Advertisement
Advertisement
GTA

আতঙ্ক অতীত, GTA নির্বাচন ঘোষণার পরও ম্যাল যেমন অষ্টমীর শ্রীভূমি!

আগামী ২৬ জুন জিটিএ নির্বাচন।

No tension in Darjeeling, even after announcement of GTA election | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:June 2, 2022 1:59 pm
  • Updated:June 2, 2022 1:59 pm  

সুতীর্থ চক্রবর্তী: এ তো অষ্টমীর শ্রীভূমি! ম্যালে দাঁড়িয়ে কান পাতলে এই বাক্যটাই শুধু শোনা যাচ্ছে। থেকে থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ১৪ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। অর্থাৎ কলকাতার সর্বোচ্চ শীত। মাঝে মাঝেই মেঘ এসে সবকিছু স্যাঁতসেঁতে করে দিচ্ছে। তবু আলো ঝলমলে ম্যালে আক্ষরিক অর্থে পা ফেলার জায়গা নেই।

জিটিএ ভোটের (GTA Elections) ঢাকে কাঠি পড়তেই পাহাড় ফাঁকা হবে বলে যারা আশঙ্কা করছিল তারা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ম্যালের উপর মহাকাল মন্দিরের দিকটায় জলপাহাড়ের দিকে পিঠ করে লোহার বেঞ্চে বসেছিলেন প্রণীত গুরুং। রোজ বিকেলেই ম্যালে আসাটা যাঁর অভ্যাস। ভিড়ের ঠ্যালায় ইদানীং ম্যালে তাঁর বসার জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রণীত বলছিলেন, “ভোট মানে পাহাড়ে একটা আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। সেটাই ভয়। ১০৫ দিনের ভয়াবহ স্মৃতি খুব টাটকা তো!” পাহাড়ে আচমকা একটা আন্দোলন শুরু হয়ে যাওয়া যে ভয়ের তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কিন্তু এ বারে কি সেই আশঙ্কা রয়েছে?

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘সব ভুয়ো, বিরোধীদের অপপ্রচার’, নিজের আত্মীয়দের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ওড়ালেন মন্ত্রী পরেশ]

প্রণীত যে আশঙ্কা করছেন তার ছিটেফোঁটা নেই লাডেন লা রোডের সোয়েটার দোকানের মালিক অশোক তামাংয়ের। দোকানে গিজগিজে ভিড়। কথা বলার ফুরসত নেই। নাছোড় প্রশ্নকর্তাকে উত্তরে বললেন, “অনশন কি জমল দাদা! তিনি তো গ‌্যাংটকে।” বিমল গুরুংয়ের মতিগতি নিয়ে পাহাড়বাসীর একাংশের আশঙ্কার মেঘ এইভাবেই কেটে গিয়েছে। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন শেষ হতে চলল। ফলে জিটিএ ভোট যে সময়ে হচ্ছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই এই তল্লাটে। তবে ভোট নিয়ে কারও বিশেষ আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে না। কারণ, পাহাড় তো এখন পুজোর বাজারকে হার মানাচ্ছে। ম্যাল যদি হয় অষ্টমীর শ্রীভূমি, তা হলে কী বলবেন গ্লেনারিজ আর কেভেন্টার্সের সামনে দিয়ে নেমে চলা নেহরু রোডকে?

ম্যালে ওঠানামা করার এটাই সবচেয়ে জনপ্রিয় রাস্তা। বিকেল থেকে জাস্ট হাঁটার উপায় নেই। সকাল আটটায় খুলবে কেভেন্টার্স, কিন্তু সকাল সাতটায় লম্বা লাইন। গ্লেনারিজের ভিড় নিয়ে তো কিছু না বলাই ভাল। পুজোর ডালা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার মতো। পাহাড়ে এখন শুধু বাঙালি পর্যটকের চাপ নয়। সুদূর কেরল, তামিলনাড়ু থেকে গুজরাত, রাজস্থান-দেশের পর্যটকদের বড় অংশের গন্তব্য এই মুহূর্তে দার্জিলিং। ম্যালে বসা প্রণীত বলছিলেন, “ম্যাডামের আমলে পাহাড়ের পর্যটনের বিপণন ভাল হয়েছে। পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। শুধু ব্রিটিশ ঐতিহ্য খুঁজতে দার্জিলিংয়ে আসার ঝোঁকটা গিয়েছে। হোম স্টে, ইকোপার্কগুলো সাধারণ পর্যটকদের টানছে।”

[আরও পড়ুন: হায় রে কুসংস্কার! সাপের কামড়ে মৃত নাবালিকার প্রাণ ফেরাতে দেহ ভেলায় ভাসাল পরিবার]

তাকদা বা লামাহাটার হোম স্টে-গুলোতে পর্যন্ত ভিনরাজ্যের টুরিস্ট বেশি। বাতাসিয়া লুপে হেরিটেজ টয় ট্রেনে যে যুবক-যুবতীকে দেখলাম ডিডিএলজের ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যটি ফুটিয়ে তুলছে তারা তো এসেছে আমেদাবাদ থেকে। টয় ট্রেনে ঠাসা ভিড়। বলাই বাহুল্য, অনলাইনে বহু আগে টিকিট বুক করে এদের ৯৯ শতাংশ এসেছেন দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে। কোভিড আতিমারীর পর এত ভিনরাজ্যের পর্যটক পাহাড়ের পর্যটন শিল্পের পক্ষে সবচেয়ে আশাপ্রদ ঘটনা। পাহাড়ে বর্ষা প্রায় ঢুকে গিয়েছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা কার্যত মেঘের দেশে। তবু এই পর্যটকের ঢল একদম আধিভৌতিক ঘটনা মনে হচ্ছে দার্জিলিংয়ের বাসিন্দাদের। এই উৎসবের মেজাজ, এই ভিড়, পাহাড়বাসীর এই কর্মব্যস্ততার মধ্যেই যে টুক করে জিটিএ ভোটটা মিটে যাবে, এখনও পর্যন্ত ইঙ্গিত তেমনই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement