Advertisement
Advertisement
Pension

ন্যায্য দাবি

বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় জেলা বিচারকদের পেনশন অনেকটাই কম।

Editorial on Pension of District Judges
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:August 9, 2024 3:51 pm
  • Updated:August 9, 2024 3:51 pm  

বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় জেলা বিচারকদের পেনশন অনেকটাই কম। এই আর্থিক অব‌্যবস্থা ও বৈষম্যের প্রয়োজন সুষ্ঠু সমাধান।

মাইনে কম, তাই চুরি করি, ঘুষ নিই। দুর্নীতির পক্ষে এই ধরনের কথা অনেক সময় উঠে আসে। পরিবার প্রতিপালনে অসহায়তাকে ঢাল করে অনেকে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদিও এটা কখনওই গ্রহণযোগ‌্য যুক্তি হতে পারে না। কারণ দুর্নীতির ঘুণ সমাজকে এতটাই ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেয় যে, তা রিফু করার কোনও সুযোগই থাকে না। আবার এ-ও সত্যি, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তো বটেই, নিচুতলার সরকারি কর্মীদেরও বেতন বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় অনেকটাই কম। বৈষম‌্যও রয়েছে বিস্তর।

Advertisement

ছয়-সাতের দশকে সিনেমার পর্দায় পুলিশকে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে। সেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটছে এখন। এই প্রসঙ্গেই জেলা আদালতের বিচারকদের নামমাত্র পেনশনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি শীর্ষ আদালতে উল্লেখ করেছেন স্বয়ং প্রধান বিচারপতি। সলিসিটর জেনারেল, অ্যাটর্নি জেনারেলদের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ করেছেন, কেন্দ্র যাতে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে। তিনি জানান, সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রেও আর্থিক দুরবস্থা, কম বেতন নিয়ে আদালত উদ্বিগ্ন।

 

[আরও পড়ুন: বামপন্থীরা অস্তিত্বের সংকটে ভুগবে, মোদি প্রধানমন্ত্রী হবেন, অনেক আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেন বুদ্ধ]

কিন্তু জেলা বিচারকদের বিষয়টা অন্যরকম। কারণ, তাঁদের পেনশন অন‌্যদের তুলনায় এতটাই নগণ‌্য। এমনও হয়েছে যে, হাই কোর্টে পদোন্নতি পেলেও জেলা বিচারক হিসাবে তাঁদের কর্মজীবন পেনশনের হিসাবে গ্রাহ্য করা হয়নি। প্রায় সারা জীবন জেলায় বিচারকের পদে থাকার পরও একজন বিচারক বছরে ৯৬ হাজার, অর্থাৎ, মাসে মাত্র ৮ হাজার টাকা পেনশন পান। এটা কতখানি যুক্তিযুক্ত? এর নেপথ্যের সরকারের ব্যাখ্যাই-বা কী? যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থেকে শুরু করে রাজ্যের একাধিক স্তরের সাধারণ কর্মীর পেনশন এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।

খুব কম মানুষই হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে। দেশের সিংহভাগ মানুষের আশা-ভরসার জায়গা বিভিন্ন জেলা ও নিম্ন আদালত। সেখানকার বিচারকদের কলমের খোঁচায় অনেকের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। নিষ্পত্তি হয় লক্ষ-কোটি টাকার সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ। তাই তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়লে তার প্রভাব যে রায়দানের ক্ষেত্রে পড়বে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়!

 

[আরও পড়ুন: ‘গণআন্দোলন গড়ে তুলুন’, স্বাধীনতা দিবসের আগে ফের ‘হর ঘর তেরঙ্গা’ কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর

যেখানে সমাজের নানা স্তরে প্রলোভনের কালো ছায়া থাবা বিস্তার করেছে, সেখানে নিচুতলার পুলিশকর্মী, জেলা আদালতের বিচারকরা কতটা নিজেদের সংযত রাখতে পারবেন, সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। ভোগবাদী এই সমাজব্যবস্থায় সামনে গাজর ঝুলিয়ে কাউকে অর্ধাহার কি অনাহারে দিন কাটাতে বলা অপরাধ, নিষ্ঠুরতা। মর্যাদার জীবনযাপন সকলের অধিকার। বিচারকরা কাজ করে সম্মানজনক ন‌্যায‌্য পেনশন চাইছেন, ভিক্ষা নয়। অবিলম্বে এর সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement