Advertisement
Advertisement
Human Cell Atlas

হিউম্যান সেল অ্যাটলাস, যেন শ্রীকৃষ্ণের ‘বিশ্বরূপ’!

মানবদেহের ৩৭ লক্ষ কোটি কোষকে জানার মতো অবিশ্বাস্য কাজের দিকে এগোচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞান।

Project of human cell atlas
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:November 28, 2024 3:18 pm
  • Updated:November 28, 2024 3:19 pm  

বিজ্ঞানীদ্বয় সারা এবং আভিভ ‘হিউম‌্যান সেল অ‌্যাটলাস’ বানাচ্ছেন, তা দেহের শুধু অঙ্গপ্রত‌্যঙ্গই নয়, চেনাবে ৩৭ লক্ষ কোটি কোষের অবস্থানও!

সম্প্রতি কলকাতায় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ‌্যালয়ের অধ‌্যাপক, কেমব্রিজের স্টেম সেল মেডিসিনের ‘চেয়ার’, জীববিজ্ঞানী সারা আমালিয়া টাইকম‌্যান ৩৭ লক্ষ কোটি কোষযুক্ত মানব শরীরের মানচিত্রের যে অভূতপূর্ব আকার ও ব‌্যাপ্তিটি তুলে ধরলেন, তা এ-যুগের মানুষের কাছে কৃষ্ণর ‘বিশ্বরূপ’-এর চেয়ে কিছুমাত্র কম বিস্ময়কর নয়।

Advertisement

২৬ নভেম্বর ‘সায়েন্স সিট’ এবং ‘ইন্ডিয়ান অ‌্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’-এর যুগ্মভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সারা বললেন, ‘আপনারা ভাবতে চেষ্টা করুন মানব শরীরের এমন একটি অ‌্যাটলাস বা মানচিত্র, যার অন্তর্ভুক্ত শুধু অঙ্গপ্রত‌্যঙ্গ নয়, যা চিনিয়ে দিচ্ছে প্রতি মানব শরীরে ৩৭ লক্ষ কোটি কোষের প্রত্যেকটিকে– তারা কে কোথায়, কেমন অবস্থায় আছে, সেই খবরও জানাচ্ছে।’ সত্যি বলতে কী, মানব শরীরের এমন মানচিত্র আমাদের কল্পনার অতীত। এবং সারার কথায় অধিকাংশ শ্রোতাই যুগপৎ মুগ্ধ এবং বিস্মিত। তাঁরা আরও বিস্মিত হলেন এই ঘোষণায় যে, এমনই প্রায় অবিশ্বাস‌্য একটি মানচিত্র তৈরি করছেন সারা এবং আরও এক জীববিজ্ঞানী আভিভ রেগেভ। এই মানচিত্রটির নাম, ‘হিউম‌্যান সেল অ‌্যাটলাস প্রোজেক্ট’।

প্রোজেক্টের উদ্দেশ‌্য: ‘অটো-ইমিউন ডিজঅর্ডার’ থেকে ভাইরাস সংক্রমণের ফলে কোনও জটিল রোগ থেকে ক‌্যানসার– সবকিছুর চিকিৎসা ও সমাধান সূত্রের জন‌্য মানবদেহের কোষের স্তরে অচিন্তনীয় অন্বেষ। সারা তঁার আলোচনায় জানালেন, প্রোজেক্টটিতে বিশ্বজুড়ে কাজ করছেন তিন হাজারের বেশি বিজ্ঞানী, যঁাদের মধে‌্য ভারতীয় বিজ্ঞানীর সংখ‌্যা ১৩৯। এটি এমন একটি মানচিত্র হয়ে উঠবে, যা কোনও জটিল অসুখের ওষুধ তৈরি এবং প্রতিষেধক নির্মাণে নানাভাবে সাহায‌্য করবে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানকে নিয়ে যাবে কোষের অন্তর রহস্যে, খুলে দেবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সামনে অনন্ত সম্ভাবনা।

২০০১ সালে, মানব জিনোমের প্রাথমিক খসড়াটি গোচরে আসে। জানা যায় মানব জিনোমে রয়েছে ৩০০ কোটি ‘বেস্‌ পেয়ার’। এরপর আরও গভীর গবেষণা উন্মোচন করে এই সত‌্য যে, প্রতিটি ডিএনএ সিকোয়েন্স পরস্পরের থেকে পৃথক, যদিও তাদের পার্থক‌্য সহজে ধরা দেয় না, মনে হয় তারা সবাই একইরকম। আরও একটি অত‌্যন্ত জরুরি আবিষ্কার এই যে, হিউম‌্যান জিনোমে আছে প্রায় ২৫ হাজার জিন। এবং জিনের চরিত্র তৈরি হয় কোন কোষে কোন জিন সক্রিয়, সেই অনুসারে। কোষের ধরন বুঝতে জানতে হবে তার কোন জিনগুলো কাজ করছে। সারা আরও জানান, ২০০৯ সালের পরে একটি নব প্রযুক্তি এসেছে বিজ্ঞানীদের নাগালে, যার দ্বারা সম্ভব হচ্ছে কোনও কোষের অতি ক্ষুদ্র পরিসরেও সক্রিয় জিনগুলোর সিকোয়েন্স তৈরি করা।

মানবদেহে ৩৭ লক্ষ কোটি কোষকে জানা-বোঝার মতো অবিশ্বাস‌্য কাজের দিকে এগিয়ে চলেছে চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং শরীরের আধুনিক মানচিত্র। সেইদিন খুব হয়তো দূরের নয়, যেদিন মানব শরীরের সম্পূর্ণ অ‌্যাটলাস নির্ণয় করতে পারবে ৩৭ লক্ষ কোটি কোষের প্রত্যেকটির কাজ ও চরিত্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement