Advertisement
Advertisement

Breaking News

ওরা পারে, আমরা পারি না

লজ্জা হয়। আমার মতো হয়তো আপনারও হয়। কিন্তু লজ্জা নিবারণের উপায় তো জানা নেই।

Paralympians made history, but people hesitate to admit it
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 20, 2016 2:57 pm
  • Updated:September 20, 2016 2:57 pm  

সুলয়া সিংহ: “আরে আজ তো দীপাকে ভবানীপুর ক্লাবও সংবর্ধনা দিল গো৷”

“হ্যাঁ, পদক না পেয়েই এত সংবর্ধনা৷ পেলে না জানি কী হত৷”

Advertisement

বাজারে গিয়ে দুই ভদ্রলোকের ‘ওলিম্পিক প্রীতি’ দেখে হাসির ছলেই এগিয়ে গিয়ে বললাম, “সত্যি৷ যা বলেছেন৷ অথচ দেখুন দীপা মালিক রুপো জিতেও কি এত সংবর্ধনা আর জনপ্রিয়তা পাচ্ছে?”

দু’জনেই প্রথমে খানিকটা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন। তারপরই হেসে বললেন, “আপনি তো দেখছি দীপা কর্মকার আর সাক্ষী মালিককে গুলিয়ে ফেলেছেন। দীপা তো মেডেল পায়নি। আর সাক্ষী ব্রোঞ্জ। রুপো তো সিন্ধুর। সব জগা খিচুরি করে বসলেন।” বুঝলাম, ভুল আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছি। “প্যারালিম্পিকের কথা বলছিলাম দাদা,” বলেই সেখান থেকে কেটে পড়লাম।

deepa-story_647_081316092335

তাহলে কি দাঁড়াল? শটপাটে দেশকে রুপো এনে দিয়েও নিট ফল হল শূন্য। প্যারালিম্পিক যে ওলিম্পিকের কাছে ধোপে টেকে না, সেটাই প্রমাণ হল। অথচ ওলিম্পিকে যেখানে ১১৯ জনের প্রচেষ্টায় এসেছে দু’টি পদক, সেখানে প্যারালিম্পিকে ১৯ জন মিলে আনলেন ঠিক দ্বিগুণ পদক। যার মধ্যে আবার দু’টি সোনা। এত কম প্রতিযোগী সত্ত্বেও প্যারালিম্পিকের মঞ্চে ভারতের মোট পদক সংখ্যা ১২। আর ওলিম্পিকে? সব মিলিয়ে ২৬। মাইকেল ফেল্পসের ব্যক্তিগত পদকের চেয়ে মাত্র একটা কম। কিন্তু কী আর করা যাবে। এই দুই প্রতিযোগিতাকে তো আর সমানভাবে দেখা চলে না। কোথায় ওলিম্পিক? আর কোথায় ‘বানের জলে ভেসে আসা’ প্যারালিম্পিয়ানরা?

শুধু তো সামাজিক প্রতিকূলতা নয়, নিজের সঙ্গে লড়াই করে বড় হতে হয়েছে তাঁদের। তারপরও আম আদমির তাঁদের নামটুকু জেনে ওঠা হয় না। খেলরত্ন পুরস্কার দেওয়ার আগে অনেকবার বিবেচনা করতে হয় ক্রীড়ামন্ত্রককে। আর বায়োপিক তৈরির ভাবনা চিন্তা? দূর, কি যে বলে ফেললাম। এটা আবার একটা টপিক হল নাকি! সিনেমা তো ফ্লপ হবে! দীপা-দেবেন্দ্র-মারিয়াপ্পানদের প্রতিটি পদক যেন সমাজের এই অদ্ভুত আচরণের মুখে সপাটে একটা চড় কষালো। কিন্তু তাতে টনক কি নড়ল? না, আগেও নড়েনি, এবারও অনড়। প্রতিবারই প্যারালিম্পিয়ানরা পদক জিতলে কিছু কলম সজাগ হয়ে ওঠে। তারপর যে-ই কে সেই।

devendrajhajhariaafp_1473844646

পরের বার দীপা কর্মকার পদক আনবেই। এই দৃঢ় বিশ্বাসে বুক বেঁধে ফেসবুক-টুইটারে ‘বেটার লাক নেক্সট টাইম’ স্টেটাস তুলে দিই। আর দীপা মালিকদের শুভেচ্ছা জানাতে একটা বাক্যও খরচ করা হয় না। লজ্জা হয়। আমার মতো হয়তো আপনারও হয়। কিন্তু লজ্জা নিবারণের উপায় তো জানা নেই। তাই বরং প্রতিবন্ধী শরীরের অতল গভীরে তলিয়ে গিয়ে নিজের ভাবনাকে ‘পঙ্গু’ না করে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্টে মনোযোগী হওয়াতেই মঙ্গল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement