়িয়ে দিলেন। গল্পে উঠে এল বিখ্যাত বাবার প্রত্যাশা পূরণের চাপ, ভাই-বোনের মধ্যে প্রতিযোগিতা, ঐতিহ্য বনাম আধুনিকতা, প্রকৃতির সঙ্গে গভীর যোগ, জীবন-মৃত্যুর বৃত্ত। বহু দৃশ্য়ের গঠনই পর পর বদলাতে থাকে। ফলে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলতে পারেন।
‘অবতার টু’ অবশ্যই ‘ভিজ্যুয়াল ট্রিট’। প্রথম ছবির মতো এই ছবিতেও গ্রাফিক্সের কামাল রয়েছে। এবার প্যান্ডোরার সমুদ্রের সঙ্গে পরিচয় হবে দর্শকদের। যা কিনা নজর কাড়া। তবে ছবির থেকে নতুন প্রাপ্তি বলে আর কিছু নেই। হয়তো, এই ১৩ বছরের ব্যবধানে দর্শক আরও অনেক জটিল গল্প, দারুণ গ্রাফিক্সের সঙ্গে পরিচিত হয়ে গিয়েছে। তাই ‘অবতার টু’ নস্ট্যালজিয়ার মোড়ক ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রকৃতি, বিজ্ঞান ও মানুষের গল্পকে জেক ও নেটির ব্য়ক্তিগত সম্পর্কের সঙ্গে যুক্ত না করে অন্য কোনও পথ নিতে পারতেন জেমস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.