সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীপিকার ‘পদ্মাবত’-এর পর এবার রাজস্থানে কট্টরপন্থীদের নিশানায় পড়তে চলেছে কঙ্গনা রানাউতের ‘মণিকর্ণিকা দ্য ক্যুইন অফ ঝাঁসি’। এখানেও সেই ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ। তবে অভিযোগকারীরা বদলে গিয়েছে। কর্ণি সেনার জায়গায় এবার বিরোধিতার আসরে নেমেছে রাজস্থানের ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের সংগঠন সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভা। সংগঠনের তরফে অভিযোগ, ছবিতে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈকে অসম্মান করা হয়েছে। তাঁর কৃতিত্বকে খাটো করে দেখানো হয়েছে। মূলত বিদেশি লেখকের বই থেকেই তথ্য সংগ্রহ করে তৈরি হয়েছে চিত্রনাট্য। ছবিতে লক্ষ্মীবাঈয়ের সঙ্গে ইংরেজ পুরুষের প্রেমের সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। যদিও বাস্তবে এমন কোনও ঘটনাই নেই। এককথায় ‘মণিকর্ণিকা দ্য ক্যুইন অফ ঝাঁসি’ ছবিতে রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের সম্মানহানি করা হয়েছে। ‘পদ্মাবত’-এর আদলেই ‘মণিকর্ণিকা দ্য ক্যুইন অফ ঝাঁসি’র জন্য বিরোধিতার লেখচিত্র তৈরি হচ্ছে। রাজ্যসরকারের কাছে ছবির শুটিং বন্ধের আবেদনও করা হয়েছে। যদি আবেদন অগ্রাহ্য করে শুটিং হয়, তাহলে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে সরকার দায়বদ্ধ থাকবে। এমন হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভার তরফে।
এনিয়ে সোমবার ছবির প্রযোজক কমল জৈনকে সতর্ক করেও একটি চিঠি দিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি সুরেশ মিশ্র। চিঠিতে ছবির চিত্রনাট্যকারের নাম জানতে চাওয়া হয়েছে। চিত্রনাট্য তৈরিতে কোন ঐতিহাসিকের সাহায্য নেওয়া হয়েছে ? যদি কোনও গানের দৃশ্য থাকে, তবে তা ঠিক কেমন? সবটাই বিশদে জানতে চাওয়া হয়েছে। যদিও সুরেশ মিশ্রের চিঠির প্রত্যুত্তর দেননি কমল জৈন।
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে ছবির অন্যতম প্রযোজক কমল জৈন জানিয়েছেন, ‘‘মণিকর্ণিকা’য় রানি লক্ষ্মীবাঈকে সম্মানীয়ভাবেই দেখানো হয়েছে। ছবির চিত্রনাট্য তৈরির আগে ঝাঁসির ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। তারপরই লেখা হয়েছে চিত্রনাট্য। ছবিতে লক্ষ্মীবাঈয়ের কোনওরকম প্রেমের সম্পর্কের চিত্রায়ণ হয়নি। কোনও রকম ইতিহাসের বিকৃতি নেই ছবিতে। তাছাড়া রানি লক্ষ্মীবাঈ আমাদের দেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী। সম্মানীয় দেশনেতাদের একজন। তিনি সাহসিকতার প্রতীক। তাঁকে নিয়ে ছবি তৈরির প্রসঙ্গে বিকৃতির অভিযোগ উঠলে খারাপ তো লাগবেই। একেই কি স্বাধীনতা বলে? আমরা রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের জীবনের সত্যি ঘটনাই ছবিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এরপরও যদি কেউ ছবির চিত্রনাট্য দেখতে চান, তাতে আমাদের কোনওরকম আপত্তি নেই। আমরা চিত্রনাট্য দেখাতে রাজি আছি। আমাদের গোপনীয়তার কিছু নেই। এই ছবি তৈরি করতে পেরে গর্ব অনুভব করছি। এই ছবির মাধ্যমেই দেশের অন্যতম নেত্রীকে বিশ্বের সামনে উপস্থিত করতে চাই। এই ছবি আসলে রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য স্বরূপ।’
তবে ব্রাহ্মণ সংগঠনের চিঠিতে বলা হয়েছে, রানি লক্ষ্মীবাঈ ব্রাহ্মণ ছিলেন। তাই তাঁকে নিয়ে ছবি তৈরি হলে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের আবেগ কাজ করবে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। রানি লক্ষ্মীবাঈ প্রেম করতেন, এটা কেউ কল্পনাতেও আনতে পারবে না। তরুণী বয়সেই ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ করে প্রাণ দিয়েছেন। যদি তাঁর জীবন নিয়ে ছবিই হয়, তাহলে তা আত্মজীবনীমূলকই হোক। বাণিজ্যিক সাফল্যকে মাথায় রেখে যেন ইতিহাসকে বিকৃত করা না হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.