Advertisement
Advertisement

Breaking News

Taliban

শাসনের চাবুক

হিজাব পরার ধর্মীয় হারাকিরি নিয়ে সরব হয়েছিল নানা মহল।

The supression of human values and the wrath of fanatics | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:July 27, 2023 11:15 am
  • Updated:July 27, 2023 11:15 am  

ইরানে নিষিদ্ধ হল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ‌াল, আফগানিস্তানে বন্ধ হচ্ছে সব বিউটি সালোঁ। এই নিদানগুলি মানবমূল্যেরই অবমাননা।

জাফর পানাহি-র সাম্প্রতিকতম ‘নো বিয়ারস’ ছবিজুড়ে নানা চরিত্র, নানা আখ‌্যান। কিন্তু একটি মিথ এবং তার ভাঙচুরই এই ছবির নামের নেপথ্যে। ইরানের প্রত্যন্ত প্রদেশের একটি গ্রামে সংস্কার, ঠুনকো সামাজিক সম্মান ও তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা হিংসার ছবি একদিকে, অন‌্যদিকে রাষ্ট্র তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এক পরিচালককে, আবার দু’টি চরিত্রের মধ‌্য দিয়ে জীবন্ত হয়ে ওঠা চলতি শতাব্দীর শরণার্থী সংকট ও পরিচয়ের রাজনীতি ঘিরে সংশয়- এসবের মাঝেই একটি ছোট্ট মিথ এই ছবির প্রায় প্রধান কাহিনি-সূত্র ধরে ফেলে। তা হল, গ্রামের একপ্রান্তে ভালুকের ভয় রয়েছে, সেখানে কেউ যেতে চায় না।

Advertisement

কিন্তু সেখানে আসলেই ভালুক নেই, নেই আতঙ্কের কোনও আদত কারণ। রাষ্ট্র ও সম্প্রদায়ের তৈরি করা ভয় যে আসলে অমূলক, অথচ সেই ভয়ের দাসত্ব আমরা করেই চলি; তা-ই ছিল পানাহির আসল বক্তব‌্য। এই ছবির সারদর্শনকে যেন আবারও চিনে নেওয়া গেল ইরান এবং আফগানিস্তানের দু’টি সাম্প্রতিক ঘটনায়।

‘ইরানিয়ান শর্ট ফিল্ম অ‌্যাসোসিয়েশন’ একটি শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ‌ালের ছবি প্রকাশ করেছিল সম্প্রতি, যেখানে ১৯৮২ সালের ‘দ‌্য ডেথ অফ ইয়াজগার্দ’ ছবির একটি স্থিরচিত্রে দেখা যাচ্ছে, অভিনেত্রী সুজান তসলিমিকে হিজাব ছাড়া। এতেই সেদেশের সরকারের গোসা হয়েছে। তারা ফেস্টিভ‌ালটিকেই ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করে দিয়েছে। আবার আফগানিস্তানের তালিবান শাসকরা নিদান হেঁকেছে, একমাসের মধ্যে আফগানিস্তানের যাবতীয় বিউটি সালোঁ যেন বন্ধ হয়। এই নিয়ে আপত্তি তুলেছিল ইউনাইটেড নেশন্‌স। প্রতিবাদ করেছিল বিশ্বব‌্যাপী মানবাধিকার সংগঠনগুলিও। লাভ হয়নি। মজার বিষয়, দুই ক্ষেত্রেই রয়েছে ধর্মের এক্তিয়ার টপকে যাওয়ার ভীতি।

[আরও পড়ুন: শরণার্থীদের আবিশ্ব ভিড়ে ঘর মানে কি শুধুই চার দেওয়াল?]

ইরান রয়েছে ইরানেই, এটি আরও একবার প্রমাণিত হল এই ঘটনায়। কত দিন গিয়েছে মাহশা আমিনি-র ঘটনার পর? বছরও ঘোরেনি। বিশ্বজু়ড়ে আলোড়ন শুরু হয়েছিল। আন্দোলনে কেঁপে উঠেছিল ইরান। হিজাব পরার ধর্মীয় হারাকিরি নিয়ে সরব হয়েছিল নানা মহল। এত কিছুর পরেও একটি শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ‌াল ‘নিষিদ্ধ’ হল, সেই হিজাবেরই দোহাই দিয়ে। সিঁদুরে মেঘ দেখিয়ে আফগানিস্তানে যখন তালিবানরা এসেছিল, তখন তারা অভয় দিয়েছিল, তারা সাধারণ জনজীবনে আর কোনও ব‌্যাঘাত ঘটাবে না। মেয়েদের জনপরিসরে আসতে না দেওয়া থেকে শুরু করে বিউটি সালোঁ বন্ধর নামে হাজার হাজার মহিলার চাকরি কেড়ে নেওয়া- কথার খেলাপ করে তারা বোঝাল, তালিবানি প্রবণতা বদলানোর নয়। ধর্মের অবমাননার বিষয়টা এক্ষেত্রে আসলে পানাহির ছবিতে ভালুকের ভীতির মতো, যা নিরালম্ব বায়ুভূত। আর এর নাম করে মানবমূল‌্যর অবমাননা চলছে তো চলছেই। শাসনের থাবাই এখানে আসল খেলোয়াড়, মানুষ এখানে মাঠের বাইরের দর্শক, যাদের সব ফলাফলই মেনে নিতে হবে শেষমেশ। গ‌্যালারি থেকে খানিক চিৎকার তারা করতে পারে বড়জোর।

[আরও পড়ুন: কুনোয় একের পর এক চিতার মৃত্যু, দায় কার?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement