Advertisement
Advertisement
Auguste Rodin

চিলেকোঠার উন্মাদিনী, রদ্যাঁ ও ক্লদেলের প্রেম!

দুজনের বয়সের ব্যবধান ছিল ২৪ বছর।

Love and Hate of Auguste rodin Camille Claudel
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:December 12, 2024 5:11 pm
  • Updated:December 12, 2024 5:13 pm  

১৮৮৩ সাল নাগাদ রদ্যাঁ-র সংস্পর্শে আসেন ক্যামিল ক্লদেল, শিক্ষানবিশরূপে। ক্রমে ক্লদেল হয়ে ওঠেন রদ্যাঁ-র যাবতীয় সৌন্দর্য রূপায়ণের প্রেরণা, মিউজ, মডেল এবং প্রেমিকা। অন্যদিকে রদ্যাঁ ছিলেন ক্লদেলের মাইকেলএঞ্জেলো। দুজনের বয়সের ব্যবধান ২৪ বছর। তবু বানভাসি প্রেমে ভেসে যান। তারপর একসময় প্রেম ভাঙে। রদ্যাঁ ছিন্ন করেন সম্পর্ক। উন্মাদ প্রতিপন্ন হন ক্লদেল। লিখছেন ঋত্বিক মল্লিক

প্যারিসের রদ্যাঁ মিউজিয়াম। সেখানে ঘুরতে-ঘুরতে একটা বিশেষ ঘর চোখে পড়বেই সবার। ঘরটার নাম ‘ক্লদেল রুম’। ঘরের ঠিক মাঝখানে রয়েছে এক বিপুল বিশাল ভাস্কর্য, তার নাম ‘দ্য ম্যাচিওর এজ’। এক বিশাল পূর্ণদেহী পুরুষমূর্তি, ঠিক বৃদ্ধ বলা যায় না তাকে, তবে বার্ধক্যের আশপাশেই ঘোরাফেরা করছে শরীরের প্রতিটি রেখা। বুকের নীচে পঁাজরের হাড়গুলির আভাস আস্তে-আস্তে ফুটে উঠতে শুরু করেছে, আর কিছু দিনের মধ্যেই লোলচর্ম হয়ে ওঠার প্রতিটি ইঙ্গিত যেন ক্রমশ স্পষ্ট ত্বকের নীচে।

Advertisement

পুরুষটিকে জড়িয়ে ধরে টেনে নিয়ে যেতে চাইছে এক জীর্ণ, শীর্ণ, জরাগ্রস্ত, আতুর নারীমূর্তি। পুরুষটির বাড়িয়ে রাখা বাঁ-হাত শূন্যে লম্বমান, খড়কুটো আঁকড়াতে চেয়ে যেন হাওয়ায় হাতড়ে মরছে সে-হাতের করতল। আর, সেই শূন্যে ধাবমান আকুল হাতটিকে দুই অঞ্জলি বাড়িয়ে ধরে রাখতে চাইছে আর-এক নারী, উদ্ভিন্নযৌবনা, মাথার চুল কবরীবদ্ধ। তার টানটান শরীরী-রেখায় তারুণ্যের আভাস ফুটে উঠছে ঠিকই, কিন্তু সে তারুণ্যে যত না আছে দীপ্তি, তার চেয়ে ঢের বেশি রয়েছে আত্মসমর্পণ। নিজের দেহপ্রাণমন সমর্পণ করে যেন পুরুষটিকে ছুঁয়ে থাকতে চাইছে সে, ফিরিয়ে আনতে চাইছে, নিশ্চিত জরাব্যাধির মুখ থেকে, ঘুরিয়ে দিতে চাইছে সময়ের অনশ্বর কালচক্র। এক অসম লড়াইয়ের ছবিই ফুটে উঠছে ভাস্কর্যটির ত্রিমাত্রিক রূপে। মূর্তিমতী জরার হাতের মুঠোয় বন্দি হওয়ার ধ্রুব ভবিতব্য থেকে বয়স্ক পুরুষটিকে যেন জীবন বাজি রেখে সময়ের অন্য পারে টেনে আনতে চায় তারুণ্য, হাঁটু গেড়ে বসে সে মাথা কুটে মরছে জগদ্দল পাথরের সামনে। ১৯১৩ সালে ব্রোঞ্জ ঢালাইতে গড়া এই ভাস্কর্যটির স্রষ্টা যিনি, তঁার নামেই ওই ঘরের নাম– ক্যামিল ক্লদেল।

কে এই ক্লদেল? যঁার ভাস্কর্যে ভরপুর রদ্যাঁ-র মিউজিয়ামে আস্ত একটি ঘর বরাদ্দ হয়েছে তঁার নামে? সে প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে ফিরে যেতে হবে এক অন্য ঋতুতে। সে হয়তো বড় সুখেরই সময়, সে হয়তো বড় আনন্দের সময়। সময়টা ১৮৪৪ সাল। অগুস্ত রদ্যাঁ তৈরি করলেন ক্যামিল ক্লদেলের শুধু মুখের একটি মূর্তি। চোখ সামান্য আনত, ঠোঁট আর চিবুকের গড়নে দৃঢ় ব্যক্তিত্বের আভাস, একটু যেন আলগা অভিমানের স্পর্শ লেগে আছে ওষ্ঠাধরে, মাথায় ফ্রিজিয়ান টুপি। আবার এর কয়েক বছরের মধ্যেই, ক্লদেল ফিরিয়ে দিলেন প্রতিদান। এবার ক্লদেল বানালেন রদ্যাঁ-র অপরূপ এক আবক্ষ মূর্তি। রদ্যাঁ-র অমিতপ্রতিভায় উদ্ভাসিত মুখ যেন ভরে উঠেছে রুক্ষ ও মেজাজি চরিত্রের স্পষ্ট আভাসে।

১৮৮৩ সাল নাগাদ রদ্যাঁ-র সংস্পর্শে আসেন ক্যামিল ক্লদেল, শিক্ষানবিশ হিসাবে। ততদিনে নিজের পরিবারে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছেন তিনি। অতি সচ্ছল পরিবারের মেয়ে ক্যামিল একেবারে ছোটবেলা থেকে ভালবেসেছিলেন মাটি আর পাথরকে। যত বড় হতে লাগলেন ক্যামিল, ততই ডুবে যেতে থাকলেন শিল্পের মধ্যে, হারিয়ে যেতে থাকলেন ভাস্কর্যের অমোঘ টানে। কিন্তু, মেয়ের এমন পুরুষোচিত কাজ ভাল চোখে দেখলেন না তঁার মা। অবশ্য বাবার প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিলই। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। নিজের জেদে অবিচল ক্লদেল একসময় স্রেফ ভিখিরির মতো পোশাকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছেন নিজের মূর্তি গড়ার ‘সাবজেক্ট’ খুঁজতে। খাওয়া-পরার সামান্যতম সংস্থানটুকুর কথা না-ভেবেই ঝাঁপ দিয়েছেন টালমাটাল বিপদসংকুল ভবিষ্যতের অভিমুখে। সেই সময় ফ্রান্সে মেয়েদের জন্য ভাস্কর্য শেখার সুযোগ ছিল না একেবারেই, সম্ভবত এর নেপথ্যে পুরুষতান্ত্রিক বেশ কিছু শুদ্ধতাবাদও কাজ করত মূল নিয়ামক হিসাবে।

কারণটা স্পষ্ট হবে, সে-যুগের প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের বিখ্যাত ভাস্কর্যগুলো দেখলেই। অধিকাংশই ন্যুড, উন্মুক্ত দেহবল্লরী নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েরা, বেতসঋজু দেহকাণ্ড নিয়ে পুরুষ প্রতিমূর্তিরাও। এসব কাজের প্রয়োজনে সরাসরি হিউম্যান স্টাডি করতে হত তো বটেই, তবে মডেল বসিয়ে ভাস্কর্য গড়ার ক্ষেত্রে একটা কড়া নীতিপুলিশিও বেশ চালু ছিল। খোদ রদ্যাঁ-র বিরুদ্ধেও ১৮৭৭ সালে একবার অভিযোগ ওঠে যে, তিনি ‘দ্য এজ’ শীর্ষক ভাস্কর্যটি গড়ার ক্ষেত্রে ‘সারমুলেজ’ পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছেন। এই পদ্ধতিতে একেবারে সরাসরি মডেলের গায়েই ক্লে বা প্লাস্টার বসিয়ে, মডেলকেই ছাঁচ হিসাবে ব্যবহার করে ভাস্কর্য নিখুঁত করার চেষ্টা করতেন কতিপয় অল্প প্রতিভাধর শিল্পী।

রদ্যাঁ যদিও এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন এবং তঁার আসল ‘মডেল’ এক বেলজিক সৈনিককে সশরীরে সামনে হাজির করিয়ে একেবারে প্রমাণ করে দেন যে, আসল ভাস্কর্য আর মডেলের মধ্যে কতটা শারীরিক পার্থক্যের ব্যবধান রয়েছে! রদ্যাঁ-র মতো খ্যাতনামা শিল্পীকে নিয়েও যখন এইরকম টানাপোড়েন চলতে পারে, তখন ন্যাচারালিস্টিক পদ্ধতিতে ভাস্কর্য গড়তে আসা এক মহিলা শিল্পীর ক্ষেত্রে রক্ষণশীল শিল্পমহল ঠিক কতটা খড়্গহস্ত হতে পারে, তা বোঝার জন্য খুব একটা কষ্টকল্পনার দরকার পড়ে না। তবু, তারই মধ্যে, ‘অ্যাকাডেমি কোলারোসি’ ছিল এ বিষয়ে কিছুটা হলেও উদার। একমাত্র এখানেই মহিলা শিল্পীদের ‘ন্যুড’ পুরুষ স্টাডি করার সুযোগ ছিল।

এই সময় ক্যামিলের প্রেরণার কেন্দ্রে ছিলেন ভাস্কর আলফ্রেড বুচার। এই বুচারেরও এক আবক্ষ মূর্তি গড়েছিলেন ক্লদেল। কিন্তু সে অনেক পরের কথা। ফ্লোরেন্সে একটি অনুষ্ঠানে বুচারের সঙ্গে দেখা হয় রদ্যাঁ-র। তিনি রদ্যাঁ-কে অনুরোধ করলেন, তাঁর ছাত্রী ক্লদেলকে যেন শেখার আরও একটু সুযোগ দেওয়া হয়। দেখা হল পরস্পরের। সেই সঙ্গে শুরু হল রদ্যাঁ আর ক্লদেলের জীবনে তো বটেই, একই সঙ্গে পৃথিবীর ভাস্কর্যশিল্পের ইতিহাস উথালপাথাল করে দেওয়া এক তুমুল সম্পর্ক। ক্লদেল ছিলেন রদ্যাঁ-র যাবতীয় সৌন্দর্য রূপায়ণের প্রেরণা, মিউজ, মডেল এবং প্রেমিকা। আর, রদ্যাঁ ছিলেন ক্লদেলের মাইকেলএঞ্জেলো। চব্বিশ বছরের ব্যবধান দু’জনের মধ্যে, তবু এই বানভাসি প্রেম তাঁদের দিল অনেক কিছু। রদ্যাঁ-র ভাস্কর্যে এল নমনীয়তা, কোমল আবেগ, আর ক্লদেলের কাজে ক্রমশ ফুটে উঠতে লাগল দৃঢ়, সাহসী রেখা।

একটা সময় কিন্তু নিজের প্রেমের আঁকশি নিজের গলাতেই চেপে বসল ক্লদেলের। আগেই বলেছি। সে-যুগের ফ্রান্সে মহিলা শিল্পীদের নিয়ে বেশ কিছু কড়াকড়ি ছিলই। অচিরেই ক্লদেলের বেশ কিছু কাজ সেন্সরশিপের রক্তচক্ষুতে পড়ল। কাজের ফান্ডিং বন্ধ হয়ে গেল। একদিকে পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা, অন্যদিকে জীবনের একমাত্র মোক্ষ এই ভাস্কর্যের জন্য অনুদানের পথটুকুও সংকীর্ণ হয়ে আসছে, এমতাবস্থায় রদ্যাঁ-র সঙ্গে ‘কোলাবোরেশন’ ছাড়া কাজের আর অন্যতর উপায় রইল না ক্লদেলের। অথচ, রদ্যাঁ ততদিনে শুধু প্রতিষ্ঠিতই নন, বিপুল খ্যাতির রোশনিতে উজ্জ্বল এক শিল্পী। তাঁর নামের আড়ালে ক্রমশ ক্ষীয়মাণ হতে শুরু করল ক্লদেলের নাম। একের-পর-এক ভাস্কর্য গড়ছেন ক্লদেল, তার ভাবনা থেকে শুরু করে রূপায়ণ, সবটাই প্রায় তঁারই করা, অথচ লোকের হাততালি আর সাধুবাদের বৃত্তটুকুতে দাঁড়িয়ে থাকছেন এক ও একমাত্র রদ্যঁা। সমস্যা ক্রমশ বাড়ছিল দু’জনের মধ্যে, পরিস্থিতির চাপে একসময় রদ্যাঁর ঔরসজাত নিজের গর্ভস্থ ভ্রূণটিকে পর্যন্ত হত্যা করতে বাধ্য হন ক্লদেল।

ঠিক এই সময়ই তিনি গড়লেন সেই ভাস্কর্য, যার নাম ‘দ্য ম্যাচিওর এজ’। দু’টি সংস্করণ আছে ভাস্কর্যটির, দ্বিতীয়টির কথাই বলেছি এ-লেখার গোড়াতে। প্রথমটিতে জরার হাতটি পরম আবেশে সবে জড়িয়ে ধরেছিল সেই পুরুষ, অন্য হাতটিও ছিল তরুণী যুবতীর অঞ্জলিবদ্ধ। আর, দ্বিতীয়টিতে তরুণীর সঙ্গে হাতের জোড় খুলে গিয়েছে পুরুষের, জরা এখন আলিঙ্গন ছেড়ে দিয়ে উঠে বসেছে তার ঘাড়ে, প্রেতের মতো যেন অধিকার করেছে তাকে। বলা বাহুল্য, এবার পাঠক নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, ওই মূর্তিমান পুরুষ আসলে রদ্যাঁ-র প্রতিমূর্তি, আর আকুল তরুণীটি ক্লদেল নিজে। কিন্তু এই অবধিও ঠিক ছিল, জরাগ্রস্ত বৃদ্ধাটি আসলে রদ্যাঁ-র স্ত্রী রোজ, যাঁর সঙ্গে রদ্যাঁ-র সম্পর্ক বরাবরই ছিল কণ্টকাকীর্ণ। অথচ ক্লদেলকে ছেড়ে রদ্যাঁ শেষদিকে ক্রমশ ঝুঁকে পড়ছিলেন রোজের দিকেই।

খুব স্বাভাবিক নিয়মেই, মূর্তিটি দেখামাত্র রাগে ফেটে পড়লেন রদ্যাঁ। আছাড় মেরে ভেঙে ফেলতে চাইলেন প্রথমটায়, তারপর সামলালেন নিজেকে। সরিয়ে দিলেন ক্লদেলকে চিরতরে, যাবতীয় সংযোগবিচ্ছিন্নতার কথা ঘোষণা করলেন প্রকাশ্যে। শেষ করে দিলেন ক্লদেলের পড়ে-থাকা একমাত্র আশা-ভরসার অবলম্বনটুকুও।
কপর্দকশূন্য, কাজহীন, আহত ক্লদেল বিশ্বাস করতে পারেননি প্রথমটায়, তাঁর ঈশ্বর এমন ভয়াবহ বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন কোনও দিন! মন বিষিয়ে উঠল। নিজের হাতেগড়া বহু মূর্তি চুরমার করে ভাঙলেন ক্লদেল, ভুলে যেতে চাইলেন রদ্যাঁ-র যাবতীয় স্মৃতি। অথচ তাঁরই ভাবনা আর আইডিয়া নিয়ে একের-পর-এক ভাস্কর্য তখন গড়ে চলেছেন রদ্যাঁ। স্বীকৃতি নেই, কাজ নেই, এমন অবস্থায় নিজেকে স্বেচ্ছাবন্দি করে ফেললেন নিজের কাজের ঘরটিতে। তাঁর বাবা সেই সময় মেয়ের পাশে দাঁড়ানোর খানিক চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই, তবে কিছু দিনের মধ্যেই বাবাও মারা গেলেন। মেয়েকে জানানোও হয়নি সে-খবর। দশদিন পর যখন আচমকা জানতে পারলেন, পৃথিবীটাই নড়ে গেল তঁার, ভারসাম্য হারালেন ক্লদেল।
১৯১৩ সালে তঁার ভাই তঁাকে ভর্তি করে দিলেন সাইকায়াট্রিক হাসপাতালে। এখান থেকে আর কোনও দিন স্বাভাবিক মানুষের পৃথিবীতে ফেরা হয়নি তাঁর।

৩০ বছর পর, ১৯৪৩ সালে, পাগলাগারদের ভিতরেই মারা গেলেন সে-যুগের সবচেয়ে প্রতিভাশালী ভাস্করদের অন্যতমা, ক্যামিল ক্লদেল। নানা সময় ক্লদেলের বন্ধু কিংবা শুভানুধ্যায়ীরা যতবারই দেখতে গিয়েছিলেন তাঁকে, অনেকেই দাবি করেছেন, ক্লদেল মোটেই পাগল নন, তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে উন্মাদ প্রমাণ করার চেষ্টা চলেছে। কিন্তু না ক্লদেলের পরিবার, না রদ্যাঁ নিজে, কেউ কোনও দিন কর্ণপাত করেননি চিলেকোঠার এই উন্মাদিনীর আর্তরবে। অন্ধকারে মুছে গিয়েছে সাহসিনী, অবাধ্য মেয়েটির কথা– পাগলের প্রলাপই হয়তো বা, তবু, সেই চিরন্তনী ভাস্করের চোখের জলের দাগ শুকোয়নি কোনও দিন।

ক্যামিল ক্লদেল অ্যান্ড রদ্যাঁ: ফেটফুল এনকাউন্টার
আঁতোয়ানেৎ লে নোহ্‌মা-রোমাঁ
নিউ ইয়র্ক, জিঙ্কো প্রেস, ২০০৫

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement