Advertisement
Advertisement

মৃত্যু উপত্যকায় আসেন যে সান্তা ক্লজ

মৃত্যু উপত্যকাকে নিজের দেশ কেউই মানতে চান না। কিন্তু এমন দেশেও বেঁচে থাকার, ক্ষণিকের আনন্দ নিয়ে আসেন সান্তা ক্লজ। যতক্ষণ প্রাণ আছে ততক্ষণ বেঁচে থাকার আশা দিয়ে যান।

Meet Santa Claus of Syria
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 22, 2016 3:32 pm
  • Updated:December 22, 2016 4:51 pm  

মৃত্যু উপত্যকাকে নিজের দেশ কেউই মানতে চান না। কিন্তু এমন দেশেও ক্ষণিকের আনন্দ নিয়ে আসেন সান্তা ক্লজ। তাঁর কথাই লিখলেন উর্মি খাসনবিশ।

বড়দিন সামনেই। চারদিকে কেমন সাজো-সাজো রব। সেজে উঠেছে পার্কস্ট্রিট, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে বো-ব্যারাকে। ফেসবুক বা অন্যান্য সকল মিডিয়ার দেওয়ালগুলোও রঙিন হয়ে উঠছে দ্রুত। বড়দিন আসতে আর তো দেরি নেই। উৎসবে মাতোয়ারা হওয়ার সময় এখন।

Advertisement

আচ্ছা যদি আচমকা কলকাতাটা সিরিয়া হয়ে যায়? ঠিক যেন কোনও ধ্বংসস্তূপ, ভাবতে পারেন ঠিক কেমন লাগবে? একের পর এক যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা গোলা-বারুদ পুড়িয়ে দিচ্ছে আমার-আপনার স্বপ্নের শহরটাকে, ভেবেই শিউরে উঠতে হয়। প্রশ্ন জাগে আমার-আপনার শহরে যদি এমন হয়, এই বড়দিনে ভেঙে যাওয়া শহরে সান্তা ক্লজ আসবে?  কোনও স্লেজ গাড়ি চড়ে? তাঁর কাছে সবুজ ঝোলা থাকবে? ধ্বংসস্তূপের পাশে বসে থাকা ছোট্ট শিশুটার মোজায় ভরে রেখে যাবে কোনও খেলনা আর কিছুটা স্বস্তি?

syria-2_web

আপাতভাবে কাব্যিক মনে হচ্ছে? মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েরা যেখানে নিজেদের জীবনে সান্তা ক্লজের আবির্ভাব বলতে বোঝে কেবলই বিলাসিতা, সেখানে ভেঙে যাওয়া সভ্যতার রাস্তায় সান্তা বুড়োর দেখা মেলা আদৌ সম্ভব কি?

কিন্তু যেখানে সাধারণের চিন্তা থেমে যায়, সেখানেই তো ঘটে ঐশ্বরিক ঘটনা। আপাদমস্তক সাদা ধবধবে চুল-দাড়ির একজন বুড়ো দাদু বরফের দেশ থেকে স্লেজ গাড়ি করে রক্তে ভেসে যাওয়া দেশে না আসলেও, কেউ তো ঠিক আসেন। টাকা, খাবার আর পুতুল ঝোলায় ভরে। হাজার ঝুক্কি নিয়ে। শিশুগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে।

syria-3_web

সিরিয়ার এমনই এক সান্তার খোঁজ দিতে চাই এই লেখায়। জন্মসূত্রে মুসলমান রোমি আধাম। ফিনল্যান্ড থেকে পুতুল আর টাকা জোগাড় করে সবুজ ঝোলা করে সিরিয়ায় আসেন রোমি। জানা গিয়েছে, তিনি নাকি রীতিমতো রবিনহুড। পেশায় স্মাগলার রোমি, বহু ঘটনা এবং দুর্ঘটনাকে সঙ্গী করে আর বহু বাঁধা পেরিয়ে সিরিয়ায় পাঁচ বছরে ২৮ বার পৌঁছে গিয়েছেন। নিজের জীবনের তোয়াক্কা করেই এই কাজ করে থাকেন তিনি।

রোমিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এমন ঝুঁকি নেন কেন? অকপট উত্তর দিয়েছিলেন এই সান্তা ক্লজ। বলেছেন, “শিশুগুলো অপেক্ষা করে বসে থাকে আমার আসার। আমার সবুজ ঝোলাটা দেখলেই ওদের মুখে অদ্ভুত একটা হাসি ফুটে ওঠে। সেই হাসির মূল্য আমার জানা নেই। আর ওদের মুখে হাসি ফোটাতেই এই ঝুঁকি নিয়ে চলে আসি।”

syria4_web

রোমি জানিয়েছেন, সিরিয়া আর আলেপ্পোকে গোটা পৃথিবী ব্রাত্য করে রেখেছে। কেউ ফিরেও তাকান না। আর তাই নিজের সাধ্য মতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

মৃত্যু উপত্যকাকে নিজের দেশ কেউই মানতে চান না। কিন্তু এমন দেশেও বেঁচে থাকার জন্য ক্ষণিকের আনন্দ নিয়ে আসেন সান্তা ক্লজ। যতক্ষণ প্রাণ আছে ততক্ষণ বেঁচে থাকার আশা দিয়ে যান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement