Advertisement
Advertisement

Breaking News

Journalist

প্রশ্ন-দ্রোহিতা

‘ইউএপিএ’-র প্রাসঙ্গিকতা রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই ফিরে ফিরে আসতে পারে।

Chaining Journalists will blur the line between fiction and facts | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:October 5, 2023 10:50 am
  • Updated:October 5, 2023 10:50 am  

অস্বস্তিকর প্রশ্ন তোলা সাংবাদিকরা দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত হলে নড়বড়ে হয়ে ওঠে সত্যি-মিথ্যের ভেদরেখা।

‘আনলফুল অ‌্যাক্টিভিটিজ প্রিভেনশন অ‌্যাক্ট’ বা ‘ইউএপিএ’ বহাল থাকবে কি থাকবে না- এই নিয়ে কিছু দিন আগেই কথা উঠেছে সংসদে। অথচ, এবার সেই আইনের আওতাতেই রাজধানীতে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারি এবং জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা বুঝিয়ে দিল, ‘ইউএপিএ’-র প্রাসঙ্গিকতা রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই ফিরে ফিরে আসতে পারে। এক মার্কিন পত্রিকায় একটি ভারতীয় সংবাদমাধ‌্যমের বিরুদ্ধে চিনের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রীয় রক্তচক্ষুর সামনে পড়তে হয়েছে সেই সংস্থাকে। ফলে, একই সঙ্গে দেশদ্রোহিতার সেই চিরাচরিত আখ‌্যান সাধারণ নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই আবার স্পষ্ট হচ্ছে সরকারি বয়ানে।

Advertisement

সংবাদমাধ‌্যমের স্বাধীনতা বিশ্বজুড়েই বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রশ্ন করা প্রতিষ্ঠানকে অস্বস্তি দেবেই, এবং তার প্রত্যুত্তরও আসতে পারে- একথা জেনেই সাংবাদিকতার কঠিন রাস্তাটা বেছে নিয়েছেন অনেকেই। এদেশেও তার ‌ব‌্যতিক্রম হয়নি। ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’-র সম্পাদক কাঙাল হরিনাথকেও জমিদারদের লেঠেলের আক্রোশের সঙ্গে জুঝতে হয়েছিল, কাজেই ‘সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে’, বলাই যায়। নতুন আঙ্গিক তাহলে কী? দেশপ্রেমের শত্রু নির্মাণ, দেশদ্রোহের কালির ছিটে?

[আরও পড়ুন: খলিস্তানিদের কার্যকলাপে এত উদ্বিগ্ন কেন ভারত?]

কিছুদিন আগেই ‘নেটফ্লিক্স’-এ এসেছিল হনসল মেহতার ‘স্কুপ’ সিরিজটি। জ্যোতির্ময় দত্ত হত‌্যা ও জিগনা ভোরা-র মামলার সত‌্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই সিরিজে জিগনা ভোরার আদলে নির্মিত জাগ্রুতি পাঠক খুনের চক্রান্তের মিথ্যে অভিযোগের জেরে কারারুদ্ধ হয়ে থাকা অবস্থায় একটি সংলাপে বলে- হত‌্যা সে সত্যিই করেছে, সাংবাদিকতাকে। সাংবাদিকতায় সত্যিকথার মূল‌্য কমেছে ক্রমে, তাৎক্ষণিকতার জন‌্য বিসর্জন দেওয়া হয়েছে নৈতিকতার সহজ পাঠ। তাই আকাঁড়া সত্যি যে সাংবাদিকরা মন্থন করে চলেন বা চলেছেন, জনমানসে তাঁদের উপস্থিতি কিছুটা ধোঁয়াশাচ্ছন্ন হয়েই থাকে। সেই অবস্থায় বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আরও নড়বড়ে করে তুলছে সত্যি-মিথ্যের ভেদসীমাকে। চিনের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ সত্যি কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ। কিন্তু সরকার-বিরোধী হওয়া আর দেশদ্রোহ যদি কোনও বিন্দুতে মিলে যায়, তবে তা অবশ‌্যই অশনিসংকেত। যে-সাংবাদিকরা নির্দিষ্টভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কোনও না কোনও প্রশ্ন তুলেছেন, পেগাস‌াস স্পাইওয়‌্যার থেকে কেন্দ্রীয় নানা সংস্থার নেকনজর কীভাবে তাঁদের উপরেই বারবার এসে পড়ে- এই প্রশ্ন ওঠাও অস্বাভাবিক নয়।

যে-সাংবাদিকরা জেরার সম্মুখীন হচ্ছেন, তাঁরা নির্দ্বিধায় জানাচ্ছেন, প্রশ্ন করার রাস্তা থেকে তাঁরা বিচ্যুত হবেন না কিছুতেই। এই প্রত‌্যয় কোথাও গিয়ে হয়তো ভরসা জোগাবে পরবর্তী প্রজন্মের সংবাদ-অনুসন্ধানীদের, অক্সিজেন দেবে সাংবাদিকতাকেই, এই সংশয় পারাবার মাঝে‌ এটুকই আশা।

[আরও পড়ুন: দমনমূলক পদক্ষেপ নয়, সংবাদমাধ্যমের গতিপথ হোক উন্মুক্ত]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement