অনুবাদক ‘ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী’– বলেছিলেন নবনীতা দেবসেন! কথাটি মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সম্বন্ধেও খাটে। ‘ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী’ হয়েই তিনি ভাষার বিভেদ মুছে দিতে চেয়েছেন। প্রায় একা হাতে অজস্র তরজমায় ভরিয়ে দিয়েছেন বাংলা ভাষার বাতায়ন। লিখছেন অভিক মজুমদার।
নাটকের নাম ‘মুক্তধারা’। সংলাপে মোক্ষম একটা কথা বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। মাঝে মাঝেই একলা বসে নিচু গলায় কথাটা বলি নিজেকে। ‘জগৎটা বাণীময় রে, তার যে দিকটাতে শোনা বন্ধ করবি সেই দিক থেকেই মৃত্যুবাণ আসবে।’ যে কোনও উচ্চারণই একজন বলে, আর একজন শোনে। শোনা-বলার এই বিপুল দুনিয়ায় একজন অন্যের হৃৎস্পন্দনের তালে নেচে উঠতে পারে– একস্বর থেকে বহুস্বরে– এক গায়ক থেকে কোরাসে– কত প্রবাহে-প্রশাখায় ছড়িয়ে যায় স্বর, চিন্তা, স্বপ্ন, বেদনা, উল্লাস, সন্তাপ। সব ভাষা তো আমরা জানি না, তখন আবির্ভূত হন দোভাষী। বেঁধে দেন সেতু। বিরহের অন্তরালে সে গড়ে দেয় সংযোগ। হরিদ্বার আর হৃষীকেশের মাঝে যেন লছমনঝুলা। ওপার থেকে এপারে, এপার থেকে ওপারে .অনায়াসে চলে যাতায়াত, হাসি-কান্নার লেনদেন। একজনের সর্বমান্য ক্ষমতাদম্ভের অনিয়ন্ত্রিত চিৎকার তখন টেকে না। যার নাম স্বৈরতন্ত্র। যার নাম প্রতাপান্ধ আদেশ আর হুকুম। শ্বাসরোধকারী সেসব সময়ে আবির্ভূত হন অনুবাদক। মনে করিয়ে দেন– তরজমা আসলে নানা ভাষা, নানা মত, নানা সংস্কৃতি, নানা ধর্মবোধ আর অজস্র রঙের নিশানের পারস্পরিক সংলাপ। হই-হুল্লোড়। মৈত্রী। বহুবচনের আবির আর অভ্র। ‘এখন সময় হলো। ঐ দ্যাখো অতীতের নক্ষত্রের আলো–/ কেউ বাদ যাবে না উৎসবে: হলদে বা বাদামি, কিংবা শাদা, কালো–/ কেউ নয়। ঝাপসা না স্রোত; দ্যাখো ঐ ভাসে অতীত, জাহাজ–/ দীপ্ত শুকতারার আলোয়/ সকলেরই ডাক এলো আজ।…/ কেউ বাদ যাবে না এখানে।/ কুলি কিংবা আড়কাঠি, শাদা-কালো, প্রভু-ক্রীতদাস।…/ সমবেত সমীচীন নাচ হবে আজ।’
কবিতার এই পঙ্ক্তিগুলি লিখেছিলেন কবি-অনুবাদক-কথাকার মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। এডওয়ার্ড কামাও ব্রাথওয়েট আর ডেরেক ওয়ালকটের কবিতা অনুবাদগ্রন্থের উপক্রমণিকায়। কারা এই ব্রাথওয়েট আর ওয়ালকট? দু’জনেরই জন্ম ১৯৩০ সালে। এঁরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই প্রধান কবি। এই কবিতার তরজমাগুলি পড়তে পড়তে আমি আমার গলির ঘরে শুনতে পাই বার্বাডোজ আর সেন্ট লুসিয়ার সমুদ্রগর্জন, বাতাসের ঝোড়ো দাপাদাপির শব্দ! হাসি পায় নিজেদের অজ্ঞতাতেও। এই যে কবি ডেরেক ওয়ালকট, তিনি ১৯৯২ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। আমরা সাধারণভাবে জানি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এক ক্রিকেটের দেশ বলে। সেই দেশ সম্পর্কে সীমিত ধারণায় পড়তে বা বুঝতে বেশ কঠিন লাগতে পারে ব্রাথওয়েট আর ওয়ালকটের কবিতা। ফলে, ‘স্তব্ধতার সংস্কৃতি’ বইটির (১৯৯৭) দীর্ঘ ভূমিকায় মানবেন্দ্র আমাদের শুনিয়ে দেন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ইতিহাস-ভূগোল আর উপনিবেশিত বহুস্তরিক বাস্তবতার সাতকাহন। লেখেন, ‘আপনি কি জানেন না এই কালা আদমিগুলোর মধে্য নৃতে্যর সাবলীল সহজাত ছন্দ আছে, আছে পারকাশন বাদ্যযন্ত্রের তাল, স্যাক্সোফোনের মোচড় দেওয়া সুর।… ক্যারিবিয়ানে কিন্তু শুধু ব্রিটিশ উপনিবেশই ছিল না, ছিল ফরাসি, ওলন্দাজ, এস্পানিওল উপনিবেশ। ক্যারিবিয়ানের একতীরে তো দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তার– গায়ানা, সুরিনাম, কোলোম্বিয়া তো ক্যারিবিয়ানের উপকূলে। আছে দ্বিখণ্ড দ্বীপ এইতি (হাইতি),… আছে কুবা, আছে মার্তিনিক…।’
এই বিচিত্র সমন্বয়ী সংস্কৃতি থেকে উঠে আসে ওয়ালকটের কবিতায় ক্রিকেট, ক্যালিপ্সো, প্রাণখোলা হাসি, রোদ্দুর, সমুদ্রঢেউ আর রাম-সমেত রমণীয় রাত্রিকে ছুঁয়েও তার অকল্পনীয় বিস্তার আত্ম-আবিষ্কারে, আত্ম-উদ্ঘাটনে। পথে-বন্দরে, মানুষের উৎসবে উদ্যাপনে। উল্লাসে-বিষাদে। তঁার নতুন ‘ওডিসি’। উপনিবেশের মানুষ তথা জনগোষ্ঠীর ‘দেশ’-এ ফেরার বৃত্তান্ত। দেশ মানে আত্মশিকড়। মাটি। সংস্কৃতি। ভাষা। জীবনচর্যা। ইতিহাস।
২
প্রায়শই মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বলতেন, অনুবাদক বা তরজমাকারীকে জানতে হবে, কবি-লেখকের ইতিহাস-ভূগোল। নইলে তঁাকে ধরা-ই যাবে না। বিশ্বমানচিত্র খুলে অনেক সময় তিনি দাগিয়ে দাগিয়ে বোঝাতেন দেশকাল, বৈশিষ্ট্য আর লেখকের অভিজ্ঞতার নিজস্ব নানা চিহ্ন। বলেছিলেন, অনুবাদের পাঠককেও এইভাবে প্রশিক্ষিত হতে হবে। বলতেন, আফ্রিকার লেখক আর পূর্ব ইউরোপের লেখক, লাতিন আমেরিকার কবি আর প্যালেস্তাইনের কবি কোন পরিপ্রেক্ষিত থেকে সৃষ্টির প্রবাহ তুলে আনেন, তার চাবিকাঠি লুকনো থাকে আলাদা-আলাদা বাস্তবতায়। সেই বাস্তবতা নির্মিত হয় ইতিহাস-ভূগোল আর সমাজ প্রতিবেশের মাধ্যমে। হয়তো সেজন্যই তিনি কবিতা-কথাসাহিত্য বা নাটকের ভূমিকা-উপক্রমণিকা-পরিশিষ্ট-ভূমিকার বদলে– উত্তরকথন, নানা শিরোনামে কবি-লেখকদের প্রেক্ষিত তথা স্থান-কাল অনুযায়ী পরিবেশন করেছেন পাঠকের দরবারে। ঢেউয়ের-পর-ঢেউ এসে তটভূমিতে দঁাড়ানো পাঠককে বিস্ময়ে হতবাক করে দিয়েছে। এতই বিচিত্র সেই ঢেউ! তঁার হাত ধরে বিপুলা বিশ্বের অজানা অচেনা অঞ্চলে পাড়ি জমিয়েছি আমরা। পর্বত-প্রান্তর, জনসংস্কৃতি-সমুদ্র, নদী-খেত, কলকারখানা ও শিশুসদন থেকে এমনকী, যুদ্ধক্ষেত্র-মেলা, উৎসব-পরব সবই জড়িয়ে-জাপটে সে এক রংবাহারি উদ্যাপন! বিশ্ব মানচিত্রের দিকে তাকালে বোঝা যায় তার বিস্তার। লাতিন আমেরিকা, পূর্ব ইউরোপ, ক্যারিবিয়ান, পশ্চিম ইউরোপ, ভারতীয় অন্য ভাষার সাহিত্য, আফ্রিকার সাহিত্য থেকে এশিয়ার সাহিত্য– সর্বত্র তিনি পথপ্রদর্শকের হয়ে চিনিয়েছেন সাহিতে্যর সহস্র মহল।
সন্দেহ নেই, বাংলা সাহিতে্য সেই কোন যুগ থেকে ‘অনুবাদ’ অহরহ ওতপ্রোত হয়ে আছে অক্ষরে-পঙ্ক্তিতে, কাহিনি-সংলাপে। সেই কবে কৃত্তিবাস-কাশীরাম, আলাওল-ভারতচন্দ্র থেকে মাইকেল-বিদ্যাসাগর-রবীন্দ্রনাথ বাংলায় তরজমার জয়নিশান উড়িয়েছিলেন স্বনিষ্ঠায়। তবে, লক্ষণীয় যে, পরবর্তীকালে এ-পথেই আসবেন বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে, সমর সেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায় থেকে অরুণ মিত্র, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত কিংবা শঙ্খ ঘোষ। তবে, তাঁদের ক্ষেত্রে জোর পড়েছিল পশ্চিম ইউরোপের অতিপ্রচারিত ঔপনিবেশিক প্রভুদের সাহিত্যের উপর। মানবেন্দ্র বন্দে্যাপাধ্যায় প্রায় একা হাতে অজস্র তরজমায় ভরে দিলেন বাংলা ভাষার বাতায়ন। কেন্দ্রে এল ‘তৃতীয় বিশ্বের সাহিত্য’। এল অজানা মহাদেশ আর অপরিচিত দ্বীপ-অন্তরীপ-মালভূমির কথা।
এত কথা মনে পড়ছে, তার প্রধান উপলক্ষ দু’টি। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছিল মানবেন্দ্র বন্দে্যাপাধ্যায়ের ১৮টি সাক্ষাৎকারের এক অনবদ্য সংকলন ‘সাক্ষাৎ মানবেন্দ্র’ নামক বইটি। প্রকাশক ‘দশমিক’। সম্পাদনা: শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে, বুদ্ধদেব বসু সভাঘরে প্রথম মানবেন্দ্র বন্দে্যাপাধ্যায় স্মারক বৈঠক আয়োজিত হল। মানবেন্দ্র বন্দে্যাপাধ্যায়ের একমাত্র সন্তান কৌশল্যা বন্দে্যাপাধ্যায় প্রবাস থেকে পুরো অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করলেন। হিমানী বন্দে্যাপাধ্যায় তো বটেই, অধ্যাপক অমিয় দেব এবং সৌরীন ভট্টাচার্যর অমলিন কথোপকথনে গত শতকের এবং এ শতকের গোড়ার দশকের অসংখ্য স্মৃতিমেদুর দিনরাত্রির প্রসঙ্গ এসে পড়ল। যার কেন্দ্রে থাকলেন সমুজ্জ্বল মানবেন্দ্র। বিশিষ্ট সাহিত্য বিশারদ অধ্যাপক শিশিরকুমার দাশ যঁাকে ‘অনুবাদেন্দ্র’ উপাধি বা নামে অলংকৃত করেছিলেন।
সাক্ষাৎকারের একটি উত্তর এখানে পাঠকের দরবারে পেশ করি। ২০০০ সালে ‘পরশু’
পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকার। অনুবাদ বা তরজমা প্রসঙ্গে মানবেন্দ্র জানাচ্ছেন, ‘… সারা পৃথিবীর মানুষকে কাছাকাছি আনতে গেলে অনুবাদ একান্তই প্রয়োজন। তবে, এর মধে্যও একটা কথা বলার আছে।’
যে-লোক শেক্সপিয়র অনুবাদ করতেন, তিনি যেন ‘আরব্য রজনী’ না করেন। অর্থাৎ, একটা স্পেশালাইজেশন থাকলেই ভাল হয়। নইলে অনুবাদে তঁার নিজস্ব চিন্তার অভাব পড়তে বাধ্য। এসব কথা তো আমার মনে হয়, প্রশিক্ষকের দূরদৃষ্টিজাত উপদেশ!
৩
প্রাচীন একটা কাহিনি মনে পড়ে গেল। ওল্ড টেস্টামেন্টের ‘জেনেসিস’ অংশের একাদশ অধ্যায়ে রাজা নিমরোদে-র গল্প। এই প্রতাপান্বিত দাম্ভিক সম্রাট নাকি ঈশ্বরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এক পাপস্পর্শী মিনার বানাতে শুরু করেন। দ্রুত কাজ যাতে শেষ হয়, সেজন্য দু’-লক্ষ লোককে মিনার বানাতে লাগানো হয়েছিল। মিনার তরতর করে খাড়া হতে শুরু করে দিল। তার চূড়ায় পৌঁছতে একবছর লাগত। নিমরোদের আদেশে রাজসৈন্যরা স্বর্গে তির ছুঁড়তে শুরু করে। যদিও, মিনার কখনও পুরোটা বানানো হয়নি। ঈশ্বর তখন রাজা নিমরোদে-র স্পর্ধা দেখে রেগে আগুন। তার আদেশে দেবদূতরা এসে মিস্ত্রি-মজুরদের ভাষা আলাদা করে দিল। তার আগে নাকি সবটাই ছিল এক ভাষার প্রকাশ। ভাষা আলাদা হতেই গোলমাল তুমুল আকার নিল। কেউ কারও কথা, নির্দেশ বা পরিকল্পনার ব্যাখ্যা বুঝতে পারল না। ফলে, একেবারে বিপর্যয়! মিনারের কাজ এলোমেলো হয়ে গেল। ব্যাবল-এর সেই মিনার মাটিতে বসে গেল, কিছুটা পুড়ে ছাই হল, খানিক মাথা উঁচু করে রইল। অভিশপ্ত সেই মিনারের কাছে গেলেই, কথিত আছে, স্মৃতি বিলুপ্ত হবে।
এত বড় করে এই পরিচিত গল্পটা শোনালাম কেন? আমার মনে হয়, অনুবাদকের প্রসঙ্গটা এখানে হয়তো লুকনো আছে। ওই মিনার তৈরির দলে ভাষা অনুযায়ী বেশ কিছু দোভাষী বা তরজমা-নিপুণ ব্যক্তিকে পাঠালেই সব সমস্যা সমাধান হত। সে-অর্থে অনুবাদক সেই আলোকোজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, যিনি ব্যাবল-এর স্থায়ী সমাধান করতে পারেন। মানবেন্দ্র বন্দে্যাপাধ্যায়ের একাধারে সহপাঠী এবং দীর্ঘদিনের সহকর্মী, প্রখ্যাত লেখক নবনীতা দেবসেনের প্রবন্ধ থেকে ধার করে বলা যায়– অনুবাদকই হলেন এক্ষেত্রে ‘ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী’! প্রসঙ্গত মনে রাখা ভাল, দ্বাদশ শতকের কন্নড় কবিদের শৈববচনের ১০১টি তরজমা করেন নবনীতা। সে-গ্রন্থের নাম ‘সতেক বচন’ (১৯৮৭)। সেই অনুবাদে উজ্জ্বল আক্কা মহাদেবী। আবার, আট এশীয় মহিলা কবির কবিতা অনুবাদ করেন তিনি ‘অষ্টমী’ গ্রন্থে। কে জানে, মানবেন্দ্রর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনও প্রভাব তঁার উপর পড়েছিল কি না! কথাটা হল ‘ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী’ যখন অনুবাদক, তখন ভাষার বিভেদ হয়ে যায় গৌণ।
মুখ্য হয়ে দেখা দেয় ভাষার বন্ধুত্ব। শতক-কণ্ঠের শত জলঝরনার ধ্বনিতে তৈরি হয় সমস্বর, সুষমগীতি। ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী শুধু? আমার কিন্তু মনে হয়, এই যে বহুবাচনিকতা, এই রংবেরঙের স্বরবিন্যাস, ভাষামৈত্রী আর সংস্কৃতিচর্চার মিলনপরব– যার কেন্দ্রে থাকে অনুবাদ আর অনুবাদক, সে আসলে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে যে
কোনও স্বৈরতান্ত্রিক একক প্রভুত্বের স্বরকে।
ক্ষমতার বলদর্পী নির্বিকল্প আদেশনামাকে। স্বদেশ-বিদেশ তো বটেই, সমকাল থেকে অতীত যুগ, বারবার দেখা যাচ্ছে ফ্যাসিস্ট একনায়কতন্ত্র চায় এক ভাষা এক মাপ এক পরিচয় এক ধর্ম আর এক সংস্কৃতি। সেজন্য ঘৃণা দিয়ে মুছে দিতে শেখানো হয় ভিন্নস্বর, ভিন্ন জীবনচর্যা, ভিন্ন মতাদর্শ, বহুশরিকে বহুত্বময় আত্মপরিচয়।
অনুবাদক তাই গোপন বিপ্লবী। রবীন্দ্রনাথের ধনঞ্জয় বৈরাগীর মতো গানপাগল এক অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। তার প্রশ্ন, আমার সৃষ্টিশীলতাই কি তোমার বিরুদ্ধে সবথেকে ধারালো হাতিয়ার নয়? তরজমা থাকলে তরজমাকারী থাকলে, হুকুম তোমার ফলবে কবে? সেই অকুতোভয় অনুবাদ-স্রষ্টার পদযাত্রায় আমি অগ্রভাগে মানবেন্দ্র বন্দে্যাপাধ্যায়কে দেখতে পাচ্ছি! চোখের ভুল কি?
(মতামত নিজস্ব)
লেখক অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক
[email protected]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.