Advertisement
Advertisement
India

রুদ্ধ গণতন্ত্র, একনায়কত্বের পথে হাঁটছে ভারত!

রাষ্ট্রে একটি দল বা ব্যক্তি প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠলেই রুদ্ধ হয় গণতন্ত্র।

Democratic values eroding in India | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:September 15, 2023 8:08 pm
  • Updated:September 15, 2023 8:08 pm  

রাষ্ট্রে একটি দল বা ব্যক্তি প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠলেই রুদ্ধ হয় গণতন্ত্র। ভারতে তার বিবিধ আভাসের নবতম: সিইসি বিল।

 

Advertisement

জার্মানরাই একমাত্র বিশুদ্ধ আর্যরক্তের উত্তরাধিকারী। তাই অন্য সমস্ত জাতির উপর তারা কর্তৃত্ব ফলানোর হকদার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিকে ফের শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসানোর ডাক দিয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমেই মসনদে বসেছিলেন অ্যাডল্‌ফ হিটলার। কিন্তু নাৎসি পার্টি যত ক্ষমতাশালী হয়েছিল, ততই আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সমস্ত গণতান্ত্রিক রীতিনীতি। ধীরে ধীরে একনায়কে পরিণত হয়েছিলেন বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম ‘ঘৃণিত’ এই চরিত্র। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল হিটলারের ইহুদি-বিদ্বেষ। অন্যতম ‘হাতিয়ার’ ছিল উগ্র জাতীয়তাবাদ। শুধু জার্মানি নয়, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই একটি দল বা একজন ব্যক্তি যখন প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠে, তখনই নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয়। সেজন্যই বিশ্বে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম চলছে।

[আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরের চমক, সংসদের হঠাৎ অধিবেশনে আঁকা হবে কোন ছবি?]

এরই প্রেক্ষাপটে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের কয়েকটি সাম্প্রতিক ঘটনা ও পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে বাধ্য। যেমন ‘সিইসি বিল’ (চিফ ইলেকশন কমিশনার বিল)। ইতিমধ্যে যা রাজ্যসভায় পেশ হয়েছে। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে তা লোকসভাতেও আনা হবে। গত মার্চে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানায়, দেশের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক, নির্বাচন আধিকারিক নিয়োগ করতে তিন সদস্যের যে কমিটি গঠিত হবে, তার নেতৃত্বে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। কমিটির সদস্য হবেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি সরকারের ‘লেজুড়’ না হলে পছন্দের ব্যক্তিকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার করার ইচ্ছা ধাক্কা খাবে। তাই তড়িঘড়ি ‘সিইসি বিল’ এনেছে সরকার। যা পাশ হলে কমিটি থেকে বাদ পড়বেন প্রধান বিচারপতি। ঢুকবেন প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী! অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনকে ‘কুক্ষিগত’ করার পাকা বন্দোবস্ত।

কমিশনকে দৃশ্যত ‘নিরপেক্ষ’ দেখানো হলেও অতীত ইতিহাস সেই তথ্য সমর্থন করে না। প্রত্যেকেই তো টি. এন. শেষন নন। প্রত্যেকের মেরুদণ্ড ততটা সবল নয়। বস্তুত এভাবেই বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাথায় পছন্দের লোক বসানোর ধারাবাহিক প্রক্রিয়া চলছে। প্রাক্তন এক প্রধান বিচারপতি অবসর নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই রাজ্যসভার সদস্য মনোনীত হয়েছেন। কিন্তু বর্তমান প্রধান বিচারপতি ‘তেমন সহায়ক’ নন বলে জল্পনা। তাঁকে নিয়ে কেন্দ্রের উদ্বেগ স্পষ্ট। বেশ কয়েকটি সাম্প্রতিক মামলায় কেন্দ্র ভর্ৎসিত হয়েছে। রায় গিয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। তাই মূলোৎপাটনের ভাবনা! গণতন্ত্রের বিভিন্ন স্তম্ভকে কার্যত ‘স্তাবক’ বানিয়ে, তাদের হাত-পা বেঁধে শাসক দল যে ‘বিষময়’ পরিস্থিতি তৈরি করছে, তা আদতে ‘একদলীয়’ শাসন ব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা। পরে তা কোনও ‘একনায়ক’-এর জন্ম দিতেই পারে। ইতিহাস অন্তত তা-ই বলছে। কিন্তু একনায়কদের পরিণতি সততই সুখের হয় না। সেটাও মাথায় রাখা উচিত।

[আরও পড়ুন: ‘এক দেশ এক ভোট’, ২৪-এ আদৌ কি তা সম্ভব?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement