Advertisement
Advertisement

Breaking News

Manmohan Singh

অর্থনীতির উপর থেকে বাঁধন খুলে নেবে রাষ্ট্র, পথ দেখান মনমোহন সিং

ভবিষ‌্যতে কেইন্‌স, ফ্রিডম‌্যানের মতো তাঁর নাম উচ্চারিত হবে।

Manmohan Singh is the pioneer of Indian economy
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:January 1, 2025 12:02 am
  • Updated:January 1, 2025 12:02 am  

মনমোহন সিং চালু করেছিলেন ভারতের অর্থনীতিতে সংস্কার প্রক্রিয়া। অর্থাৎ রাষ্ট্র অর্থনীতির উপর থেকে তার বাঁধন খুলে নেবে। অর্থনীতি চলবে স্বাধীনভাবে। ভবিষ‌্যতে কেইন্‌স, ফ্রিডম‌্যানের মতো তাঁর নাম উচ্চারিত হবে। লিখছেন সুতীর্থ চক্রবর্তী

ভারতের উদারীকরণের পথে যাওয়ার পটভূমিটা আটের দশক থেকেই রচনা হচ্ছিল। কারণ, ওই সময় থেকেই আইএমএফ ও বিশ্ব ব‌্যাঙ্কের চাপে লাতিন আমেরিকা, পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ রক্ষণশীল বাণিজ‌্যনীতি থেকে সরে আসতে বাধ‌্য হচ্ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বে আন্তর্জাতিক বাণিজ‌্য পরিচালনার জন‌্য ছিল ‘জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট‌্যারিফস অ‌্যান্ড ট্রেড’ (গ‌্যাট)। গ‌্যাটে শুধুমাত্র পণ্যের ব‌্যবসা-বাণিজ‌্য নিয়ে আলোচনা চলত। কিন্তু অর্থনীতির নতুন-নতুন ক্ষেত্র খুলছিল। কৃষি, পরিষেবা, মেধাস্বত্ব ইত‌্যাদি বিষয়গুলিতেও আন্তর্জাতিক লেনদেন হচ্ছিল। গ‌্যাটে এই বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল না। সেই কারণে গ‌্যাটের ‘বিকল্প’ কোনও সংগঠনের কথা ভাবা হচ্ছিল।

Advertisement

১৯৮৬ সালে শুরু হওয়া গ‌্যাটের উরুগুয়ে রাউন্ডের কথা একসময় খুব শোনা যেত। গ‌্যাটের ওই উরুগুয়ে রাউন্ডেই ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন’ বা বিশ্ব বাণিজ‌্য সংস্থার মতো একটি সংগঠনের আলোচনা চলছিল। সেখানেই আসে বিখ‌্যাত ‘ডাঙ্কেল প্রস্তাব’। যে-প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক বাণিজে‌্যর মধ্যে আরও কোন-কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে। যা নিয়ে তীব্র বিরোধিতা ছিল উন্নয়নশীল বিশ্বের। কারণ ওষুধ থেকে শুরু করে সব প্রযুক্তির উপর মেধাস্বত্ব বসলে সমূহ অার্থিক ক্ষতির অাশঙ্কা ছিল তৃতীয় বিশ্বের। তারা মনে করছিল, এবার বেশি দামে ওষুধ, প্রযুক্তি ও অন‌্যান‌্য পণ‌্য বহুজাতিক সংস্থাগুলির কাছ থেকে কিনতে হবে।

বিশ্বের বড় বড় বহুজাতিক সংস্থার উদ্যোগে যখন গ‌্যাটের উরুগুয়ে রাউন্ডের বৈঠক চলছে এবং ডাঙ্কেল প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, তখন অন‌্যান‌্য দেশের সঙ্গে ভারতও উত্তাল হয়েছিল অান্দোলনে। বিশ্ব রাজনীতিতে গ‌্যাট, ডাঙ্কেল প্রস্তাব ও সেখান থেকে বিশ্ববাণিজ‌্য সংস্থায় উত্তরণকে দেখা হচ্ছিল ‘বিশ্বায়ন’ হিসাবে। ফলে ১৯৯১ সালে মনমোহন সিং ভারতের অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই দেশকে বিশ্বায়নের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার একটি চাপ ছিল। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়াকে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো এই ব‌লে ব‌্যাখ‌্যা করেছিলেন যে, এটি একটি বড় জাহাজের মতো, যার উপর সব দেশ চড়ে বসেছে। জাহাজের যাত্রীদের এক-একজনের একেকরকম আর্থিক দশা। কেউ কেউ রয়েছেন বিলাসবহুল কেবিনে, আবার কেউ পড়ে রয়েছেন ডেকের উপর।

বিশ্বায়ন নিয়ে যখন ঘোর উত্তাল বিশ্ব, তখনই বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিপুল সংকটে পড়ে ভারত। রপ্তানির তুলনায় আমদানি বিপুল। কারণ ভারতকে সবসময়ই জ্বালানির জন‌্য আমদানির উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়েছে। আমদানি বিপুল হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ঘাটতিও বিরাট। একটা পর্বে গিয়ে ভারতের এমন পরিস্থিতি হয় যে, দু’-সপ্তাহের আমদানি খরচ চালানোর মতো রসদ ছিল না। কিছু দিন অাগে এই পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর দেশের সোনা বন্ধক রেখে ধার করতে বাধ‌্য হয়েছিলেন। এই সময় টাকা ধার দিতে এগিয়ে আসত আইএমএফ ও বিশ্ব ব‌্যাঙ্ক। কিন্তু তাদের ধারের নানারকম শর্ত থাকত। তাদের এই ঋণকে বলা হত ‘স্ট্রাকচারাল

অ‌্যাডজাস্টমেন্ট লোন’। অর্থাৎ যে-দেশ আইএমএফ বা বিশ্ব ব‌্যাঙ্কের কাছ থেকে টাকা ধার করত, তাদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হত। এই শর্তের মধ্যেই থাকত যে, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণ করতে হবে, জনকল‌্যাণমূলক খাতে সরকারি খরচ কমাতে হবে, দেশি-বিদেশি বেসরকারি পুঁজির উপর থেকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ তুলে নিতে হবে, আমদানি প্রতিস্থাপন নীতি থেকে সরে আসতে হবে, আমদানি শুল্কের বেড়া ভেঙে দিয়ে বহুজাতিক সংস্থাগুলির জন‌্য দেশের বাজার উন্মুক্ত করতে হবে ইত‌্যাদি। অর্থাৎ আইএমএফ বা বিশ্ব ব‌্যাঙ্ক বলত, আমরা যে-পথে তোমার দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ঘটাতে বলব, সেই পথেই তোমায় হঁাটতে হবে। যে ঋণ তুমি নিয়েছ, তা যাতে শোধ করতে পারো, সেটা আমরা সুনিশ্চিত করব। তার জন‌্য একদিকে দেখব তুমি সরকারি খরচ কমিয়ে কোষাগারের ঘাটতি কমাতে পারছ কি না, অন‌্যদিকে দেখা হবে তোমার দেশে উৎপাদন বাড়ছে কি না।

সে-সময় ফান্ড-ব‌্যাঙ্কের এসব শর্ত নিয়ে বিশ্বজুড়ে জোর বিতর্ক ছিল। যেহেতু তখনও সোভিয়েত ইউনিয়ন রয়েছে, তাই বলা হত যে, ফান্ড-ব‌্যাঙ্ক তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে এইভাবে ধার দিয়ে আমেরিকার তঁাবেতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাত। ১৯৯১ সালের ২৪ জুলাই যে ঐতিহাসিক বাজেট ভাষণের মধ্য দিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং সব বিতর্ককে উপেক্ষা করে অর্থনীতিকে রাষ্ট্রের কবল থেকে বের করে আনার সাহস দেখালেন, তার অল্প কয়েক দিন বাদেই কিন্তু পতন ঘটেছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের। কেউ কেউ বলতে পারেন, কাজটা সহজ হয়েছিল মনমোহনের পক্ষে। মনমোহনের ২৪ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক বাজেট ভাষণের মূল নির্যাস ছিল, রাষ্ট্র নির্দেশিত ‘পরিমাণগত পরিকল্পনা’ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যা অামাদের সোভিয়েত ব‌্যবস্থা থেকে গ্রহণ করা। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় অর্থনীতি চলছিল সোভিয়েত মডেলের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মধে‌্য দিয়ে। যেখানে রাষ্ট্র ঠিক করে দিত কোন জিনিসটা কত পরিমাণে উৎপাদন হবে। সেই অনুযায়ী ব‌্যবসায়ী ও শিল্পোদে‌্যাগীদের লাইসেন্স ও পারমিট দেওয়া হত। মনমোহন বিকল্প হিসাবে বাজারনীতির কথা বললেন। অর্থাৎ চাহিদা-জোগানের মধ‌্য দিয়ে বাজার ঠিক করে দেবে কোন জিনিসটা কত উৎপাদিত হবে। রাষ্ট্র অর্থনীতির উপর থেকে তার বঁাধন খুলে নেবে। অর্থনীতি চলবে স্বাধীনভাবে। ওই বাজেটে লাইসেন্স-পারমিটরাজ তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
এটাও ঘটনা যে ফান্ড-ব‌্যাঙ্ক তার স্ট্রাকচারাল অ‌্যাডজাস্টমেন্ট লোনের সঙ্গে যেসব শর্ত জুড়ে দেয়, তা পূরণ করতে গিয়েই কিন্তু মনমোহন সিং সুযোগ পেয়েছিলেন ভারতের অর্থনীতিতে সংস্কার প্রক্রিয়া চালু করতে। ঐতিহাসিক বাজেটের পর একে একে অাসে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন‌্য দেশের বাজার ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া, টাকার অবমূল‌্যায়ন ঘটানো, বাণিজ্যিক ব‌্যাঙ্কগুলিকে সুদের হার ঠিক করার ক্ষমতা, বেসরকারি ব‌্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার অনুমতি ইত‌্যাদি সরকারি সিদ্ধান্ত।

২০০৪ সালে মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর অর্থমন্ত্রী হিসাবে তঁার আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়ার সুফল ভারত দেখতে শুরু করে। ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার এক অবিশ্বাস‌্য উচ্চতায় গিয়ে পৌঁছয়। দেশে এক বিরাট মধ‌্যবিত্ত শ্রেণি গড়ে ওঠে। সমস্ত বহুজাতিক ব্র‌্যান্ড ভারতে এসে পৌঁছয়। ভারতের শহরগুলি ঝঁা-চকচকে হয়ে ওঠে। ভারতের তরুণ প্রজন্ম বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থায় উচ্চপদে কাজ করতে শুরু করে। সব মিলিয়ে তৃতীয় বিশ্বের গরিব দেশের তকমা ঝেড়ে ফেলে ভারত উন্নত দেশের মর্যাদা পেতে শুরু করে। আবার বিশ্বায়ন বা উদারীকরণ কিংবা সংস্কার প্রক্রিয়ার ফলে দেশে বৈষম‌্য বৃদ্ধিও একটা বাস্তবতা হিসাবে দেখা দেয়।

প্রধানমন্ত্রীর পদে বসে মনমোহন সিং-কে এই সমস‌্যাটার মুখোমুখি হতে হয় সবচেয়ে বেশি। তখন আর্থিক উন্নয়নে সমাজের সব অংশকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি সামনে আসে। আইনের মধ্যে দিয়ে অধিকার প্রদানের মাধ‌্যমে মনমোহনের সরকার এই সমস্যা সমাধানের চ‌্যালেঞ্জ নিয়েছিল। তঁার সরকারের আমলে ১০০ দিনের কাজের অধিকার আইন, খাদ‌্য সুরক্ষা আইন, তথ্যের অধিকার আইন, শিক্ষার অধিকার আইন ইত‌্যাদি আসে। নাগরিকদের অধিকারভিত্তিক কল‌্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা মনমোহনের সংস্কার প্রক্রিয়ার একটা অন‌্যতম অঙ্গ হয়ে ওঠে। এটা কিন্তু কোনও সমাজতন্ত্রী অর্থনীতির মডেলে ছিল না।

২০০১ সালে আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গিহানা বিশ্বের নজর বিশ্বায়ন বিরোধী আন্দোলন থেকে অনেকটাই ঘুরিয়ে দেয়। ‘সন্ত্রাসবাদ’ এক নতুন সমস‌্যা হিসাবে গোটা বিশ্বের সামনে চলে আসে। ভারতেও বিশ্বায়ন বিরোধী আন্দোলন স্তিমিত হয়। মনমোহন সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করে বামপন্থীরাও উদারীকরণের সুযোগ নিতে থাকে। পশ্চিমবঙ্গে সেই সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের খোলাখুলি উদার অর্থনীতির পক্ষে সওয়াল করতে দেখা যায়। এর পরবর্তী এক দশকের উপর সময় বিশ্ব অর্থনীতি আরও নতুন নতুন চ‌্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছে। মনমোহনের সরকার চলে গেলেও ভারতের আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়া গতি পেয়েছে। অার কেউ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার যুগে ফিরে যাওয়ার কথা বলে না। এমনকী, রেল ও ব‌্যাঙ্কগুলিকেও বেসরকারি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিপরীত কোনও রাস্তায় ভারত ফের হঁাটবে এমন কোনও সম্ভাবনাও অার নেই। বিশ্বায়ন-বিরোধী বা উদার অর্থনীতি বিরোধী কোনও আন্দোলন এখন শুধুমাত্রই এক অলীক কল্পনা। বামেদের কর্মসূচিতেও সেসব বিলুপ্ত।

অ‌্যাডাম স্মিথের হাত ধরে ‘মুক্ত বাজার অর্থনীতি’-র মধ‌্য দিয়ে পুঁজিবাদের যে-যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা অনেক উথালপাথালের মধ‌্য দিয়ে গেলেও, এখন মুক্ত বাণিজ‌্যকেই টিকে থাকার পথ হিসাবে বেছে নিয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অার্থিক মন্দা থেকে বিশ্বকে রক্ষা করতে কেইন্‌সের ‘কার্যকর চাহিদা তত্ত্ব’ এসেছিল। যেখানে রাষ্ট্রকে চাহিদা তৈরির উদে‌্যাগ নিতে হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কর্মসংস্থানহীন বৃদ্ধির সঙ্গে মুদ্রাস্ফিতীর সংকট থেকে অর্থনীতিকে বঁাচাতে ফ্রিডম‌্যানের নয়া ধ্রুপদী তত্ত্ব এসেছে। যেখানে রাষ্ট্রের উপস্থিতি কম। বলা হল, পণে‌্যর জোগানই তার চাহিদা তৈরি করে নেবে। ফলে নজর দিতে হবে মসৃণ জোগান শৃঙ্খলায়। পুঁজিবাদী ব‌্যবস্থার এই দীর্ঘ যাত্রায় মনমোহন সিং-ও একজন পথিকৃৎ হয়ে থাকবেন। যেখানে তিনি বলছেন, উন্নয়নশীল দেশকে যে কোনও মূলে‌্য রফতানি বাড়িয়েই অার্থিক বৃদ্ধির পথ খুঁজতে হবে। সংস্কারের এই প্রক্রিয়াকে ভারতের প্রেক্ষিতে তিনি হাতেকলমে রূপায়িত করে দেখিয়েছেন। ভারতের অর্থনীতিকে এক গভীর সংকট থেকে মুক্ত করে এইভাবে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়া অবশ‌্যই একটি ‘মডেল’ হিসাবে এখন বিবেচিত হচ্ছে। বহু উন্নয়নশীল দেশ হয়তো এই মডেলকে আরও বেশি করে আগামীতে গ্রহণ করবে। তাই মনমোহন সিংয়ের নাম ভবিষ‌্যতেও কেইন্‌স, ফ্রিডম‌্যানের মতোই বহু দিন ধরে অর্থনীতিবিদদের মুখে উচ্চারিত হবে বলে মনে হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement