‘ভগবদ্গীতা’ এবং ভরত মুনি-রচিত ‘নাট্যশাস্ত্র’-কে ইউনেস্কো লিপিবদ্ধ করেছে ‘মেমরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ। এ-সংবাদ ভারতের গর্ব।
খুব বড় খবর নিঃসন্দেহে। প্রতি ভারতীয়র জন্য গর্বের সংবাদ তো বটেই। অনেক আগেই হয়তো আসা উচিত ছিল এই আন্তর্জাতিক সম্মান ও স্বীকৃতি। যাই হোক, বেটার লেট দ্যান নেভার। দেরি হলেও, এসেছে তো! এই বর্ণময় সুসংবাদটি প্রথমে দেশবাসীকে, এবং সারা বিশ্বকে জানান নিজের এক্স-হ্যান্ডেল থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত।
খবরটা হল: মহাভারতের মহাযুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে অর্জুনের উদ্দেশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উচ্চারিত ‘ভগবদ্গীতা’ এবং বৈদিক যুগে ভরত মুনি-রচিত ‘নাট্যশাস্ত্র’-কে ইউনেস্কো-র ‘মেমরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এইভাবে ইউনেস্কো আরও একবার ভারতের সুপ্রাচীন দার্শনিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি দিল। এবং স্বীকার করল প্রাচীন ভারতের প্রজ্ঞা, শৈল্পিকবোধ ও জীবনদর্শনের যথার্থতা আজও অক্ষুণ্ণ। আজও পুরনো হয়নি ভারতের প্রাচীন প্রত্যয় ও অন্বেষসরণি।
ইউনেস্কো-র ‘মেমরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এর উদ্দেশ্য হল, সারা পৃথিবীর সুপ্রাচীন ঐতিহাসিক লেখ্য, দর্শন ও সংস্কৃতির বইগুলিকে, তাদের আলোচিত বিষয়কে স্বীকৃতি ও সম্মান জানানো। রাষ্ট্রপুঞ্জর নথিতে স্থান পায় শুধুমাত্র সেইসব বই, যেগুলি বহু প্রজন্ম ধরে সমাজকে প্রভাবিত করে আসছে, যেগুলি আজও কালজীর্ণ হয়নি। ইতিমধে্যই, রাষ্ট্রপুঞ্জর রেজিস্টারে ভারতের আরও ১২টি প্রাচীন গ্রন্থ লিপিবদ্ধ হয়েছে। সব মিলিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জর রেজিস্টারে ভারতের লিপিবদ্ধ গ্রন্থর সংখ্যা ১৪। প্রতিটি গ্রন্থ মিশে আছে যুগযুগান্তরের ভারতীয় দর্শন ও প্রত্যয় ও যাপনের সঙ্গে এবং আজও তারা প্রবহমান ভারতের সংস্কৃতি ও কৃষ্টির স্রোতে।
ভারতীয় প্রাচীন দর্শন ও সংস্কৃতির এই আন্তর্জাতিক খবর পেয়ে এক্স-হ্যান্ডেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ইউনেস্কো-র এই সম্মান প্রতিটি ভারতীয়র জন্য গর্বের মুহূর্ত। এই মর্যাদা ভারতের চিরন্তন প্রজ্ঞা এবং সুদূরপ্রসারী সংস্কৃতির প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। শ্রীকৃষ্ণ উচ্চারিত গীতা ও ভরত মুনি-রচিত নাট্যশাস্ত্র শতাব্দীর পর শতাব্দী আমাদের চেতনা ও সভ্যতাকে বিকশিত করেছে।
গীতা যেমন তৈরি করেছে ভারতের আধ্যাত্মিক জীবন, তৈরি করেছে ভারতীয় জীবনের আদর্শ ও উদ্দেশ্য, ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতি এবং ধর্মীয়চর্চার আবহমান চরিত্র ও মান্যতা, তেমনই ভারতের শিল্পবোধ, কান্তিরোধ, রসবোধ এবং অভিনয় ও নৃত্য কৌশলের নানা দিক নিয়েও আলোচনা আছে ভরত মুনির নাট্যশাস্ত্রে, যা হাজার-হাজার বছর পেরিয়ে আজও নৃত্য, সংগীত, অভিনয় এবং শৈল্পিক পরিবেশনার বিচিত্র স্তরকে প্রভাবিত করে। ভারতের নাট্যশাস্ত্রর রসতত্ত্ব কালজয়ী। ভরত মুনিই ভারতকে শিল্প নিয়ে ভাবতে শেখান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.