Advertisement
Advertisement

Breaking News

অ্যাথলিটদের সমালোচনা করার আগে এবার তো একটু ভাবুন!

প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে কমনওয়েলথে সোনা জিতেছিলেন গীতা ফোগাট৷

people who raise voice against athlete's performance should think twice
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 27, 2016 7:07 pm
  • Updated:December 27, 2016 7:07 pm  

যাঁরা বলেন অ্যাথলিটরা ঘুরতে আর সেলফি তুলতে অলিম্পিকে যান, তাঁদের মনে কি প্রশ্ন জাগে না, অলিম্পিকের টিকিট অর্জন করতে ঠিক কতটা কাঠখড় পোড়াতে হয়? দঙ্গল দেখার পর কি সেই মানসিকতায় খানিক মলম লাগল? উত্তরের খোঁজে সুলয়া সিংহ

প্রফেশনাল বক্সিং রিংয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে ফের দুমড়ে মুছড়ে দিলেন বিজেন্দর সিং৷ আটে আট৷ বাহ! দারুণ ব্যাপার৷ দেশবাসীর মাথা গর্বে উঁচু হল৷ অলিম্পিকের মঞ্চে কী অসাধারণ পারফর্মটাই না করলেন পি ভি সিন্ধু৷ যোগ্য প্রতিযোগী হিসেবেই তো রুপোটা ঘরে তুলেছেন৷ আসমুদ্র হিমাচল তখন খেলোয়াড়দের প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷ আর অলিম্পিক বা কোনও আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতা থেকে কোনও অ্যাথলিট খালি হাতে ফিরলে? কী আবার? তুলোধোনা৷ সমালোচনার ঝড়৷ এমনকী মান্যিগন্যি বুদ্ধিজীবীরাও প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন, হবে কী করে! মন তো ছিল সেলফি তোলার দিকে৷ আর উদ্দেশ্য ছিল বিদেশ ভ্রমণ৷

Advertisement

একজন অ্যাথলিটের বিচার হয় তাঁর পদক সংখ্যা দিয়ে৷ আন্তর্জাতিক স্তরে সোনা, রুপো, ব্রোঞ্জ নেই মানে তো কিছুই নেই৷ সে আবার কোথাকার অ্যাথলিট৷ কিন্তু জয় পরাজয়ের নেপথ্যে যে লম্বা ইতিহাস, তা অন্ধকারেই থেকে যায়৷ বলিউডের নায়ক-নায়িকারা আঁধার রাতের গভীর গহ্বর থেকে সেই ইতিহাস খুঁড়ে বের করলে তবেই তা জানার আগ্রহ জন্ম নেয়৷ তবেই বৃদ্ধ বয়সে অতিরিক্ত সম্মান পান মিলখা সিং৷ পাশের বাড়ির মেয়ের মতো হয়ে ওঠেন গীতা, ববিতারা৷ আর মেরি কমের প্রতি আরও একটু শ্রদ্ধা বেড়ে যায়৷

বাস্তবের ছবিটা যে কতটা কঠোর, কেউ মনেই রাখে না৷ সন্তানকে নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য তৈরি করেন মা-বাবা৷ যার জন্য অনেক সময় পিতৃত্বের খোলস ত্যাগ করে হয়ে উঠতে হয় ‘হানিকারক’৷ কেউ ইচ্ছের বিরুদ্ধেও পৌঁছে যান কুস্তির আখড়ায়, কেউ আবার নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদে সাত-পাঁচ না ভেবেই বক্সিং গ্লাভস হাতে তুলে নেন৷ কাউকে লড়ে যেতে হয় রক্ষণশীল সমাজের সঙ্গে৷ যাঁরা পদক এনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেন, এই লম্বা সফরে ক’জনকেই বা সঙ্গে পান তাঁরা৷ অনেক সময় হয়তো কাউকেই পান না৷ একবার সাফল্যের শিখরে পৌঁছে গেলে তখন সবাই আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন৷ আর ব্যর্থ হলে সমালোচনার বাণে বিদ্ধ করা হয়৷

প্রথম ভারতীয় মহিলা কুস্তিগির হিসেবে কমনওয়েলথে সোনা জিতেছিলেন গীতা ফোগাট৷ কেউ আশাও করেননি এইভাবে ইতিহাস গড়বেন তিনি৷ কারণ তার আগে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মঞ্চে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি৷ আঙুল তোলা হয়েছিল তাঁর পারফরম্যান্সের দিকে৷ আজ ‘দঙ্গল’ ছবি দেখে গীতার প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন সবাই৷ জানতে পারছেন, তাঁর হারের নেপথ্য কাহিনি৷ কিন্তু সেদিন কেউ জানার চেষ্টাও করেননি৷ স্রেফ তৈরি হয়েছিল ব্যর্থ কুস্তিগিরের কিছু মুখরোচক খবর৷ হরিয়ানার আখড়া থেকে দিল্লির কমনওয়েলথের মঞ্চের সফরটা ঠিক কতটা প্রতিকূল ছিল, আজ সবার কাছে স্পষ্ট৷

যাঁরা বলেন অ্যাথলিটরা ঘুরতে আর সেলফি তুলতে অলিম্পিকে যান, তাঁদের মনে কি প্রশ্ন জাগে না, অলিম্পিকের টিকিট অর্জন করতে ঠিক কতটা কাঠখড় পোড়াতে হয়? ‘দঙ্গল’, ‘মেরি কম’-এর মতো ছবিগুলি দেখার পর অন্তত অ্যাথলিটদের পরিশ্রম আর একাগ্রতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানায় না৷ বিশেষ করে যাঁরা ঠান্ডা ঘরে বসে সমালোচনা করেন৷ যাঁরা কখনও আখড়ার মাটি মাথায় ঠেকিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে নামেননি, তাঁদের কি সত্যিই ব্যর্থতা নিয়ে নিন্দে করা শোভা পায়৷ ‘দঙ্গল’ তাঁদের সেই মানসিক দিকের বিকাশ ঘটাক, এটাই কাম্য৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement