২ ফুট ৩ ইঞ্চির ইঁদুরটা৷ বাড়বাড়ন্ত এতটুকু কমেনি৷ এত দুষ্টু, তাও সবাই ভালবাসে৷ মিকি মাউস৷ ৮৮ বছরে পা দিয়ে আজও ছোট-বড়র তোয়াক্কা না করে মানুষের মুখে হাসি ছড়িয়ে দিয়ে যায় এই নাম৷ এই দুষ্টুমির হাত ধরেই স্মৃতির সরণিতে ফের ঢুঁ মারলেন সুপর্ণা মজুমদার৷
Advertisement
ভাবনা-চিন্তার বালাই নেই৷ যেখানে খুশি ছুটে বেড়াই৷ ছোটবেলার ভারি মজা, বড় হওয়ার কোনও তাড়া নাই৷ কিন্তু সময়ের নিয়ম বড্ড কড়া৷ একচুল এদিক-ওদিক হওয়ার জো নেই৷ বড় তো হতেই হয়৷ ভবিষ্যতের চিন্তার গন্ধমাদন মাথায় তুলে নিতেই হয়৷ মাথায় যতই ভার থাক বুকের বাঁ-দিকে ছোট্ট দুরন্তপনাটা থেকেই যায়৷ বিনা কারণে এদিক থেকে ওদিক দৌড়ে বেড়ায় ২ ফুট ৩ ইঞ্চির ইঁদুরটা৷ নয় নয় করে ৮৭ বসন্ত পেরিয়ে গেল৷ তাও তার বাড়বাড়ন্ত এতটুকু কমেনি৷
হেন কোনও মানুষ অন্তত আমার চেনা নেই, যার ছেলে কিংবা মেয়েবেলায় উড়ে এসে জুড়ে বসেনি ইঁদুরটা৷ এত দুষ্টু, তাও সবাই ভালবাসে৷ ঠিক ১৯২৮ সালের ১৮ নভেম্বর প্রথমবার বড়পর্দায় দেখে যেমনটা ভালবেসেছিলেন৷ ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর পেরিয়েও তেমনটাই ভালবাসেন৷ মিকি মাউস নামে ম্যাজিক আজও ছোট-বড়র তোয়াক্কা না করে মানুষের মুখে হাসি ছড়িয়ে দিয়ে যায়৷
“স্বপ্ন যদি তুমি দেখতে পারো, তা পূরণও করতে পারবে৷” এই ছিল স্রস্টার বিশ্বাস৷ এই বিশ্বাস থেকেই চার্লস মিন্টজ-এর প্রতারণার পরও হেরে যাননি ওয়াল্টার এলিয়াস ডিজনি৷ অ্যানিমেটর সঙ্গী আব ইউয়েরক্সকে সঙ্গে নিয়ে রাতদিন এক করে দিয়েছিলেন নতুন কিছু করা তাগিদে৷ ঘোড়া, কুকুর, গরু থেকে বিড়াল, ব্যাঙ – বহু জীবজন্তুর ছবি এঁকেছিলেন ইউয়েরক্স৷ কিছুই মনে ধরছিল না ডিজনির৷ শেষে একদিন তাঁর চোখ পড়ল ডেস্কে এদিক-ওদিক দৌড়ে বেড়ানো ছোট্ট ইঁদুরটার দিকে৷ ব্যস, প্রথম দেখাতেই নিজের অ্যানিমেশন ছবির চরিত্র পেয়ে গিয়েছিলেন ওয়াল্ট ডিজনি৷
মিকি মাউস৷ না, প্রথমে নামটা ‘মিকি’ ঠিক করেননি ডিজনি৷ ‘মর্টিমার মাউস’ নাম দিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু ডিজনি পত্নী লিলিয়ানের পছন্দ ছিল ‘মিকি’ নামটি৷ মিসেস ডিজনির কথাতেই ‘মিকি’র নামকরণ হয়৷ তখন ছবিতে রং ও শব্দের প্রচলন শুরু হয়েছে৷ ডিজনিও নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়েই সৃষ্টি করেছিলেন মিকিকে৷ কিন্তু বিধিবাম৷ প্রথম দুই শর্ট ফিল্ম ‘প্লেন ক্রেজি’ ও ‘দ্য গ্যালোপিন গাউচো’ ডিস্ট্রিবিউটারই পেল না৷
কিন্তু ডিজনি নাছোড়বান্দা, তৃতীয় ছবি তৈরি করেই ফেললেন৷ নাম দিলেন ‘স্টিমবোট উইলি’৷ কোনওমতে এক ডিস্ট্রিবিউটরও পেয়ে গেলেন৷ শব্দ ও রঙের মাধুর্য নিয়ে বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশ করল বিশ্বের প্রথম জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র৷ মিকি মাউস৷ নস্টালজিয়ার এই সফর আজও অব্যাহত৷ সময়ের প্রলেপ পড়েছে৷ পরিবর্তনও এসেছে৷ মিকির হাত ধরেই এসেছে মিনি মাউস, প্লুটো, গুফি, ডোনাল্ড ডাকরাও৷ তবে লাল প্যান্ট ও সাদা দস্তানা পড়া ইঁদুরের দৌড় শুরু হয়েছিল সবার আগে৷
আজ নভেম্বরের সেই আবহে নস্টালজিয়ার কিছু মুহূর্ত একটু ফিরে দেখা যাক তাহলে৷
“oh, boy,” আসল কথা তো বলতে ভুলেই গিয়েছি৷ হ্যাপি বিলেটেড বার্থ ডে মিকি মাউস৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.