Advertisement
Advertisement

কতটা ভয় দেখাল অনুষ্কার ‘পরি’? ছবির গল্প হাড় হিম করল কি?

'পরি'তে ভয়ংকর আর সুন্দরের সহাবস্থান তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো।

Anushka Sharma send chill down critics spine in Pari
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 2, 2018 5:01 pm
  • Updated:August 7, 2021 6:09 pm  

শম্পালী মৌলিক: ‘পরি’ শুধু আকাশে নয়, খাটের তলাতেও থাকতে পারে! এবং যখন-তখন তার সঙ্গে মোলাকাতও হয়ে যেতে পারে। এরপর থেকে বাড়ি ফিরে ফাঁকা ঘরে ঢুকে বিছানার নিচেটা চেক করে তবে বসা। ‘পরি‘ দেখার পর এটাই প্রথম প্রতিক্রিয়া। স্কিন শো ছাড়াও যে এমন বিশ্বাসযোগ্যভাবে হরর ফিল্ম বানানো যায় প্রযোজক অনুষ্কা শর্মা এবং পরিচালক প্রসিত রায় মিলে তা করে দেখালেন।

‘পরি’ সত্যিই রূপকথা নয়। কিন্তু ভয়ংকর আর সুন্দরের সহাবস্থান তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। অনুষ্কা শর্মা ছাড়া এই চরিত্রে হয়তো আর কাউকে এত মানাত না। ‘এনএইচ টেন’, ‘ফিল্লৌরি’র পর ‘পরি’তে এসে তিনি স্তব্ধবাক করে দিলেন দর্শককে। এ ছবি দেখলে বিরাট কোহলিরও হাড় হিম হয়ে যাবে। তবে পরি শুধুমাত্র একটি হরর ফিল্ম নয়। এর অনেকগুলো স্তর আছে। যে কারণে গল্প বলার চলনটা ভাল লাগল।

Advertisement

Pari-Param-Web

[বেশ ভয় পেয়েছি, অনুষ্কার ‘পরি’ দেখে প্রথম প্রতিক্রিয়া বিরাটের]

এটি প্রসিত রায়ের প্রথম ফিল্ম, দেখে কে বলবে! প্রসিত এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মিলে গল্প লিখেছেন। ইরোটিকার স্পর্শ ছাড়া অলৌকিক, শয়তানের উপস্থিতি, অশুভ আত্মা, রক্তপাত-মৃত্যু এবং প্রেম ঈর্ষা এত সুন্দরভাবে মেলানো হয়েছে, বলিউড ফিল্মে যা প্রায় দেখাই যায় না। সেখানেই পরির টিমে এতজন বাঙালির নাম দেখে মনটা ভরে গেল। পরিচালক ছাড়া ক্যামেরার দায়িত্বেও বাঙালি, যিষ্ণু ভট্টাচার্য। দুর্দান্ত প্রোডাকশন ডিজাইন (মিনা আগরওয়াল)। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর (কেতন সাধ) আর অনীশ জনের দারুণ সাউন্ড ডিজাইন ছাড়া এমন গা ছমছমে টানটান ছবি হত না। পরির টান এমনই যে সিট ছেড়ে নড়া যায় না। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে। ছবিতে  চমৎকার সুর দিয়েছেন অনুপম রায়।

pARI-tRAILER

ছবির গল্প বেশি লিখব না। ওটা হলে গিয়ে দেখাই ভাল। কাঠামোটা কিছুটা জানানো যাক। অর্ণব (অভিনয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) শান্ত ভদ্র ইন্ট্রোভার্ট ছেলে। কলকাতায় একা থাকে, অফিস করে। তার বিয়ে ঠিক হয়েছে পিয়ালির সঙ্গে (ঋতাভরী চক্রবর্তী)। ওদের প্রথম দেখা হয় বাড়ির ছাদে চা খেতে খেতে। সম্বন্ধ করে বিয়ের ক্ষেত্রে যেমন হয়। মেয়ে দেখে ফেরার পথে বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় একটা দুর্ঘটনা ঘটে। অর্ণবের বাবার হাতে ছিল গাড়ির স্টিয়ারিং। তার মা-ও (মিঠু চক্রবর্তী) সঙ্গে ছিল। এই ঘটনাচক্রে অর্ণবের সঙ্গে দেখা হয় রুকসানার (অনুষ্কা শর্মা)। এক পরিত্যক্ত কুঁড়ে ঘরে একাকী তার বাস। আপাদমস্তক ভদ্রলোক অর্ণব একলা অসহায় প্রায় পাগলিনীর মতো দেখতে মেয়েটাকে ছেড়ে আসতে পারে না। একসময় তাকে সঙ্গে নিয়ে আসে নিজের মা-বাবার অজান্তেই। কারণ অর্ণবের তো বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। ছবি এগোলেই বোঝা যায় রুকসানার সঙ্গে অলৌকিকের যোগ আছে। কিন্তু এ মেয়ে কি শয়তান? ছবির শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্নটা জিইয়ে রাখতে পেরেছেন পরিচালক প্রসিত। এখানেই তাঁর কৃতিত্ব। ভূতে বিশ্বাস করুন বা না করুন, এমন জিনপরিকে দেখলে ভয়-ভাললাগা দুই-ই জাগতে বাধ্য। যে কারণে ছোটখাটো অসঙ্গতি উপেক্ষা করাই যায়। কেনই বা অজানা-অচেনা মেয়েকে কুঁড়ে ঘর থেকে তুলে এনে পরিচ্ছন্ন বিছানায় জায়গা দেবে কেউ? এরকম নানা প্রশ্ন জাগে, কিন্তু কাহিনির মোচড়ে আর গল্পের মানবিক টানে সেটা সয়েও যায়। এইখানে অনুষ্কা আর পরমব্রতর রসায়ন অনবদ্য। হিন্দি ছবিতে পরমব্রত কি একটু বেশিই ভাল করছেন! একা ঘরে অনুষ্কার নখ কাটা, নতুন জামা পরা , বোরোলিন লাগানো,  ঘরের পর্দা ওড়া, নেলকাটারের শব্দ, কার্টুন চ্যানেলের মিষ্টি আওয়াজ, রক্তলাল হাত দু’খানি অর্ণবের হাতে তুলে দেওয়া বহুদিন মনে থেকে যাবে। যে কারণে তার আর অর্ণবের প্রেমটা জেগে থাকে ছবি জুড়ে নীলচে মায়ার মতো, যেখানে আদরের চেয়ে কেয়ারের ভাগ বেশি। আতঙ্ক তাহলে কোথায়? ভয় তো প্রতি মুহূর্তেই! রুকসানার এক আঁধার-অতীত আছে। আছে প্রফেসর কাসিম আলি (রজত কাপুর) যে রুকসানাকে খুঁজছে। কিন্তু কেন? ছবিতে দেখাই ভাল।

[পত্রিকার প্রচ্ছদে প্রকাশ্যে স্তন্যদান, অশালীনতার অভিযোগে মামলার মুখে অভিনেত্রী]

রজত কাপুরকে নিখুঁত লেগেছে প্রফেসরের ভূমিকায়। ঋতাভরীকে মিষ্টি দেখিয়েছে। ছবির দ্বিতীয়ার্ধে তাঁর পারফরম্যান্স বেশ ভাল। আর বলতেই হবে প্রস্থেটিক মেক-আপ এবং আলোর ভূমিকার কথা। নয়তো ‘পরি‘ এমন ভয়ংকর সুন্দর হত না। এ ছবির আশা এবং শঙ্কা দুইই অনুষ্কা। দোলের পরে তিনি পরি হয়ে আরও একবার রাঙিয়ে দিয়ে গেলেন দর্শককে। কিন্তু এ রং রক্তলাল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement