Advertisement
Advertisement

‘থ্যাঙ্কলেস জব’, তাও ‘থ্যাঙ্কস’ আলমেইদা

পারমাণবিক শক্তির চাইতে আজও শব্দের জোরই বেশি

Thanks for the Thankless job Almeida
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 22, 2016 3:56 pm
  • Updated:October 22, 2016 9:41 pm  

সাংবাদিকতা নাকি ‘থ্যাঙ্কলেস জব’৷ তবুও একটিবার ‘থ্যাঙ্কস’ বলতে চাই সিরিল আলমেইদাকে৷একপেশে একনায়কতন্ত্রের কঙ্কালসার চেহারাকে কলমের হ্যাঁচকা টানে সবার সামনে নিয়ে আসতে পেরেছেন যিনি৷ সুপর্ণা মজুমদার৷  

“কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন”- স্বয়ং ভগবান বলে গিয়েছেন ফলের আশা না করতে৷ কিন্তু, ‘তুচ্ছ’ মানুষের মনে ফলের আশা থেকেই যায়৷ কারণ আশাতেই বাঁচে ‘চাষা’৷ স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে এই আশার ভিন্ন ভিন্ন রূপ৷ কখনও তা পূরণ হয়, কখনও হয় না৷ তবুও আশা নামক বস্তুটি মর্ত্যবাসীর জীবনের পাথেয়৷ কারণ এর থেকেই আসে ইচ্ছাপূরণের তাগিদ৷ আর এই ইচ্ছাপূরণের তাগিদই সাধারণ মানুষকে অসাধারণ করে তোলে৷

Advertisement

সাধারণ থেকে অসাধারণ হওয়ার তাগিদ সব মানুষের মধ্যেই রয়েছে৷ ‘ওঁদের’ মধ্যেও রয়েছে, ‘আমাদের’ মধ্যেও রয়েছে৷ ‘আমরা’- গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ৷ ‘আমরা’ সেই প্রাণী, রীতি-নীতি-দুর্নীতি-রাজনীতির তোয়াক্কা না করে যাঁরা খবর পরিবেশন করি সচেতন মানুষের চোখের নাগালে৷ ফল? তাকে ভবিষ্যতের জন্য তোলা রেখে বর্তমানের খবর দিই ‘আমরা’৷

এই ‘আমরা’র দলে সম্প্রতি নজর কেড়েছেন এক পাক সাংবাদিক৷ সিরিল আলমেইদা৷ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকলেও একই পেশায় যুক্ত থেকে এই মানুষটাকে কুর্নিশ জানাতে বাধ্য হচ্ছি৷ যিনি পাকিস্তানের একপেশে একনায়কতন্ত্রের কঙ্কালসার চেহারাকে কলমের হ্যাঁচকা টানে সবার সামনে নিয়ে আসতে পেরেছেন৷

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের কাছে কোণঠাসা হয়েও মাথা নোয়াতে নারাজ যে পাকিস্তান সরকার, তাকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে এই সামান্য সাংবাদিক৷ নওয়াজ শরিফ সরকারকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই তুলতে হয়েছে আলমেইদার বিদেশযাত্রার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা৷ জয়ের আশা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আইনের ছাত্রের ছিল কি না জানা নেই৷ যেটা জানা আছে তা হল সাফল্য পাওয়ার পর তাঁর প্রতিক্রিয়া৷ পুরো ঘটনার পর সিরিলকে নিজের সম্পর্কে লিখতে বলেছিলেন তাঁর সংবাদপত্রের সম্পাদক৷ কলম ধরেই যুদ্ধজয়ের একক সেনানী লিখেছিলেন, “হ্যাঁ, সাধারণত্বের বাইরে কিছু করলে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন একটু বেশিই বেড়ে যায়৷ হ্যাঁ, নিজের সম্পর্কে চিন্তা হয় বইকি – এই পরিস্থিতিতে তা না হওয়াটা বোকামির লক্ষ্মণ৷ কিন্তু, মনের কোণে কোনওভাবে একটা আশা জিইয়ে থাকে৷ এসবই অতিক্রান্ত হয়ে যাবে, আপনি কিন্তু রয়ে যাবেন, সাহসই আপনাকে টিকিয়ে রাখবে৷”

এই সাহসের বাহবা শুধু সিরিল আলমেইদারই যে প্রাপ্য তা নয়৷ এই ‘শাবাশ’ শব্দের যোগ্য তাঁর সংবাদপত্রও৷ পাক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে যেই সংস্থা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নিজেদের সাংবাদিকের পাশে থেকে গিয়েছেন৷ প্রথম শ্রেণির সংবাদপত্র হয়েও অন্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতা করেনি৷ ফলের তোয়াক্কা না করেই পুরো লড়াইটা লড়ে গিয়েছে শব্দের জোরে৷ প্রমাণ করেছেন শব্দের জোর আজও যে কোনও পারমাণবিক বোমার চাইতেও শক্তিশালী৷

মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই ঘটে গিয়েছে পুরো ঘটনা৷ অতীতকে পিছনে ফেলে আবার নিজের কাজে  লেগে পড়েছেন সিরিল আলমেইদা৷ আমরাও হয়তো ভুলে যাব৷ কখনও অতীত দর্শনের প্রয়োজন পড়লে ‘গুগল’-এর সাহায্য নেব৷ কিন্তু, ভুলে যাওয়ার আগে একটা শব্দ অবশ্যই বলে রাখা প্রয়োজন৷ জানি ‘থ্যাঙ্কলেস জব’, তবুও ‘থ্যাঙ্কস’ আলমেইদা৷ নিজের কাজটাকে আরও একবার ভালবাসতে শেখানোর জন্য৷

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement